বনবিভাগ সাতক্ষীরা রেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, বনবিভাগের কাছে হরিণ শিকারিদের ১০৮ জনের একটা তালিকাও রয়েছে। তার মধ্যে কোবাদক স্টেশনে ৩০ জন, বুড়িগোয়ালিনী স্টেশনে ৪২ জন, কদমতলা স্টেশনে ২০ জন, কৈখালী স্টেশনে ১৬ জন রয়েছেন।
তালিকা ছাড়াও আরও অনেকে হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ক্রেতারা।
পরিচয় গোপন রেখে অনলাইনে ক্রেতা সেজে চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা হরিণের মাংস দেওয়া যাবে বলে এই প্রতিবেদককে জানান। এসময় প্রতিকেজি হরিণের মাংসের মূল্য চাওয়া হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা। আর আস্ত একটি জীবিত হরিণের দাম চাওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা এলাকার বাসিন্দা মো. হুদা জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এলাকায় অনেকেই চোরাইভাবে বন থেকে হরিণ শিকার করে বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে উল্টো তারাই সাধারণ মানুষকে ফাঁসিয়ে দেয়। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলে না।
সুন্দরবন সংলগ্ন বুড়িগোয়ালিনী গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবন থেকে ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করে আসছে। সম্প্রতি গ্রামবাসীরা এই চক্রের এক সদস্যকে হরিণের মাংসসহ আটক করে বনবিভাগের কাছে দেয়। এরপর আমাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এই চক্রের সদস্যরা অনলাইনে ছবি দেখিয়ে কাস্টমার সংগ্রহ করে। এছাড়া স্থানীয় অনেকের কাছে তারা নিয়মিত হরিণের মাংস বিক্রি করে।
সুন্দরবন সুরক্ষা কমিটি সাতক্ষীরার আহ্বায়ক গাজী সালাউদ্দিন বাপ্পি জাগো নিউজকে বলেন, সুন্দরবন থেকে প্রতিনিয়ত হরিণ শিকারের কারণে সুন্দরবনের প্রাণী বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। অচিরেই যদি হরিণ শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা যায় তাহলে অন্য অনেক প্রাণির মতো এই বন থেকে হরিণও বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা এম কে এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরী জাগো নিউজে বলেন, হরিণ শিকারিদের ধরতে সরকারিভাবে পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে তথ্য পেলেই তাৎক্ষণিক অভিযান চালানো হচ্ছে। কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে কয়েকজন হরিণ শিকারিকে আটক করে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
copy from: jago news.