খামারিরা জানান, ছয় মাস বয়সী একটি গাড়লের দাম কমপক্ষে সাত হাজার টাকা। এক বছর বয়সী একটি গাড়লের ২৫ কেজি পর্যন্ত মাংস হতে পারে। মাংস এখনো বাজারে সেভাবে বিক্রি হয় না। তবে স্থানীয়ভাবে এই মাংস পাওয়া যায়। প্রতি কেজির দাম ৭০০ টাকার আশপাশে। খুলনায় যেসব গাড়লের খামার গড়ে উঠেছে, তা থেকে কিনে নেন মূলত নতুন খামারিরা।
খালিশপুরে ওয়াহিদ খানের খামারে গিয়ে সম্প্রতি দেখা যায়, টিনের ছাউনির ঘরটি মাটি থেকে উঁচু করে কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি করা। তবে গাড়লের পাল সেখানে নেই।
ওয়াহিদ জানান, গাড়ল শুধু রাতে খামারে থাকে। সারা দিন ঘুরে ঘুরে ঘাস খায়। শুধু কিছু দানাদার খাবার দিলেই হয়।
খামারি কীভাবে হলেন, সে কথাও জানালেন ওয়াহিদ। তিনি বলেন, কৃষিকাজ তাঁর ভালো লাগে। সে জন্য বছর দুয়েক আগে ছাগলের খামার করার উদ্যোগ নেন। নিচু জমি ভরাট করে খামারের ঘর করেন। শুরুতে ছাগলের খামার করার চেষ্টা করেছিলেন।
খামার বড় করতে ওয়াহিদ আরও দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। খামারের ঘর ও অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি করেছেন। তিনি জানান, ৫০০ গাড়ল পালন করতে চান তিনি।
ওয়াহিদের ভাষ্যমতে, প্রায় সাত মাস পরপর বাচ্চা দেয় মা গাড়ল। বেশির ভাগ সময় একসঙ্গে দুটি বাচ্চা দেয়। কোনো কোনো সময় বাচ্চা দেয় একটি। বাচ্চা দেওয়ার পর এক মাসের মধ্যে গাড়ল আবারও গর্ভধারণ করে। তবে বাচ্চা প্রায় ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ খায়।
ওয়াহিদ জানান, ইউটিউব চ্যানেলে তাঁর খামারের ভিডিও দেখে আগ্রহীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ গাড়ল পালন নিয়ে পরামর্শ নেন। কেউ কেউ গাড়ল কিনতে চান। এই খামারি আরও জানান, বছরে দুবার গাড়লের পশম কেটে পুড়িয়ে ফেলা হয়। পশম যদি কাজে লাগানো যেত, বিপণনের ব্যবস্থা থাকত, তবে খামারিদের লাভ বেশি হতো।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অরুণ কান্তি মণ্ডল বলেন, দেশে ভেড়ার পশমের তেমন কোনো বাণিজ্যিক ব্যবহার না থাকায় সেখান থেকে খামারিদের আয় হয় না। এটা রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।