পহেলা নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দুবলার চরে শুঁটকি মৌসুম। তাই ব্যস্ততায় সময় কাটছে উপকূলের জেলে-মহাজনদের। সাগরে যাওয়ার জন্য গত কয়েক দিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। জাল, দড়ি, নৌকা-ট্রলার ঠিক করছেন। কেউ কেউ গড়ছেন নতুন ট্রলার, আবার কেউ পুরাতনটিকে মেরামত করে নিয়েছেন। সাগরে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে তারা চলে এসেছেন মোংলা ও পশুর নদীতে। মঙ্গলবার বনবিভাগের পাশ নিয়েই তারা রওনা হয়েছেন সাগর পাড়ের দুবলার চরে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, শুঁটকি মৌসুমকে ঘিরে এবারও উপকূলের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১০ হাজার জেলে সমবেত হচ্ছেন দুবলার চরে। আর এ মৌসুমেও দুবলার চরে যাচ্ছে প্রায় দেড় হাজার মাছ ধরার ট্রলার। ট্রলার নিয়ে গভীর সাগর থেকে আহরিত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বাছাই করে শুঁটকি করবেন তারা। দুবলার চরে জেলেদের নিরাপত্তায় বনবিভাগের পাশাপাশি থাকছে র্যাব ও কোস্ট গার্ড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগর পাড়ে সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হতে যাচ্ছে শুঁটকি মৌসুম। পহেলা নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ মৌসুম চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। টানা পাঁচ মাস সেখানে থাকতে হবে জেলেদের। তাই সাগর পাড়ে গড়তে হবে তাদের অস্থায়ী থাকার ঘর, মাছ শুকানো চাতাল ও মাচা। সেসব তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে না সুন্দরবনের কোনো গাছপালা-লতাপাতা। তাই বন বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী চরের উদ্দেশে যাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া সব জেলে তাদের ট্রলারে করে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী। যাওয়ার পথে সুন্দরবনের কোনো নদী-খালে প্রবেশ ও অবস্থান করতে পারবেন না সমুদ্রগামী এ জেলেরা। এছাড়া দুবলার চরে অবস্থানকালে সাগর ছাড়া সুন্দরবনের খালে প্রবেশ ও সেখানে মাছ ধরতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে বন বিভাগ।
জাতীয় মত্স্যজীবী সমিতির মোংলা শাখার সভাপতি বিদ্যুৎ মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল শেখ বলেন, এবার দুবলার চরে শুঁটকি করতে মোংলার ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রলার যাচ্ছে। বন বিভাগের কাছ থেকে পাশ নিয়ে মঙ্গলবার থেকে তারা সাগরে যেতে শুরু করেছেন।
দুবলা ফিসারম্যান গ্রুপের নেতা কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গোপসাগর ও সুন্দরবনে এখন আর দস্যুতার ভয় নেই। তাই অনেকটা স্বস্তি নিয়েই সাগরে যাচ্ছেন জেলেরা। আবহাওয়া ভালো থাকলে লাভের পাল্লা ভারী করেই মৌসুম শেষে বাড়িতে ফিরতে পারবেন উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকার এ জেলেরা।
সূত্র: ইত্তেফাক