রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের চরকালিদাসখালী চরে নুরজাহান বেগমের বাড়ি। নদীভাঙনে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ করতেন।
প্রতিদিন ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকার বেশি আয় হতো না। যা দিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবারের খাবার খরচ যোগানো প্রায়ই অসম্ভব ছিল।
পাঁচ বছর আগে স্থানীয় এক সংস্থা থেকে পাঁচ জোড়া কবুতর দেয়া হয় নুরজাহানকে। এই কবুতর তার ভাগ্য বদলে দিয়েছে। কবুতর বাচ্চা দিতে দিতে বর্তমানে ৫০ জোড়া হয়েছে।
নুরজাহান বেগম জানান, নদী ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে বসতভিটাও হারান। ভাঙনের ফলে অনেক মানুষের সঙ্গে তিনি পদ্মার মধ্যে চরকালিদাসখালী গিয়ে আশ্রয় নেন। অন্যের জমিতে দিনমজুরি খেটে ও ঝিয়ের কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। এক বেলা খাবার জুটলেও আরেক বেলা জুটত না। আজ তিনি অনেকটাই সাবলম্বী। ‘আমার ভাগ্য বদলায়ে দিয়েছে কবুতর’।
নুরজাহান বেগমের দেখাদেখি পদ্মার চরাঞ্চলের জয়নব বেগম, রজিনা বেগম, শরিফা বেগম, মহনা বেগম, রজিনা খাতুন, সাবিনা বেগম, গুল বাহার বেগমের কবুতর পালন করে সাবলম্বী হওয়ার গল্প শোনা যায় চরাঞ্চলে গিয়ে।
বন্যা আর নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবন কাটানো চরবাসীর জীবনে অর্থনৈতিক দুর্দশা প্রায় স্বাভাবিক ঘটনা। তবে কবুতর পালনের মধ্য দিয়ে দৈন্যদশা ঘুচে সচ্ছলতা এসেছে অনেকের জীবনে।কবুতর পালনের মাধ্যমে অনেকেই সুখের দেখা পাচ্ছেন। কবুতর পালন অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় আগ্রহী মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে চরাঞ্চল এলাকায় কবুতর পালনের খরচ অন্য এলাকার তুলনায় অনেক কম বলে কবুতর পালনের হার বেশি।তবে প্রায় ৫ বছর আগে স্থানীয় সমতা নারী কল্যাণ সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ ও ঋণ নিয়ে এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপির প্রচেষ্টায় অনেকে আয় বর্ধনমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িত হয়ে উপকৃত হয়েছেন।