সামছুল আলম ( ০৫/০৩/২৩)
সাফলের এ গল্পটি ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার ৯নং কামারগাঁও ইউনিয়নের রায়জান গ্রামের বাসিন্দা মোঃ নাজিম উদ্দীনের। ২০১৯ সালে মাছ চাষ শুরু করেন। কৃষিকাজ করে কিছু মূলধন জমা করে লিজ নেওয়া ৩০ শতকের একটি পুকুরে ১ লাখ শিং মাছ মজুত করেন। সে বছর ৮ মাস ব্যাপী শিং মাছ চাষে ১০ লাখ ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেন এবং প্রথমবার মাছ চাষে লাভের মুখ দেখেন। সেবছর করোনা পরিস্থিতিতে মাছের দাম কম হওয়া স্বত্বেও ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ হয়। তারপর ২০২১ সালে ৮ মাস মাছ চাষ করে প্রায় ১৪ লাখ টাকা লাভ করেন । এবার (২০২২-২৩) অর্থ বছরে লাভের পরিমাণ হয়েছে ১৬ লাখ টাকা। ভাগ্য উন্নয়নে ও বেকারত্ব দূরীকরণে মাছ চাষ হতে পারে অপার সম্ভাবনাময় একটি অধ্যায়। যারা মাছ চাষ করতে ভয় পান তাদের একটি বিষয় নিয়ে ভয় কাজ করে সেটি হলো মাছের রোগ। যথাযথ ব্যবস্থাপনা মাছের রোগ প্রতিরোধে শতভাগ কার্যকর। তার এ সাফল্যের পিছনে যে কারণ রয়েছে তা হলো, তিনি পুকুরে নিয়মিত ১২-১৪ ঘন্টা মনিটরিং করেছেন এবং নিয়মিত পানি পরিবর্তন করেছেন। জনাব নাজিমউদ্দীন সরকার বলেন,কঠোর পরিশ্রম,দৃঢ় বিশ্বাস এবং অভিজ্ঞতা সফলতার চাবিকাঠি। শিং মাছের মনোকালচার। তিনি সাম্প্রতিক তথ্য দিতে গিয়ে বলেন, তিনি এপ্রিল মাসে রেণু পোনা মজুত করে কিছু পোনা বিক্রি করে ১২ ই মে, ২০২২ তারিখে চাষ শুরু করেন। মাছ বিক্রি করেন ফেব্রুয়ারিতে। পুকুরের আয়তনঃ ৬০ শতাংশ (পাড়সহ) গভীরতাঃ ১৫ ফিট মাছের পরিমাণঃ ২ লাখ ৪০ হাজার, মাছের উৎপাদনঃ ৩শ ৫০ মণ বড় সাইজের কিছু মাছ কেজিতে ১২ টা ৩ শ ০৪ মণ। বাকিগুলো ছোট মাছ। ছোট মাছ মোট ৪৬ মণ। কালচার পিরিয়ডের সময়ঃ ৮ মাস শিং মাছের বিক্রয়মূল্যঃ কেজিতে ১২ টা মাছের মূল্য ১২,৫০০ টাকা মোট ৪৫০ মণ ফিড ব্যবহার করেছেন। মাছ পেয়েছেন ৩৫০ মণ। খরচঃ ২৩,৫০,০০০ টাকা প্রায় মোট বিক্রি = ৩৯,২০,০০০ টাকা লাভঃ ১৬,০০,০০০ টাকা (প্রায়) মাত্র ৮ মাসে। শিং মাছ ছাড়া এরকম লাভ করা সম্ভব নয়। সবচেয়ে ভালো মানের এফসিআর পাওয়া গিয়েছে সিপি ও নারিশ ফিডে (১.২)। কোয়ালিটি ফিড ও ভালো আছে কিন্তু এফসিআর তুলনামূলক ভাবে কম। এই সফলতার পিছনে সার্বিক তত্বাবধানে ও পরামর্শ সেবায় ছিলেন কৃষিবিদ নাইমুল হাসান (শাকিল), উদ্যোক্তা এবং কনসালটেন্ট, বাংলাদেশ মৎস্য হাসপাতাল। বি.এস.সি ইন ফিশারিজ (অনার্স) শেকৃবি।