মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ই মার্চেই বঙ্গবন্ধু লক্ষ লক্ষ মানুষের সামনে কার্যত স্বাধীনতার ঘোষণা এবং স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার দ্ব্যর্থহীন সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। যদিও ২৬ মার্চে পরিপূর্ণভাবে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণে জাতিকে প্রস্তুত হতে বলেছিলেন। তিনি ভাষণে বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
একটি জাতির অতীত ইতিহাস, বর্তমান প্রেক্ষাপট আর ভবিষ্যত পরিকল্পনা এত চমৎকারভাবে বিশ্বের কোনো জাতীয়তাবাদী নেতা তাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামকে ঘিরে এভাবে করতে পারেননি, যেটা বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে করে দেখিয়েছেন। এ জন্য বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের বিস্ময়।
রবিবার ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনাসভায় রাজধানীর সচিবালয়ের নিজ দপ্তর থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খান, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম হাওলাদার, পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী, পিরোজপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু, পিরোজপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ খান টিটু, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান শামীম, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আব্দুল্লাহ প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, এ বছর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ৫০তম বছরে আমরা পদার্পণ করেছি। এ ভাষণ ইউনেস্কো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে তালিকাভুক্ত করে সংরক্ষণ করেছে। জাতিসংঘের সকল দাপ্তরিক ভাষায় অনুদিত হয়ে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ভাষণ আজ শুধু বাঙালির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ পৃথিবীর বিস্ময়কর ও কল্পনাতীত এমন একটি সৃষ্টি যে সৃষ্টির ভেতর অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক-নির্দশনা নিহিত ছিল। তাই এটি ইতিহাসের মহাকাব্য। এটি একটি দর্শন। যে কারণে এ ভাষণ বারবার গবেষণার দাবি রাখে।
বাংলাদেশের আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা কোনো ক্ষেত্রেই আমরা পিছিয়ে নেই উল্লেখ করে শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, সম্প্রতি কমনওয়েলথ বিশ্বের যে তিনজন নারী নেতাকে করোনা পরিস্থতি মোকাবেলায় সাহসী সাফল্যের জন্য স্বীকৃতি দিয়েছে তার অন্যতম বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ বিশ্বখ্যাত নেতৃত্বের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিবেচনা করে। বিশ্বখ্যাত ম্যাগাজিন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে বিশ্বের অন্যতম সৎ ও পরিশ্রমী প্রধানমন্ত্রী বলছে। বঙ্গবন্ধুর প্রদর্শিত পথেই শেখ হাসিনা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে বলা হয় উন্নয়নের জাদুকর।
জাতীয় ঐক্যের প্রশ্নে দল-মত নির্বিশেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা রাখার জন্য এসময় সকলকে আহ্বান জানান মন্ত্রী। বিভ্রান্ত না হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ও প্রতিক্রিয়াশীলদের রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত না করারও অনুরোধ জানান তিনি।
মন্তব্য