১০৯
নিয়োগপ্রক্রিয়া: এবার দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের অধীনের নিয়োগ পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গতবার এক হাজার ৩৯৪টি পদের জন্য ২৯ হাজার প্রার্থী আবেদন করে ছয় হাজার ৭১১ প্রার্থী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় এবং এক হাজার ৩৬২ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল (প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সম্ভাব্য কাট মার্ক ছিল ৫০)। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে প্রিলিমিনারি (১০০), লিখিত (২০০) ও মৌখিক (৫০)—এই তিন ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে বাংলা ২০, ইংরেজি ২০, সাধারণ জ্ঞান ২০ এবং কৃষি বিষয়ে ৪০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্ন করা হবে।
৫০ শতাংশ)।একনজরে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা : উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা/উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা/উপসহকারী প্রশিক্ষক/উপসহকারী সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা—দশম গ্রেডের পদ (পূর্বে নন-গেজেটেড থাকলেও পিএসসির অধীনে যাওয়ার পর এখন গেজেটেড হওয়ার সম্ভাবনা আছে)। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুসারে, ১৬,০০০-৩৮,৬৪০ টাকা; এর সঙ্গে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, সন্তানদের শিক্ষা সহায়ক ভাতা, নববর্ষ ও উৎসব ভাতা, পেনশনসহ সরকারি চাকরির সব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন।
প্রিলি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা/উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা/উপসহকারী প্রশিক্ষক/উপসহকারী সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা পদে ২৩৬০ জন নেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এসব পদের নিয়োগপ্রক্রিয়া, নিয়োগ প্রস্তুতি ও দায়িত্ব নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন ক্যারিয়ার বিষয়ক পরামর্শক রবিউল আলম লুইপা
এমসিকিউ পরীক্ষায় প্রতিটি শুদ্ধ উত্তরের জন্য ১ নম্বর পাবেন এবং ভুল উত্তরের জন্য ০.৫০ নম্বর কাটা যাবে। প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় বাংলা ৪০, ইংরেজি ৪০, সাধারণ জ্ঞান ৪০ এবং কৃষি বিষয়ে ৮০ নম্বরের প্রশ্ন করা হবে। এখানে বাংলা বিষয়ে ব্যাকরণ ১০, সারমর্ম ৫, বঙ্গানুবাদ ৫, পত্রলিখন ৫, রচনা ১৫; ইংরেজি বিষয়ে Grammer 10, Comprehension 10, Letter 5, Essay 15; সাধারণ জ্ঞান অংশে বাংলাদেশ বিষয়াবলি ১৫ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ১৫ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১০ নম্বরের প্রশ্ন করা হবে।
লিখিত পরীক্ষায় পাসের জন্য সামগ্রিকভাবে ৪৫ শতাংশ নম্বর এবং বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিটি বিষয়ের জন্য পৃথক পৃথকভাবে ২৫ শতাংশ নম্বর এবং কৃষি বিষয়ে ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। সবশেষে মৌখিক (পাস নম্বর
যোগদানের পর একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আঞ্চলিক কৃষি অফিসের কার্যালয়ে ওরিয়েন্টেশন প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হতে পারে। পদটিতে মাঠ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। জেলা/উপজেলা কৃষি অফিস, হর্টিকালচার উইং, প্রশিক্ষণ উইং, উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং, উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইংসহ সারা দেশের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যেকোনো কার্যালয়ে পদায়ন হতে পারে। নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণপূর্বক কৃষককে পরামর্শ/উদ্বুদ্ধকরণ করা, কৃষকদের সঙ্গে থেকে তাদের সমস্যা চিহৃিত করতে ও সমাধানে সাহায্য করা ও প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত করা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পরিকল্পনা কৃষক পর্যাযে বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করা, কৃষকদের তথ্য চাহিদার ভিত্তিতে মৌসুমভিত্তিক উৎপাদন পরিকল্পনা প্রস্তাব উপজেলায় প্রেরণ করা, প্রণোদনা/পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা প্রভৃতি মাঠ পর্যায়ের কাজগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কৃষি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে।
কামরুল আলম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, (পিএসসি প্রথম ব্যাচ, ২০২৩)
প্রস্তুতির শুরুতে ২০২০ সালের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন সংগ্রহ করে পুরো পরীক্ষার ওপর একটি ধারণা নেবেন।
বিসিএসের প্রস্তুতি দিয়েই প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করা যাবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বাংলা অংশে কবিতা, উপন্যাস ও নাটকের রচয়িতা, বানান শুদ্ধ, সমার্থক শব্দ; ইংরেজি অংশে Appropriate Prepositon, Sentence Correction, Synonym and Antonym; সাধারণ জ্ঞান অংশে উদ্ভিদ ও বায়ু, মুক্তিযুদ্ধ, স্থাপত্য ও ভাস্কর্য, আন্তর্জাতিক সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। লিখিত অংশগুলো বাজারে প্রচলিত বিসিএস ও নন-ক্যাডার লিখিত প্রস্তুতিমূলক বইগুলো থেকে প্রস্তুতি নিতে পারেন। লিখিত অংশে একটু কৌশলী হয়ে পড়লে ফুল মার্ক পাওয়া সম্ভব। বাংলা ব্যাকরণে সমার্থক শব্দ, বানান ও বাক্য শুদ্ধিকরণ, উপসর্গ, সমাস, সন্ধি, বাক্য সংকোচন প্রভৃতি; ইংরেজি ব্যাকরণে Voice, Narration, Right form of verb, Appropriate Preposition, Idiom and Phrase, Sentence Correction প্রভৃতি: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎ, আলো, বায়ু, রোগ ও জনস্বাস্থ্য, কম্পিউটার ও প্রযুক্তি প্রভৃতি; বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে ভৌগোলিক অবস্থান, সংবিধান, অর্থনীতি, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য, ১৯৫২-১৯৭১ প্রভৃতি; আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে পররাষ্ট্রনীতি, জাতিসংঘ, বৈশ্বিক আর্থিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক বিরোধ গুরুত্বপূর্ণ। প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষার কৃষি বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য ডিপ্লোমার পাঠ্য বই থেকে উদ্ভিদ পুষ্টি ও সার ব্যবস্থাপনা, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, বালাই ব্যবস্থাপনা, ফসলের রোগ ব্যবস্থাপনা, মাঠ ফসলের চাষাবাদ, বীজ প্রযুক্তি, বাংলাদেশের কৃষি পরিচিতি, সবজি চাষ, কৃষি অর্থনীতি, নার্সারি বন ও বনায়ন, জীববিজ্ঞান প্রভৃতি থেকে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। লিখিত প্রস্তুতির জন্য প্রচুর লেখার অনুশীলন ও পিএসসি অনুরূপ প্রশ্নে মডেল টেস্ট দিতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় একাডেমিক বই, জেলার তথ্য, জেলায় অবস্থিত কৃষিবিষয়ক উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান ও জেলায় উৎপাদিত প্রধান ফসল, বিভিন্ন ফসলের জাত এবং প্রাতিষ্ঠানিক প্রশ্ন করা হতে পারে।