ঈদুল আজহা মূলত মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। কোরবানির ঈদ এলেই অসাধু ব্যবসায়ীরা গবাদিপশু কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ইনজেকশন ও রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে কোরবানির পশুকে মোটাতাজা করে থাকেন ব্যবসায়ীরা, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর।বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকরণ গরুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে পানি জমে যাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, মূত্রনালি ও যকৃতের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এসব পশু কেনা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল হাশেমের মতে, স্টেরয়েড দিয়ে মোটাতাজা করা গরু দেখতে আকর্ষণীয়, চকচকে ও হৃষ্টপুষ্ট হয়।
তিনি বলেন, এসব ক্ষতিকর উপাদান রান্নার পরও মাংসে থেকে যায়। এই মাংস খেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
সুস্থ ও অসুস্থ গরু চেনার উপায়
১. রাসায়নিক বা ওষুধ দেয়া গরুর মাংসপেশি থেকে শুরু শরীরের অন্য অঙ্গগুলো অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায়। গরুর শরীরে পানি জমার কারণে বিভিন্ন অংশে চাপ দিলে সেখানে গর্ত হয়ে দেবে যাবে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সময় নেবে।
২. অতিরিক্ত ওজন হওয়ায় এসব গরু স্বাভাবিক নাড়াচাড়া ও চলাফেরা করতে পারে না ও শান্ত থাকে।
৩. রাসায়নিকযুক্ত গরু ভীষণ ক্লান্ত থাকে ও ঝিমাবে। আর সুস্থ গরুর গতিবিধি চটপটে থাকে। কান ও লেজ দিয়ে মশা মাছি তাড়ায়।
৪. সুস্থ গরুর নাকের ওপরের অংশটা ভেজা বা বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকবে। অন্যদিকে অসুস্থ গরুর নাক থাকবে শুকনা।
৫. ওষুধ খাওয়ানো গরুর শরীরের অঙ্গগুলো নষ্ট হতে শুরু করায় এগুলো শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়। মনে হবে হাঁপাচ্ছে।
৬. অতিরিক্ত স্টেরয়েড দেয়া গরুর মুখ থেকে প্রতিনিয়ত লালা ঝরে। এসব গরু কিছু খেতে চায় না।
৭. সুস্থ গরুর শরীরের রঙ উজ্জ্বল, পিঠের কুঁজ মোটা, টান টান ও দাগমুক্ত হবে।
৮. সুস্থ গরুর রানের মাংস শক্ত থাকবে। আর রাসায়নিক দেয়া গরুর পা হবে নরম থলথলে।
৯. গরুর শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বুঝবেন গরুটি অসুস্থ।
১০. সুস্থ গরুর চামড়ার ওপর দিয়ে কয়েকটা পাঁজরের হাড় বোঝা যাবে।
তথ্য সূত্র : বিবিসি বাংলা