বাংলাদেশে সহজেই বিভিন্ন প্রকার মাশরুম চাষ করা যায়। ঋতুভেদে উপযুক্ত মাশরুম চাষ করলে উচ্চমূল্যের এবং ব্যয়বহুল শীতলীকরণ যন্ত্র ব্যবহারের দরকার হয় না। ওয়েস্টার ও কান মাশরুম সারাবছরই চাষ করা যায়। যদিও পিংক ও পিও-১০ ওয়েস্টার ছাড়া সব ওয়েস্টারের ফলন গরমকালে একটু কমে যায়। গ্রীষ্মকালে মিল্কি, স্ট্র ও ঋষি মাশরুম এবং শীতকালে শীতাকে ও বাটন মাশরুম চাষ করা যায়।
মাশরুম চাষ পদ্ধতি
মাশরুম উৎপাদনের জন্য স্পন বা বীজের প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারি মাশরুম ইনস্টিটিউট বা বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা মাশরুম ফার্ম থেকে বীজ সংগ্রহ করে মাশরুম চাষ করা যায়। তবে নিজের বীজ নিজে তৈরি করে নেওয়াই ভালো। এজন্য মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে সহজ পদ্ধতিতে ধানের খড়ে এবং কাঠের গুঁড়ায় মাশরুম বীজ উৎপাদন কৌশল হাতেকলমে শিখে নিতে হবে।
এটি চাষের জন্য কোনো আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। যার মোটেই চাষের জমি নেই তিনিও ঘরের পাশের অব্যবহৃত জায়গায় অথবা ঘরের উত্তর পাশের বারান্দা ব্যবহার করে বেশি পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন করতে পারেন। বীজ উৎপাদনের জন্য যেসব কাঁচামালের প্রয়োজন হয়, যেমন- খড়, কাঠের গুঁড়া, কাগজ, গমের ভুসি ইত্যাদি তা সহজলভ্য ও সস্তা। এ দেশের আবহাওয়াও মাশরুম চাষের জন্য উপযোগী। সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ মাশরুম চাষ করতে পারেন। এতে পারিবারিক শ্রমকে কাজে লাগানো যায়। তাকে তাকে চাষ করা যায়। কম পুঁজি ও শ্রম ব্যয় করে বেশি আয় করা সম্ভব।
কম সময়ে দ্রুত ফলন
পাস্তুরাইজেশন পদ্ধতিতে স্পন প্যাকেট উৎপাদন করলে মাইসেলিয়াম দ্বারা পরিপূর্ণ হতে ১০-১৫ দিন সময় লাগে। এ ছাড়া জাতভেদে স্পন প্যাকেট কর্তনের ৩-৭ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। ফলে বিনিয়োগকৃত অর্থ কম সময়ে তুলে আনা সম্ভব।
ভালো ফলনের উপায়
ভালো ফলন পাওয়ার জন্য উন্নত জাতের ভালো মানের বীজ সংগ্রহ বা তৈরি করতে হবে। মৌসুম অনুযায়ী মাশরুম ও তার জাত নির্বাচন করতে হবে। চাষ ঘরে উচ্চ আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে। মাশরুম অনুযায়ী প্রয়োজনী তাপ ও আলো বজায় রাখতে হবে। পরিমিত অক্সিজেন প্রবেশের এবং অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
বাজার সম্ভাবনা
দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল, সুপারশপ ও চাইনিজ রেস্টুরেন্টে মাশরুমের চাহিদা আছে। স্থানীয় কাঁচাবাজার, ফ্রাইশপ, মুদি দোকান, গলির মোড়, বাসস্ট্যান্ড ইত্যাদি জায়গায় বিক্রির সম্ভাবনা আছে। মাশরুম শুকিয়ে দূর-দূরান্তে বিক্রি করা সম্ভব। এমনকি বিদেশে রপ্তানি করাও যায়। মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ধারণায় মাশরুম হাট গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন জেলার কাঁচা ও শুকনা মাশরুম বিক্রির ক্ষেত্রে সহায়তা করা হয়।