যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা অনেক সময়ই ভাবেন, বাদামি ডিমের দাম সাদা ডিমের চেয়ে বেশি কেন। সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, বাদামি ডিম সাদা ডিমের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর বা যেসব মুরগি এই ডিম দেয়, তাদের প্রাকৃতিকভাবে লালন-পালন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে বিষয়টি তা নয়।
সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, বাদামি ডিমের দাম বেশি হওয়ার মূল কারণ হলো খামারের অর্থনীতি, আর কিছু নয়। অর্থাৎ বাদামি ডিমপাড়া মুরগির খাবার ও স্বাস্থ্য ভালো রাখার ব্যয় বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের যেসব খামারে বাদামি ডিম উৎপাদিত হয়, তাদের অনেকে সরকারি প্রত্যয়ন পেয়ে থাকে। এ ধরনের খামারগুলোর একটি হচ্ছে সোভা ফার্মস। এই খামারে এখন প্রতিদিন ৩৫০টি বাদামি ডিম উৎপাদিত হয়। তাদের পরিকল্পনা, সংখ্যাটা ১ হাজারের ওপরে নিয়ে যাওয়া।
সোভা ফার্মের মালিক এডমান্ড ম্যাকনামারা সিএনএনকে বলেন, এই খামারে যেসব ডিম উৎপাদিত হয়, সেগুলো মূলত বাদামি ডিম; কিন্তু কখনো কখনো দেখা যায়, এসব ডিমের রং খুবই হালকা বাদামি।
সাদা ও বাদামি ডিমের মধ্যে পুষ্টিগত পার্থক্য না থাকলেও দোকানে বাদামি ডিমের কদর বেশি। পুষ্টিবিদেরা বলেন, শুধু সাদা বা বাদামি নয়; আরও অনেক রঙের ডিম বাজারে আসে, যেমন নীল ও সবুজ রঙের ডিমও আসে। বিষয়টি নির্ভর করে খাবারের ওপর।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ্য ব্যবস্থাবিদ্যা কর্মসূচির পরিচালক জোয়ান ফ্রাঙ্ক সিএনএকে বলেন, ‘আমার মনে হয়, ক্রেতাদের মনে কোনো কারণে এই বিশ্বাস জন্মেছে যে বাদামি ডিম সাদা ডিমের চেয়ে বেশি পুষ্টিকর।’
সোভা ফার্মসে এখন এক ডজন বড় আকারের বাদামি ডিমের দাম ৮ ডলার। প্রাকৃতিকভাবে বড় হওয়ার মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে, সাধারণ আকারের বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি ৪ দশমিক ৫০ থেকে ৬ ডলার।
অথচ দোকানে সাদা ডিমের দাম ডজনপ্রতি আড়াই ডলার, যদিও সম্প্রতি দাম কিছুটা বেড়েছে, আগের সপ্তাহে দাম ছিল দেড় ডলার।
মুরগির খাবারের পাশাপাশি আরও কিছু কারণে ডিমের দাম ওঠানামা করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে আবারও বার্ড ফ্লুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। অনেক মুরগি মারা পড়তে পারে। সে জন্য এবার সারা বছর ডিমের দাম বাড়তি থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে মোদ্দাকথা হলো, বাদামি ডিম উৎপাদনের খরচ বেশি, সে কারণে এসব ডিমের বাজারমূল্যও বেশি।
কিন্তু পুষ্টিমানের পার্থক্যের বিষয়ে বিশ্লেষকেরা বলেন, বিষয়টি অনেকটা এ রকম—ডিম আগে না মুরগি আগে। হতে পারে এই ধারণা বিজ্ঞাপনের কারণে তৈরি হয়েছে; আবার এমনও হতে পারে, এই ধারণা ভোক্তাদের মনে কোনো কারণে তৈরি হয়েছে।
ডেইলি প্রথম আলো