আমাদের দেশে দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কোয়েল পালন। কোয়েল পালনে অনেক যুবক তাদের বেকারত্ব দূর করেছেন। অনেকে কোয়েল পালন করে হয়েছেন উদ্যোক্তা। আবার অনেকে কোয়েল পালন করে উদ্যোক্ত হতে চান। তবে কোয়েল পালন করতে গেলে অনেক কিছু জেনে রাখা প্রয়োজন।
কোয়েল পালনের ক্ষেত্রে প্রথমে আবাসন, খাবার, কোয়েলের সুস্থতা ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার সম্পর্কে জানতে হবে। কোয়েলের আবাসন হলো খাচা। খাচা একটু বড় সাইজের হলে ভালো হয়। তাহলে কোয়েল একটু নড়াচড়া ও হাটাহাটি করতে পারে। প্রতি বর্গফুটে ৮টি পাখি পালন করা যায়।
সাধারণত অনেকে বলে থাকে কোয়েলের কোনো রোগবালাই হয় না। শুধু ডিম পাড়ার জন্য মাদি কিনে নিয়ে আসলেই হয়। বিষয়টি সম্পূর্ণ ভূল। কোয়েলের পানি খাওয়ার ও খাবারের পাত্র আলাদা লাগবে। সময় মতো পানি ও খাবার দিতে হবে। আর সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
কোয়েলের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রোগ হলো আসিরিটিভ এনটিরিটিস বা কোয়েল ডিজিজ। অনেক সময় বোঝা যায় না কিভাবে এ রোগটি হলো। এ রোগ হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব কোয়েল পাখি মরে যাবে।
কোয়েলের কৃমিও হতে পারে। কৃমি রোগে আক্রান্ত হলে কোয়েল মরবে না। তবে ডিম দেয়া কমে যাবে। তবে বেশি অসুস্থ হয়ে গেলে কিছূদিন পর মারা যাবে। আরেকটি সমস্যা হলো পাখির আমাশয়। ঔষধ খাওয়ালে সুস্থ হবে। তবে ডিম দেওয়া কমে যাবে।
কোয়েলের চোখ ফুলে যাওয়া রোগও হয়। পাখির বিষ্ঠা থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস বের হয় এর ফলে অনেক সময় চোখ ফুলে যায়। কোয়েলের খাচায় পর্যাপ্ত বাাতসের চলাচলের ব্যবস্থা থাকলে আর সমস্যা হবে না। তবে ডিম দেয়া কমে যাবে। লিটারে ফাঙ্গাস হতে পারে- যা খেলে কোয়েল বাঁচবে না।
খাঁচায় কোয়েল পালন করলে রোগবালাই কম হবে। এছাড়ও কোয়েল পাখি উড়ে। উড়তে গিয়ে কখনো ডিমের উপর গিয়ে পড়ে। এতে ডিম ভেঙে যায়। ফলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। খাঁচায় পালন করার পর শুধুমাত্র বার্ডফ্লু দেখা দিলেই পাখি মারা যাবে।
খাঁচাতেও কোয়েল মারা যেতে পারে। খাঁচার নেটে ভেতর মাথা ঢুকিয়ে ও খুঁচিয়ে নেট এর ফাঁকে পা আটকে যায় এসব কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাখি মারা যায়। তবে সেটা খুবই নগণ্য। পাখির ঘর বা খাঁচা স্থাপন করতে হবে উঁচু স্থানে। খাঁচার ছাউনি এবং চারপাশে নেট যাতে বাতাস চলাচলে কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়।
কোয়েল পালনে ৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে মাসে ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব। তবে সেটি সঠিক নিয়মে করতে হবে। লিটার পদ্ধতিতে কোয়েল পালনের অসুবিধা ও খাঁচায় কোয়েল পালনের সুবিধাগুলো জানতে হবে।
কোয়েল পালনে খুব বেশি যত্নবান হতে হবে। কোনোভাবে যত্নের ত্রুটি করা যাবে না। কোয়েলকে ভালো মানের খাবার দিতে হবে। নিম্ন মানের খাবার দিলে য়েলের আমাশয় বা পেটে সমস্যা দেখা দেবে। ভ্যাকসিন দিলে হয়তো সুস্থ হবে কিন্তু ততক্ষণে পাখির ডিম দেওয়া কমে যাবে। পাখি যদি অসুস্থ থাকে তাহলে পাখি সাধারণত ডিম পাড়ে না। লিটারে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাই খাঁচায় পালন করা ভালো।
সূত্র: আধুনিক কৃষি খামার।