কয়েকদিন পরই কোরবানির ঈদ। এ ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে মেহেরপুরের বারাদী ছাগলের হাট। ছাগলের এ হাট দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ছাগলের হাট বলে পরিচিত।
বছরজুড়ে সপ্তাহের শনি ও বুধবার ক্রেতা-বিক্রেতার ব্যাপক সমাগম থাকে হাটটিতে। কোরবানির বাজারে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মেহেরপুরের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কিনতে বরাবরের মতোই ব্যাপারীরা ভিড় করছে ঐতিহ্যবাহী পশুর এ হাটে। অনেকে আবার ট্রাক বোঝাই করে ছাগল নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন জেলার হাটে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, মেহেরপুর জেলায় কোরবানিযোগ্য ছাগলের চাহিদা ৫০ হাজারের কিছু বেশি। তবে জেলায় কোরবানি উপযোগী ছাগল প্রস্তুত করা হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০টি। উদ্বৃত্ত ছাগলগুলো ব্যাপারীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে পৌঁছে যাবে।
খামারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে বাড়িতে পালিত কোরবানিযোগ্য খাসিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে হাটটি। জাত ভেদে ৮ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকানো হচ্ছে ছাগলের দাম। বারাদী হাট ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের হাট বলে পরিচিত হলেও এবার বিভিন্ন সংকর জাতের ছাগলের আধিক্য দেখা গেছে। পাশাপাশি কিছু ভেড়ারও দেখা মিলেছে এখানে।
বারাদী হাটের ইজারাদার মো. ইসরাফিল বলেন, এখানে প্রতি হাটে তিন থেকে চার হাজার ছাগল আমদানি হয়। আজকে প্রায় ৪ হাজার ছাগল আমদানি হয়েছে।
স্থানীয় কোরবানিদাতা ছাড়াও আজ বাইরের ব্যাপারীরাও হাটে প্রবেশ করেছেন। এজন্য গত কয়েক হাটের তুলনায় আজ পশুহাটটি জমে উঠেছে। ব্লাক বেঙ্গল ছাগল ছাড়াও, তোতাপুরী, হরিয়ানা এবং বিভিন্ন সংকর জাতের ছাগল নিয়ে এসেছেন বিক্রেতারা।
বারাদীর স্থানীয় ছাগল ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রচুর পরিমাণ ছাগল আমদানি হয়েছে আজকের হাটে। আমরা গ্রাম এলাকা থেকে ছাগল কিনে এই হাটে বাইরের ব্যাপারীদের কাছে বিক্রি করি। অনেকে কোরবানির জন্যও কিনে নিয়ে যায়। আজ বাইরের ব্যাপারী বেশি এসেছে। এজন্য তুলনামূলকভাবে দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার রফিকুল ইসলাম হাটে এসেছিলেন কোরবানির ছাগল কিনতে। তিনি বলেন, ছাগলের আমদানি বেশি হলেও, দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। মূলত বাইরে থেকে ব্যাপারী আসাতে আজ দাম বেড়ে গেছে।
উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলাতে পশুর হাট হিসেবে সর্বপ্রথম বারাদী ছাগলের হাট প্রতিষ্ঠিত হয়। যার বয়স শত বছর পেরিয়ে গেছে। বাড়াদি ছাগল হাটের পর জেলায় মেহেরপুর, গাংনী ও বামন্দীতে গরু-ছাগলের হাট প্রতিষ্ঠা করা হলেও বারাদী ছাগল হাটের আবেদন একই রকম রয়ে গেছে ক্রেতাদের কাছে।
সূত্র: কালবেলা।