জীব বৈচিত্র রক্ষাসহ দেশি মাছের ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় চলনবিলে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার দেশীয় প্রজাতির মাছ উন্মুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, ‘স্রষ্টার সকল সৃষ্টিই মানব কল্যাণার্থে সৃষ্ট’ প্রতিপাদ্য নিয়ে পক্ষীকূলের আশ্রয় ও খাদ্য নিশ্চিত করণ প্রকল্প যাত্রা শুরু করে ২০০১ সালে। উদ্ভাবন ও সমন্বয়কারী যশোধন প্রামানিক সরকারী কর্মকর্তাগণের সম্পৃক্ত কর্মপরিধীতে সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। দেশে পাখিসহ জীবজগত রক্ষায় রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে বাস্তবায়ীত করা লক্ষে ২০২০ সালে জলাধার তৈরি বিষয়ে জেলা প্রশাসক নাটোরকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।
পত্রে তিনি উল্লেখ করে বলেন, ১নং খাস খতিয়ান ভূক্ত চিহিৃত স্থানে জলাধার করা প্রয়োজন। নাটোর বড়াইগ্রাম উপজেলার বিল চিনিডাঙ্গা, দোবিলা বিল, সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নে কাচারি দিঘী ও নলডাঙ্গায় বিল হালতি ও রাজশাহী জেলার তানোর ও দূর্গাপুর উপজেলার জোকা বিলসহ মোট ১৮টি জলাধার তৈরির সুপারিশ করেন। জলাধার গুলো তৈরি করা হলে এসব এলাকার জীব বৈচিত্র রক্ষাসহ দেশি মাছের ব্যাপক উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে বলেও জানান তিনি।
আবেদনের প্রেক্ষিতে নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০২১-২২ অর্থ বছরের অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী খাল ও জলাশয় প্রকল্পে সিংড়া ডাহিয়া ইউনিয়নে কাচারি দিঘীটি (প্রাকৃতিক মৎস অভয়াশ্রম) প্রায় ১৩ একর পূনঃ খনন করে।
সিংড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, চলনবিলের দেশিয় প্রজাতির মাছ ও জীব বৈচিত্র রক্ষার্থে ডাহিয়া কাচারি দিঘীটি (প্রাকৃতিক মৎস অভয়াশ্রম) এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এ অভয়াশ্রমে প্রায় ৫০/৬০ লক্ষ টাকার দেশিয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষিত ছিল। যা এই বর্ষা মৌসুমে চলনবিলে উম্মুক্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আশা করা যাচ্ছে এবার চলনবিলে দেশিয় মাছের প্রাচুর্য্য বৃদ্ধিসহ উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। কাচারি দিঘীটি পূনঃখনন করার ফল ভোগ করবে চলনবিল বাসীসহ পুরো দেশ। মাছের সাথে পাখিসহ জীব বৈচিত্র অবাধ বিচরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অভয়াশ্রমটির চারদিকে হিজল, কড়চ ও জারুল গাছের চারা রোপন করা হলে পাখিদের আবাস্থল তৈরিসহ চলনবিলের জীব বৈচিত্র রক্ষা হবে। এমন সমন্বিত প্রচেষ্টায় অভয়াশ্রমসহ জীব বৈচিত্র রক্ষায় আরো প্রকল্প হাতে নিয়ে বাস্তবায়ন করা হলে মাছের সাথে পাখিসহ জীব বৈচিত্র অবাধ বিচরণ বেড়ে যাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা ।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হা-মীম তাবাস্সুম প্রভা জানান, চলনবিলে পাখিসহ জীবজগত রক্ষা ও অভয়াশ্রম গুলোতে সংলিষ্ট দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। অভয়াশ্রমে অসময়ে মৎস নিধন ও বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বাধা গ্রস্থ করা হলে অভিযান পরিচালনা করে তা অপসারণসহ তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে জানান এই কর্মকর্তা।