অল্প সময়ের মধ্যেই সফলতা পাওয়া যায় বলে যুবকরা চাকরির পেছনে না ছুটে গাড়ল পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। তেমনি এই জাতের প্রাণী পালন করে লাভবান হয়েছেন খামারি আশরাফ আলী। তার দেখাদেখি অনেকেই গাড়ল পালনের আগ্রহী হচ্ছেন। ধীরে ধীর এর বিসৃতি লাভ করছে। বগুড়ায় উদ্যোক্তাদের গাড়ল পালনে আগ্রহ বাড়ছে। এটি ভেড়া বৈশিষ্ট একটি জাত। বর্তমানে এই জাতের পশু পালনে লাভের মুখ দেখছেন উদ্যোক্তারা।
খামারি আশরাফ আলী বগুড়ার সরিষাকান্দি উপজেলার ধাপ এলাকার বাসিন্দা। তিনি নদীর পাড়ে ‘যমুনা গাড়ল খামার’ নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। গাড়ল ভেড়া জাতিয় একটি প্রাণী। তবে ভেড়া নয়। এর লালন পালনে খরচ অনেক কম এবং লাভ অনেক বেশি। স্বাদ ও পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় এর মাংসেরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভারতের নাগপুর অঞ্চলের ছোট নাগপুরি জাতের ভেড়ার সঙ্গে আমাদের দেশি ভেড়ার ক্রসব্রিড। এই ক্রসব্রিডের নাম গাড়ল। বর্তমানে তিনি এর পালন করে বছরে লাখ টাকা আয় করছেন। ভেড়া থেকে গাড়ল বেশি বড় হয় এবং এর লেজও লম্বা হয়।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় গত তিন বছরে ৩-৪টি গাড়লের খামার গড়ে উঠেছে। ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক গৃহস্থ ও কৃষক এই পশু পালন করছেন। এরা ভেড়ার মতোই নিরীহ ও বোকা। দেখতে ভেড়ার চেয়ে কিছুটা সুন্দর। অনেকটা দুম্বার মতো। এটি ভেড়ার একটি জাত।
সরিষাকান্দির খামারি আশরাফ আলী বলেন, আমি গত ৩ বছর আগে আমার ছেলেকে নিয়ে ৪০ শতাংশ জায়গায় গাড়লের খামার গড়ে তুলি। আমরা প্রথমে মেহেরপুর, টাঙ্গাইল জেলা থেকে গাড়লগুলো সংগ্রহ করি। তারপর পালন শুরু করি। এগুলো সব পরিবেশের সাথেই মানিয়ে চলতে পারে। এর পালন খুবই সহজ। এই জাত কোরবানিও দেওয়া যায়। এই প্রাণী সাধারণত কাঁচা ঘাস, গাছের পাতা, বিচুলী, ভূষি, খৈলসহ সব ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। এগুলো স্বভাবে শান্তশিষ্ট হলেও পুরুষ জাতি কিছুটা রাগি প্রকৃতির।
বর্তমানে আমরা ৬৫ টি গাড়ল নিয়ে খামার শুরু করেছিলাম। বর্তমানে আমাদের খামারে ১৫০টি গাড়ল রয়েছে। একটি গাড়লের বাচ্চার দাম ৬-৮ হাজার টাকা। আমাদের ১ থেকে দেড় হাজার গাড়লের পালন করার পরিকল্পনা রয়েছে। মাদি বিক্রি হয় প্রতিটি ১২-১৩ হাজার টাকায়। আর গর্ভবতী গাড়ল বিক্রি হয় ১৫-১৬ হাজার টাকায়।
জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, গাড়ল ভেড়া জাতিয় একটি জাত। বর্তমানে এর পালন ও চাহিদা দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পালন অনেক সহজ ও খরচ অনেক কম হওয়ায় যুবকরা এর পালনে ঝুঁকছেন। গাড়লের মাংসে কোলেস্টেরল অনেক কম। দিন দিন এর প্রসার বাড়ছে। আশা করছি বাড়ছে। গাড়ল পালনে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। সব বয়সী মানুষ এর মাংস খেতে পারে।
সূত্র: জুমবাংলা ডেস্ক