২৮/০৭/২০২৪ খ্রি.
ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের আবু তাহের একজন কৃষক । বাবার জমিতে ২টি মাত্র পুকুর দিয়ে ২০১৫ সালে মৎস্য চাষ শুরু করেন তাহের । মৎস্য চাষ করে যখন তার আর্থিক অবস্থা ভালো হতে থাকে তখন তিনি এলাকার বিভিন্ন জনের কাছ থেকে পরিত্যাক্ত ও অনাবাদি জমি লিজ নিয়ে তার খামারকে প্রসারিত করতে থাকেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এগিয়ে চলেছেন শুধু সামনের দিকে। বর্তমানে তাহের মৎস্য খামারে ১৫ বিঘা জমিতে পুকুরের সংখ্যা রয়েছে ৫ টি।
তাহের ধামরাই এর একজন আদর্শ ও প্রতিষ্ঠিত মডেল মৎস্য চাষি। তাহেরের দেখা দেখি তার এলাকা ও আশপাশের বেকার যুবকেরা পরামর্শ নিয়ে মৎস্য চাষ শুরু করেছে। যারা তার দেখাদেখি শুরু করেছিলেন আজ তারা বেশ ভালো অবস্থানে আছেন। তার খামারে প্রতিদিন প্রায় ১০ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে থাকেন।
পুকুরে মাছ এবং মাছের খাবার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার পুকুরে রুই, কাতলা, গ্রাস কার্প, জাতিয় মাছ মৃশ্র চাষ করেন। এবং সকাল ও বিকেল ২ বেলা মাছের খাবার (ফিড) প্রয়োগ করে থাকেন।
মাছের পোনা সংগ্রহের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে তিনি সুস্থ সবল পোনা সংগ্রহ করে তার পুকুরে অবমুক্ত করেন।
সাফল্যের বিষয়ে মৎস্য চাষি তাহের বলেন, দেশে বেকারত্ব দূরিকরণ এবং আমিষের চাহিদা কিছুটা হলেও পুরণ করার জন্য এ পেশায় এসেছি। দেশের এবং জনসাধারনের কথা চিন্তা করে এদেশের মানুষের পুষ্টির যোগান দিতেই বেকার যুবকদের মৎস্য চাষে উৎসাহিত করে তুলেছি। একটু হলেও তো দেশের উপকারে আসতে পেরেছি। নিজের পাশাপাশি দেশকেও নিয়ে ভাবতে হবে। তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে, দেশের উন্নয়ন ঘটবে। তিনি বলেন, অন্যের পুকুরে টিকিটে মাছ ধরতে গিয়ে মাছ চাষে আগ্রহ জাগে। কৃষির পাশাপাশি মাছ চাষে মনোনিবেশ করি। আমার নিজের পুকুরে বড় মাছের চাষ করি তাই মাঝে মধ্যে এই পুকুরেও মাছ ধরার জন্য টিকিট বিক্রি করে থাকি। আমি বিশ্বাস করি এদেশের শিক্ষিত বেকার যুবকেরা সততার সাথে শ্রম দিয়ে মাছ চাষ করলে ভালো অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। চাকরি নামের সোনার হরিণের পিছু না নিয়ে একটু প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষে মনোনিবেশ করলে যেমনি এদেশ থেকে বেকারত্ব কমবে, সেই সাথে দেশের মাছের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ হবে বলে আশাকরছি।
পরিশেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, আঞ্চলিক অফিস, ঢাকা থেকে আবু তাহের কে মাছচাষ বিষয়ক বিভিন্ন লিফলেট বিনামূল্যে বিতরণ করে, মাছচাষ ও মাছের যেকোন রোগের লক্ষণ পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগের পরামশ প্রদান করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, আঞ্চলিক অফিস, ঢাকা থেকে ২ জন কর্মচারী খামারটি পরিদর্শন করেন । পরিদর্শনকালে খামারিকে পরামর্শ প্রদান করেন মো. খাদেমুল ইসলাম, কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক এবং খামারির ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন মো. ফাহিম রহমান রনি, অডিও ভিজ্যুয়াল ইউনিট অপারেটর।
প্রতিবেদনকারী
(মো. খাদেমুল ইসলাম)
কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর
আঞ্চলিক অফিস, ঢাকা।