ফারুক আহমদ আরিফ
প্রকাশ : ১৯ ঘণ্টা আগে
আপডেট : ১৯ ঘণ্টা আগে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা হিসেবে মনোনীত হয়েছেন ‘উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা’ (উবিনীগ) প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের কৃষি, নারী অধিকার ও সমাজসেবাসহ বিভিন্ন অঙ্গনে কাজ করে আসছেন। রবিবার (১১ আগস্ট) সকালে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে পৌঁছলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে এ খাত নিয়ে নিজের স্বপ্ন, চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকার বিষয়ে কথা বলেছেন এই উপদেষ্টা।
‘আমরা কৃষি নিয়ে স্বপ্ন দেখি। কৃষিরই একটি অংশ হচ্ছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত। এ খাত আমাদের খাদ্যের চাহিদা, খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি জোগানের অন্যতম উৎস। বাণিজ্যিক নয়, বরং আমরা পারিবারিকভাবে হাঁস-মুরগির উৎপাদন বাড়াতে পারি। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। বিশেষ করে কৃষক ও নারীদের অর্থনৈতিক মুক্তি ত্বরান্বিত হবে। তাদের অর্থনৈতিক ভিত শক্তিশালী করাই আমাদের প্রধান স্বপ্ন।’
বলছিলেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি জানালেন, ‘নদী ও সমুদ্র সম্পদকে যদি কাজে লাগাতে পারি, তাহলে আমরা আরও সমৃদ্ধিশালী হতে পারব। কেননা এ দেশ একটি সুন্দর ও বৈচিত্র্যময় দেশ। এসব কাজ যদি বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে দেশ পুষ্টি ও খাদ্য উৎপাদনে পুরোপুরি চাহিদা পূরণ করতে পারবে।’
কোন বিষয়গুলোতে অগ্রাধিকার থাকবেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, ‘আমরা অগ্রাধিকার দেব গ্রামীণ নারীদের ক্ষেত্রে। তারা ঘরে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল লালন-পালন করেন। তাদের ছোট ছোট উদ্যোগগুলো কীভাবে আরও বিস্তৃত করা যায়, অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা যায় তা দেখতে হবে। তাদের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এ খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তার সমাধান করব। আমরা প্রত্যেকের সঙ্গে মিলেমিশে প্রতিটি হাতে কাজ করব। দেশকে সমৃদ্ধিশালী করে গড়ে তুলব।’
গতকাল রবিবার ফরিদা আখতার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার প্রথম কাজ হচ্ছে মানসম্মত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা। আমিষ নিশ্চিত করা। খাদ্য ও সরবরাহের জোগান এমনভাবে নিশ্চিত করতে হবেÑ যাতে কখনও সংকট তৈরি না হয়।’ তিনি বলেন, ‘মাত্র কাজে যোগ দিয়েছি। আমি খোঁজখবর নেব। তারপর কোন বিষয়গুলোয় অগ্রাধিকার দিতে হবে, সেগুলো ঠিক করে কাজ এগিয়ে নেব। সহিংসতায় অধিদপ্তরের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেগুলোর সংস্কার কাজও শুরু করা হবে।’
ইলিশ রপ্তানি সম্পর্কে ফরিদা আখতার বলেন, ‘দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না আর বিদেশে রপ্তানি হবেÑ এটা হতে পারে না। আগে দেশকে গুরুত্ব দিতে হবে। পরে রপ্তানি করা হবে। দেশের মানুষ যাতে ইলিশ মাছ পায় এবং দাম কমে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
ডিম, দুধ, মাছ ইত্যাদি জিনিসপত্রের দাম কমাতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পারব কিনা, পরের কথা; তবে দায়িত্ব হলো, দাম কমানোর। বাজার সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে হলে সব খাদ্যপণ্য ভেজালমুক্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজারে পণ্যের সরবরাহ বাড়ালে দাম কমে আসবে। এজন্য সরবরাহ বাড়াতে হবে।’