বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাণিজ দুধ ব্রণ, একজিমা, রোজেশিয়ার মতো ত্বকের সমস্যার জন্য কিছুটা হলেও দায়ী। অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, দুধের অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম প্রোস্টেট এবং এতে থাকা চিনি ডিম্বাশয় ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই শুধু ভেগান নন, স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ প্রাণিজ দুধ ছেড়ে উদ্ভিজ্জ দুধের দিকে ঝুঁকছেন। অন্যদিকে, যাঁদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের মতো সমস্যা আছে, তাঁরাও দুধের চাহিদা উদ্ভিজ্জ দুধ দিয়ে মেটাচ্ছেন।
ল্যাকটোজ সংবেদনশীল যে কেউ অবশ্যই উদ্ভিজ্জ দুধ পান করতে পারেন। তবে কোন দুধ বেশি পুষ্টিকর, এই বিষয় মাথায় রাখতে হবে। চলুন বিভিন্ন উদ্ভিজ্জ দুধের পুষ্টির মান জেনে নেওয়া যাক।
সয়া দুধ
১ কাপ বা ২৪০ মিলি সয়া দুধে রয়েছে ১০৫ ক্যালরি, ৬ গ্রাম প্রোটিন, ১২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ৪ গ্রাম চর্বি। যাঁরা নানা কারণে গরুর দুধ খেতে চান না, তাঁদের জন্য প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস হতে পারে সয়া দুধ।
উদ্ভিজ্জ দুধের ভেতর আমন্ড দুধের জনপ্রিয়তা গত চার-পাঁচ বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্মুদি, চা-কফি ও ডেজার্ট ধরনের খাবারে গরুর দুধের বিকল্প হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। ১ কাপ বা ২৪০ মিলি চিনিবিহীন আমন্ড দুধে রয়েছে ৪১ ক্যালরি, ১ গ্রাম প্রোটিন, ২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩ গ্রাম চর্বি।
গরুর দুধের চেয়ে পুষ্টির মান কম থাকা সত্ত্বেও এই দুধের চাহিদা এখন আকাশচুম্বী। কারণ, আমন্ড দুধ ভিটামিন ই–এর খুব ভালো একটি প্রাকৃতিক উৎস। ফ্রি র্যাডিকেলের জন্য শরীরে যেসব রোগ (পারকিনসন, ক্যানসার, আলঝেইমার ইত্যাদি) হয়ে থাকে, সেসব রোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষমতা রাখে এই দুধের ভিটামিন ই।
বর্তমান বিশ্বে স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকার শীর্ষস্থানটি এখন ওটসের দখলে। এই ওট থেকেও দুধ তৈরি করা যায়। ২৪০ মিলিলিটার ওটের দুধে রয়েছে ১২০ ক্যালরি, ৩ গ্রাম প্রোটিন, ৫ গ্রাম চর্বি, ১৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ২ গ্রাম ফাইবার। এ ছাড়া আরও আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, রিবোফ্লোবিন, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ ও ডি। উদ্ভিজ্জ দুধের মধ্যে পুষ্টিগত দিক দিয়ে সয়া দুধের পরই ওটের দুধের অবস্থান।
রিবোফ্লোবিন মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বক, নখ, চুলের জন্য বিশেষ উপকারী। এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে থাকে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব মানুষ টানা পাঁচ সপ্তাহ প্রতিদিন প্রায় ৭৫০ মিলিলিটার ওটের দুধ পান করে, তাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমেছে ৩ শতাংশ এবং খারাপ কোলেস্টেরল, অর্থাৎ এলডিএলের মাত্রা কমেছে ৫ শতাংশ। এই দুধে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি, যা সুস্থ ও সুগঠিত হাড় গঠনে সহায়তা করে এবং অস্টিওপরোসিসের মতো হাড়ের রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।
তথ্যসূত্র: ভোগ, হেলথলাইন, প্রো ভেগ, বিবিসি গুডফুড