বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়নে মৎস্য ঘেরের বেড়িবাঁধে অমৌসুমি তরমুজ চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন কৃষক মো: রাজু মোড়ল। এ অসময় তরমুজ পেয়ে যেমন তৃপ্ত হচ্ছে মানুষ, তেমনি ভালো মূল্য পেয়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিও।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার লখপুর ইউনিয়নের বল্পবপুর গ্রামের মো: রাজু মোড়ল তার মৎস্য ঘেরের আইলে অমৌসুমি তরমুজ চাষ করেছেন। প্রতিটা তরমুজের ওজন প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি।
স্মলহোল্ডার অ্যাগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রকল্পের (এসএসিপি) আওতায় চাষীরা মো: রাজু মোড়ল তার নিজ এলাকায় কৃষিবিষয়ক কারিগরি সেবার মাধ্যমে একই জমিতে বছরব্যাপী বিভিন্ন রকম ফসলের চাষ করতে উদ্বুদ্ধ হন। তিনি চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৫০ শতক জমির আইলে অমৌসুম জাতের তরমুজ ড্রাগন কিং ও মার্সোলো চাষ করেছেন। এতে তার আনুমানিক ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং প্রায় তিন মাসে তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়েছে।
এখন তার তরমুজ ক্ষেতে ৮০০টির বেশি তরমুজ রয়েছে। এসব তরমুজ খেতে খুবই সুস্বাদু এবং দেখতেও বেশ দৃষ্টিনন্দন। স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি তরমুজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এবং তিনি আনুমানিক এক থেকে দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করেন।
একই উপজেলার অন্য ইউনিয়নের অনেকে একই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেছেন বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে তারাও ফসল বাজারে তুলতে শুরু করেছেন। একই সাথে তারা জমির আইল ও বাঁধে শষা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ঢেঁড়শ, করলা এবং জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। সামনের শীত মৌসুমে বোরো ধান, তরমুজ, সরিষা এবং বাঁধে ১২ মাস সবজি চাষ করবেন বলে জানান।
লখপুর ইউনিয়ন ব্লকের উপ-সহকারী অভিজিৎ গাইন ও জয়নাব খাতুন বলেন, ‘অমৌসুমি তরমুজ চাষ করে আমার ব্লকের চাষিরা উপকৃত ও স্বাবলম্বী হচ্ছে। ইতোমধ্যে তাদের সফলতা দেখতে পেয়ে আমি আনন্দবোধ করছি। অমৌসুমী তরমুজ হওয়ায় স্থানীয় বাজারে চাহিদাও ব্যাপক। আমাদের উপজেলা কৃষিবিদ মো: সাখাওয়াত হোসেন স্যার চাষিদের নতুন নতুন সবজি এবং ফল চাষে আগ্রহ বাড়াতে আমাদের উৎসাহ ও সহযোগিতা করেন সবসময়।’
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: সাখায়াত হোসেন বলেন, ‘আমার ফকিরহাট উপজেলার মাটি সোনার চাইতে খাটি। এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ, শষা, সামমাম চাষ করার জন্য বেশ উপযোগী। চাষি মো: রাজু মোড়লসহ উপজেলার অন্য ইউনিয়নে অসময় তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। তাদেরকে বীজ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ, সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। চাষিরা আমাদের দেয়া জাতের বীজের তরমুজ চাষের পাশাপাশি অন্যান্য সবজি চাষও করেন। এভাবে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে পারলে এলাকার সকল পতিত জমি ও ঘেরের বেড়িবাঁধে চাষাবাদের মাধ্যমে চাষিদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা যাবে।’
সূত্র: নয়া দিগন্ত