৯
বাগেরহাটের ফকিরহাটে পরীক্ষামূলকভাবে মরু অঞ্চলের সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের সাম্মাম ফলের চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। এরই মধ্যে সাম্মাম এলাকার মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের ডহরমৌভোগ এলাকায় মৎস্য ঘেরের ওপর বিশেষ পদ্ধতিতে মাচা করে সেখানে সাম্মাম ফলের চাষ করছেন কৃষকরা। গাছে গাছে ঝুলছে সাম্মাম।
সবুজ থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে ফলগুলো। প্রায় প্রতিটি গাছে দুই থেকে তিনটি করে ফল ধরেছে।ডহরমৌভোগের কৃষক কালিদাস ঢালী জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে পরীক্ষামূলকভাবে এই ফলের চাষ শুরু করেন তিনি। চার বিঘা মৎস্য ঘেরের আইলে বীজ বপন করেন।
এরপর গাছ বাড়তে থাকলে ঘেরের ওপর বাঁশ ও জাল দিয়ে মাচা তৈরি করে প্রথম পর্যায়ে সাম্মাম চাষ শুরু করেন। এই চাষ করতে তাঁর ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অনেকে ঘেরে এসে এই ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কোনো সমস্য না হলে দেড় লক্ষাধিক টাকার সাম্মাম ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
রুপক তালুকদার, সম্রাট মজুমদার, লিপন ঢালীসহ অন্য কৃষকরা জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় তাঁরা ঘেরের ওপর মাচা করে সাম্মামের চাষ করেছেন। বীজ রোপণের দুই মাসের মধ্যে গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করে। ঘেরের আইলে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি এবার সাম্মাম চাষ করেছেন তাঁরা। বাজারে এর চাহিদা আছে। ভালো দামও পাওয়া যাবে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দাস জানান, এই ফল মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি অঞ্চলের হলেও ফকিরহাট উপজেলার ডহরমৌভোগসহ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক পরীক্ষামূলকভাবে সাম্মাম চাষ করছেন। সাম্মাম ফলের চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে ফল পাকা শুরু হয়। সাম্মাম মূলত বেলে-দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়। ফকিরহাটের অনেক অঞ্চলের মাটি সাম্মাম চাষের জন্য উপযোগী। তিনি আরো জানান, গাছের গোড়ার অংশের মাটি এক ধরনের পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এসব কৃষকের সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি নানাভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ শাখাওয়াত হোসেন জানান, ফকিরহাটে পরীক্ষামূলকভাবে মৌচাক জাতের সাম্মাম ফলের চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। রকমেলনধ বা সাম্মাম একটি উচ্চমূল্যের বিদেশি ফসল। কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশে কিছু অঞ্চলে চাষাবাদ হচ্ছে।
সূত্র: কালের কণ্ঠে