কুমিল্লা, 23/9/24
কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার শাকতলা গ্রামের গৃহবধূ সেলিনা আক্তার । তার স্বামি পেশায় একজন প্রবাসী ছিলেন। বর্তমানে তাহার স্বামী মৃত। দুই সন্তানকে নিয়ে তার বসবাস।তার জমানো কিছু টাকা দিয়েই শুরু করেন খামার করার চিন্তা।শুরুতে ০২ টি গরু দিয়েই তাহার খামারের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে এনজিও থেকে কিছু টাকা লোন নিয়ে গরুর সংখ্যা বাড়ান। এভাবে এক পর্যায়ে তার খামারে গরু পালন করেন ২০ টি। এর মধ্যে দেশি গরু,ষাড়,বাছুর ছিল।
২০২০ সালে করোনার সময়ে গরুর ক্ষুরা রোগ দেখা দেয় । সঠিক চিকিৎসার অভাবে পর পর তার ৮টি গরু মারা যায়। বর্তমানে তার খামারে ১২টি গরু রয়েছে। তিনি প্রতিদিন ঐ গাভী গুলো থেকে প্রায় ২০ লিটার দুধ সংগ্রহ করেন। স্থানীয় মহল্লাতে ৮০ টাকা দরে দুধ বিক্রি করেন। গেলো কোরবানি ঈদে তিনি ৩টি গরু বিক্রি ও করেন।
সেলিনা আক্তারের খামারে খাদ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তিনি দানাদার খাদ্য ও কাঁচাঘাস খাওয়ান। কাঁচাঘাসের জন্য বাড়ির পাশেই নিজ জায়গায় ভুট্টা ও নেপিয়ার ঘাসের চাষ করেন। এছাড়াও শীতকালে তিনি গরুকে খড় খাওয়ান। সেলিনা আক্তার তার খামারে গরুকে খাদ্য প্রদানের জন্য আলাদা আলাদা ৪ টি শেড আকারে করেছেন। সপ্তাহে ২ দিন শেডের ফ্লোর ব্লিচিং পাউডার ও পটাসিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট দিয়ে পরিষ্কার করেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খামারে গরুর সংখ্যা বাড়াবেন ও কোরবানি ঈদে সেই গরু বিক্রি করে লাভের টাকায় ছাগলের খামার দিবেন। তার গরুর খামারের পাশাপাশি বর্তমানে তিনি ৩০ টি দেশী মুরগি পালন করেন।
খামার পরিচালনার ক্ষেত্রে তার সহযোগী হিসেবে তার ছেলেরা পড়াশোনার পাশাপাশি মাকে সাহায্য করেন। তাহার এই উদ্যোগ কে কাজে লাগিয়ে আরো সাফল্য অর্জন করতে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ রাখতে এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়।
একজন সাধারণ নারি হয়েও স্বামীর অবর্তমানে তিনি যে সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছেন আর উদ্যোগ নিয়েছেন চাইলে তাহার মতো আপনিও চাকরির পিছনে না ছুটে একজন সফল খামারি হয়ে ওঠতে পারেন। আপনার কর্মসংস্থান এর সুযোগ আপনি নিজেই তৈরি করতে পারেন।
সবশেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর থেকে তাকে প্রাণিসম্পদ বিষয়ক বিভিন্ন লিফলেট প্রদান করা হয় এসাথে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের পরিচিতি দেয়া হয় ।