২২
বলা হয়ে থাকে, নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় দুধ বাজার এটি। নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা থেকে আসা মিষ্টি ব্যবসায়ী, পাইকাররাসহ স্থানীয় দুধ ব্যবসায়ীরা দুধ কিনতে প্রতিদিন এখানে ছুটে আসেন। দুধ বিক্রির জন্য বিখ্যাত হয়ে যাওয়ায় মণ্ডলবাড়ি এলাকা এখন সবাই দুধ বাজার এলাকা নামেই চিনে। বাজারটিতে বর্তমানে দৈনিক প্রায় ১৫ লাখ টাকার দুধ বিক্রি হয়ে থাকে।
এ হিসাবে মাসে বিক্রি হয় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার দুধ। আগের তুলনায় বর্তমানে দুধের দাম বাড়লেও দুধের মান এখনো আগের মতোই সেরা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় দুধ কেনাবেচা, চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত। এরপর বিরতি দিয়ে আবার বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দুধ কেনাবেচা চলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই দুধ বাজারকে কেন্দ্র করে আশপাশের অন্তত ২০টি এলাকায় ছোট-বড় শতাধিক খামার গড়ে উঠেছে। যেখানে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। এই দুধের বড় একটি অংশই দুধ বাজারে বিক্রি হয়। বাকিটা ক্রেতারা সরাসরি খামারে এসে কিনে থাকে। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে এই বাজারে দুধ কিনতে আসেন মিষ্টি ব্যবসায়ী জামাল হোসেন।
তাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘মিষ্টি তৈরির জন্য দৈনিক আমার ৫০ মণ দুধ লাগে। দুধের এই পুরো চাহিদাই এই বাজার থেকে মিটিয়ে থাকি। দুধের মান ভালো হওয়ায় অন্য কোথাও থেকে দুধ কেনার চিন্তা করিনি।’রফিকুল ইসলাম দীর্ঘ ১০ বছর ধরে শহরের দেওভোগ এলাকায় বাসায় বাসায় গিয়ে দুধ বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রতি লিটার দুধ ৭৫-৮০ টাকায় কেনা হয়ে থাকে। আর ৯০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। এ দিয়েই আমার পরিবার চলে।’জুয়েল মিয়া নামের এক গরু খামারি জানান, বর্তমানে তাঁর খামারে ১৫টি গরু রয়েছে। প্রতিদিন সকালে ৫০ কেজি এবং বিকেলে ৪০ কেজি দুধ বিক্রি করে থাকেন।
রাশেদুল ইসলাম রাজু, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘এই দুধ বাজারটি অনেক প্রসিদ্ধ একটি বাজার। এই বাজার শুরু হওয়ার পর এটাকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় কয়েক শতাধিক খামার গড়ে উঠেছে। এখানে দুধ বিক্রি করে তারা স্বাবলম্বী হয়েছে।’