দেখতে অনেকটা মুরগির মতো হলেও তিতির আসলে পাখি। অত্যধিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন আফ্রিকার এ পাখি বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে ‘চায়না বা চিনা মুরগি’ নামে পরিচিত। পাখিটি ইংরেজদের হাত ধরে ইউরোপ থেকে ব্রিটিশ উপনিবেশ হয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় আসে।
তিতির পাখি শোভাবর্ধনকারী হলেও এটা পালন বেশ লাভজনক। বাণিজ্যিকভাবে এমন লাভজনক তিতির খামার গড়ে তুলেছেন চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদাহ ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের ইউনুসের স্ত্রী শুভারণ খাতুন।
ইউটিউবে দেখে তিনি এ পাখি পালন শুরু করেন। শুভারণ খাতুনের তিতির খামার দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। এ নারী উদ্যোক্তার খামারে ৩০০ তিতির আছে। নিজ বাড়িতে তিতিরের বাণিজ্যিক খামার গড়ে তুলে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি।
শুভারণ খাতুন বলছেন, ‘রোগবালাই কম এবং অল্প সময়ে তিতিরগুলো বড় হয়। সরকারি সহযোগিতা পেলে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করে এটি ব্যাপক পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। এতে ডিম ও মাংসের চাহিদাও পূরণ হবে।’
তিতিরের খামার পরিদর্শন করে জানা যায়, ৭ মাস আগে প্রায় সাড়ে তিনশ পিস তিতির কিনে গড়ে তোলেন খামার। ৭ মাসে তিতিরের পেছনে খরচ করেছেন কয়েক লাখ টাকা। খামারের তিতির দেখতে ও কিনতে দূর-দূরান্ত থেকে উদ্যোক্তা ও ক্রেতারা আসছেন। ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা তৈরি করে বাজারে বিক্রির জন্য এরই মধ্যে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার মেশিন কিনেছেন তিনি। ফলে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনের পর প্রতিটি বাচ্চা ভালো দামে বিক্রি হবে বলে আশা করছেন এ নারী উদ্যোক্তা।
একই এলাকার লিজন শেখ বলেন, ‘প্রথমে ৫-৭ পিস তিতির এই নারী শখের বশে কিনেছিলেন। এখন তার খামারে প্রায় সাড়ে তিনশ তিতির আছে। আমরা চাই শুভারণ খাতুন এটি পালনে সফল নারী উদ্যোক্তা হোন। আমার এলাকাসহ বিশ্বের মানুষ তাকে চিনুক।’
পার্শ্ববর্তী কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন থেকে খামার দেখতে আসা যুবক মেহেদী হাসান মিলন বলেন, ‘শুভারণ খাতুন খামার গড়ে তুলেছেন। আমরা সেটি দেখতে এসেছি। তিতিরগুলো ডিম দেওয়া শুরু করেছে। প্রতিদিন আমার মতো অনেক মানুষ এ খামার দেখতে আসে। আমরা চাই, খামার দেখে আরও উদ্যোক্তা তৈরি হোক এবং মানুষ স্বাবলম্বী হোক।’
আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানি পান করে যে পাখি
প্রতিবেশী সোফিয়া বেগম বলেন, ‘আমার বাড়ির পাশে শুভারণ এগুলো পালন করছেন। একটু শব্দ হয়। তাছাড়া কোনো অসুবিধা হয় না। অনেক মানুষ দেখতে আসে। আমরা সবাই শুভারণের মতো এগুলো পালন করে সফল হবো।’