প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এসময় মৎস্য অধিদপ্তরের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ইলিশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রম বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মেঘনা নদী। আর এই নদীর ২২ কিলোমিটার এলাকাকে ধরা হয় ইলিশের অভয়াশ্রম। যা ‘ইলিশ প্রজননের হটস্পট’ নামে পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জের মেঘনা নদীর ২২ কিলোমিটার এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিনরাত দেদারসে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। আবার তা পার্শ্ববর্তী বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রিও করছেন। আর এসব কাজে বাধা দিতে গেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের লোকদের ওপর হামলা যেন নিয়মিত ঘটনা।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ছিল নিষেধাজ্ঞার ১১তম দিন। এই ১১ দিনে হিজলা উপজেলায় মেঘনা নদীতে দুই দফা হামলার শিকার হয়েছে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সবশেষ শুক্রবার রাতে গৌরবদী ইউনিয়ন সংলগ্ন ওরাকুল এলাকায় অভিযানে গিয়ে হামলার শিকার হন ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক মো. এমদাদুল্লাহসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। শনিবার বিকেলে র্যাবসহ একই স্থানে গেলে ফের হামলার মুখে পড়েন তারা। সেসময় মৎস্য কর্মকর্তাদের বহনকারী স্পিডবোটও ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ১১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে এ ঘটনায় হিজলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও নেছার উদ্দিন বলেন, বিশাল মেঘনায় পাহারা দিতে প্রশাসনের জলযান ও জনবল কিছুই নেই। অভিযানে যেতে যে ট্রলার নেওয়া হয়, তার মাঝিই জেলেদের সোর্স থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, একটি বড় চক্র অবৈধভাবে ইলিশ শিকার করছে। চক্রটির অপতৎপরতা বন্ধে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে। তবে এসব জেলেরা এখনো সক্রিয় আছেন। অভিযান চালাতে গিয়ে গত কয়েক বছরের মতো এবারো জেলেদের হামলার ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি উদ্বেগের, তারপরও অভিযান অব্যাহত আছে। চক্রের কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।