প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে আবারও ইলিশ মাছ ধরা শুরু হয়েছে। জাল নৌকা নিয়ে রাতে নদীতে মাছ শিকারের জন্যে নেমে পড়েছেন জেলেরা। এদিকে নিষিদ্ধ সময়ে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় মাছ শিকারের অপরাধে ২২ দিনে ৩ শতাধিক জেলেকে আটক করেছে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স।
বহরিয়া এলাকার জেলে শাহজাহান গাজী বলেন, ইলিশ আমাদের সম্পদ। প্রকৃত জেলেরা কখনও মা ইলিশ শিকার করে না। আমরা এই ২২ দিন জাল ও নৌকা মেরামত করেছি। এখন নদীতে নামছি। ইলিশ পেতেও পারি, নাও পেতে পারি।
একই এলাকার জেলে আহসান হাবিব বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের এলাকায় জেলেদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুব কম সংখ্যক জেলেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করেছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী জানান, ১৩ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২১ দিন মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় দিন ও রাতে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স ৬০২টি অভিযান পরিচালনা করে। এসব অভিযানে গ্রেপ্তার হয় ২০০ জেলে। তাদের মধ্যে ১৫৮ জেলেকে টাস্কফোর্সে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন এবং ৪২ জেলেকে ২ লাখ ২৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া জব্দ করা হয় ২ দশমিক ৭৩১ টন ইলিশ, সাড়ে ১৭ লাখ মিটার কারেন্ট জাল। এসব ঘটনায় মামলা হয় ২৩৯টি। জব্দ করা মাছ বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তালিকাভুক্ত জেলেদের সরকারিভাবে চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবার অভিযান ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি, আগামী দিনে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচ এম ইকবাল বলেন, টাস্কফোর্সের সহযোগিতায় নৌ পুলিশ ২১ দিনে শতাধিক জেলেকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য দেশের কয়েকটি অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, বিক্রি ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
সূত্র : সমকাল