কুড়িগ্রামে শীতকালীন সবজি আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। গত বছরে দাম ভালো পাওয়ায় এবছর চরাঞ্চলগুলোর কৃষকরাও ঝুঁকেছেন আলু চাষে। এবছর কুড়িগ্রামে ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অফিস। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা এবার লাভবান হবে আশা করছেন প্রতিষ্ঠানটি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার কুড়িগ্রাম সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী, উলিপুর, রাজারহাটসহ অনান্য উপজেলার চরাঞ্চল, পতিত ও আবাদি জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হচ্ছে। রোমানা, এস্টেরিক, কার্টিনাল, উফশি, সানসাইন ছাড়াও দেশীয় জাতের আলু চাষ হচ্ছে। এ মৌসুমে জেলায় প্রায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের মাষ্টারহাট ধরলা নদীর চরে কৃষকরা আগাম আলু চাষ করছেন। জমি তৈরি, আলু বীজ রোপণ, সার প্রয়োগে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় আলু চাষে সময় কম ও লাভ বেশি। মাত্র ৫৫-৬০ দিনে মধ্যে আলু উত্তোলন করে ভূট্টা, সরিষা সহ অন্যান্য ফসল চাষ করবেন বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
আলু চাষি মোঃ নুর ইসলাম বলেন, ‘বন্যার ঘাটতি পুষিয়ে নিতে এবছর চরাঞ্চলে আলু চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। আমি ৫ বিঘা জমিতে জাতের আলু চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হবে। পরিচর্যার ঘাটতি না থাকলে আলুর ফলন ভালো হবে। সে অনুযায়ী বিঘা প্রতি লাখ টাকা বিক্রির আশা করছি।’
আলু চাষি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘প্রায় ১৮ একর জমি বর্গা নিয়ে আলু রোপণ করছি। কিন্তু এবছর আলুর বীজ, সার, কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় আলু চাষে খরচ একটু বেশি পড়বে। তবে আবহাওয়া ও বাজার মূল্য যদি ভালো থাকে তবে লাভের আশা করছি।’
কুড়িগ্রাম সেকেন্দার কোল্ড স্টোরের মালিক মোঃ সেকেন্দার আলী বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবছর আলু চাষিদের আলু চাষে আগ্রহ বেড়েছে। সে তুলনায় আলু বীজের যোগান কম। চাহিদার সঙ্গে বীজ সংরক্ষণ কম থাকায় আলু চাষিদের বীজ নিয়ে সংকট হতে পারে বলে জানান তিনি।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। আবহাওয়া অনুকূল ও বাজারদার ভালো থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।’