কুমিল্লা,০৭.১১.২০২৪ খ্রি.
আমাদের দেশে কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিকাশের জন্য উদ্যোক্তা হিসেবে তরুণদের সম্পৃক্ততা বাড়ছে। এ খাতে উদ্যোক্তারা অনেক নতুন ধারণা ও উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন। ঠিক এমনই এক তরুণ উদ্যোক্তা মো. জনি। কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার ঊনাইসা গ্রামের বাসিন্দা। যিনি মাত্র ৩ লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে গরুর খামার শুরু করেছেন এবং বিশেষ করে ঈদকেন্দ্রিক গরু বিক্রয়ের পরিকল্পনা করেছেন। তার লক্ষ্য হচ্ছে, প্রতিটি ঈদে গরু বিক্রি করে লাভের মুখ দেখা।
ব্যবসার প্রাথমিক পরিকল্পনা এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো ছোট পুঁজিতে একটি গরুর খামার স্থাপন করা এবং ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কোরবানির জন্য গরু প্রস্তুত করা। যেহেতু কোরবানি ঈদে গরুর চাহিদা বেশি থাকে, তাই তিনি গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে বাজারজাত করার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রথমে তিনি ৬ টি ছোট গরু কিনেছেন, যাতে সেগুলোকে ভালোভাবে লালন-পালন করে মোটাতাজা করতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে খাবার ও চিকিৎসা বাবদ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
খামারের মূল চালিকা শক্তি হলো নিয়মিত পরিচর্যা ও খাদ্যের সঠিক যোগান। খাদ্য হিসেবে ঘাস, খড় ও ফিড খাবার ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে ঈদের আগে গরুর খাবার ও পরিচর্যায় বিশেষ মনোযোগ দেয়া হয়, যাতে গরু দ্রুত মোটাতাজা হয়। তরুণ উদ্যোক্তা জনি খামারে গরুর কোন প্রকার সমস্যা দেখা দিলে উপজেলা ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান, যাতে গরুগুলোর কোনো রোগবালাই না হয় এবং তারা সুস্থ থাকে।
ঈদুল আযহার সময় কোরবানির জন্য গরুর চাহিদা ব্যাপক থাকে। এটি উপলব্ধি করে তিনি গরু মোটাতাজা করে ভালো দামে বিক্রির পরিকল্পনা করেছেন। বাজারের চাহিদা অনুসারে, একটি গরু ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে আমাদের জানান।
একটি ঈদ মৌসুমে সবগুলো গরু বিক্রি করতে পারলে তার মোট আয় হতে পারে প্রায় ৫-৬ লক্ষ টাকা, যার মধ্যে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হবে প্রায় ২ লক্ষ টাকা।
খামার পরিচালনায় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকে, যেমন – গরুর রোগবালাই, খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং বাজারের প্রতিযোগিতা। তবে সঠিক পরিচর্যা এবং খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা সম্ভব। এছাড়া ঈদুল আযহা সামনে রেখে গরুর চাহিদা বাড়ে এবং লাভের সম্ভাবনাও বেশি থাকে।
মাত্র ৩ লক্ষ টাকা পুঁজি নিয়ে তরুণ এই উদ্যোক্তা সফলভাবে গরুর খামার স্থাপন করেছেন এবং ঈদের বাজার লক্ষ্য করে লাভজনক ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি এই উদ্যোগটিকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন বলে মনে করেন।
প্রশিক্ষণের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন নি, তবে সুযোগ পেলে তিনি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে খামার সর্ম্পকে জ্ঞান অর্জন করে ভালো ভাবে তার খামারকে পরিচালনা করতে পারবেন বলে মনে কররেন।
সবশেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর থেকে তাকে প্রাণিসম্পদ বিষয়ক বিভিন্ন লিফলেট প্রদান করা হয় এসাথে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের পরিচিতি দেয়া হয় । পাশাপাশি “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য ভান্ডার”“এ্যাপস” “নিউজ পোর্টাল”ও “পেইজ ” সম্পর্কে ও অবহিত করা হয়।
প্রতিবেদনকারী :
সুরাইয়া আক্তার
কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর
আঞ্চলিক অফিস, কুমিল্লা