৯
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন অভিযোগ করে বলেছেন, সিন্ডিকেট করে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণ খামারিদের কাছ থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতিটি মুরগির বাচ্চায় ৩০ টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছে। এর মাধ্যমে গত ৬০ দিনে (দুই মাস) কম্পানিগুলো মুরগির বাচ্চায় অতিরিক্ত মুনাফা করেছে ৫৪০ কোটি টাকা।
প্রতিটি মুরগির বাচ্চা ওই দিন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও পরের দিন (১৬ সেপ্টেম্বর) থেকে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়াতে থাকে কম্পানিগুলো। তারা এসএমএসের মাধ্যমে এক দিনের বাচ্চা ৫৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করে। আবার কোনো কোনো করপোরেট প্রতিষ্ঠান ব্রয়লার, সোনালি, লেয়ার মুরগির বাচ্চা ৫৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি করছে। সব ধরনের মিলিয়ে প্রতিদিন ৩০ লাখ মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয় দেশে।
এমন পরিস্থিতিতে শুধু খামারিরাই নন, দেশের ডিম ও মুরগির বাজারের স্থিতিশীলতাও নষ্ট হচ্ছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করলেও মুরগির বাচ্চার ক্ষেত্রে কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এর সুযোগ নিয়ে করপোরেট কম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে মুরগির বাচ্চার দাম অনেক বাড়িয়েছে। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা নেওয়া হচ্ছে, যা সাধারণ খামারিদের জন্য একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এতে দেশের পোলট্রিশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পোলট্রি খাত বাঁচাতে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন উল্লেখ করে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, সরকারকে মুরগির বাচ্চা ও ফিডের বাজারে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কৃত্রিম সংকট রোধে নিয়মিত নজরদারি চালাতে হবে। মুরগির বাচ্চা ও ফিডের জন্য সুনির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।মুরগির বাচ্চা ও ফিডের চাহিদা এবং সরবরাহ পর্যবেক্ষণ করতে একটি নির্দিষ্ট কমিটি গঠন করতে হবে। খামারিদের উৎপাদন খরচ কমাতে প্রয়োজনীয় উপকরণ সঠিক মূল্যে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র খামারিদের টিকিয়ে রাখতে আর্থিক প্রণোদনা এবং সহজ শর্তে ঋণ দেওয়াও জরুরি।
নিজস্ব প্রতিবেদক
সুমন হাওলাদার বলেন, ‘গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিম ও মুরগির বাচ্চার দাম সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল।
সে হিসাবে কম্পানিগুলো প্রতিটি মুরগির বাচ্চায় গড়ে ৩০ টাকা বেশি মুনাফা করছে। এভাবে প্রতিদিন ৯ কোটি টাকা করে গত ৬০ দিনে শুধু মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে পকেটে ভরেছে ৫৪০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের পোলট্রি খাত বর্তমানে এক গভীর সংকটের মুখে। ফিড (খাবার) ও মুরগির বাচ্চার বাজারে করপোরেট সিন্ডিকেটের কারণে প্রান্তিক খামারিরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
সিন্ডিকেটের প্রভাব সম্পর্কে সুমন হাওলাদার বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে খামারিদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। এতে প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্য লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং অনেকেই পোলট্রি খাত থেকে সরে যাচ্ছেন। আর করপোরেট কম্পানিগুলো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থির করে তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি প্রান্তিক খামারি কমে যায়, তাহলে ডিম ও মুরগির সরবরাহও কমে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা সরাসরি ভোক্তাদের জন্য বেশ খরচের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
Source: Daily Kalerkontho.