জুমবাংলা ডেস্ক : প্রবেশ পথ অতিক্রম করতেই গাছের উপর ছোট্ট একটি ঘর। গাছের ছায়ায় বিশ্রাম করছে কয়েকটি বিদেশী কুকুর। আশেপাশে ক্যাকটাসসহ কয়েকটি শোভাবর্ধনকারী গাছ, ফুল-ফলে ভরপুর পাশে কয়েকটি পুকুরে বিভিন্ন রঙের মাছ। এ যেন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এটা কোন পার্ক নয় , সাইফুল ইসলাম মিনুর খামার।
ঢাকার মানিকগঞ্জে বেড়ে উঠা মিনু, ঢাকা সিটি কলেজ থেকে বিকম পাশ করে গড়ে তুলেছিলেন ব্যবসা। পরে ১৯৯৫ সালে যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি পেতে মন চাইলো তার। যেই ইচ্ছা সেই কাজ। একজন পরিচিতজনের সাথে ঘুরতে য়ান ময়মনসিংহের ত্রিশালে। গ্রামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ত্রিশালের বলিপাড়া ইউনিয়নের ধলা ও গফরগাঁও উপজেলার লক্ষণপুর গ্রাসে বসতি গড়ে তুলেন তিনি।
এখন ধলা গ্রামের যেদিকেই চোখ যায়, যতদুর যায়, শুধু পুকুর আর পুকুর। এখানের ৮০ ভাগ মানুষই হ্যাচারি অথবা নানা প্রজাতির মাছের চাষের সঙ্গে জড়িত। ফলে অল্পসময়ের মধ্যে এ অঞ্চলের রেণু পোনা ব্যবসায়িদের সঙ্গে পরিচয় ঘটে মিনুর। বসে না থেকে শখের বসে তারও ইচ্ছে জাগে মাছের রেণুর চাষ করবেন। তবে সেটা সহজলভ্য দেশীয় মাছ নয়, শৌখিন বিদেশী জাতের রঙিন মাছের।
১৬ বছর আগে ২০০৭ সালে জমি ভাড়া নিয়ে ছোট পরিসরে রঙিন মাছের চাষ শুরু করেন। শুরুতে জাপান থেকে ছয়টি কই কার্প জাতীয় মাছের পোনা সংগ্রহ করে রেণু উৎপাদন করেন। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শখ থেকে বাণিজ্যিকভাবে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে প্রায় ২৪ প্রজাতির মাছ এনে রঙিন মাছের চাষ শুরু করেন মিনু। এতে অল্পসময়ে সাফল্যের মুখ দেখেন তিনি। বর্তমানে তার রয়েছে, ৩০ বিঘার ‘আল-আমিন এসোরটেড হ্যাচারি অ্যান্ড ফিশারিজ’ নামক খামারে রয়েছে ২৬টি পুকুর।
ধলা অঞ্চলে তিনিই প্রথম রঙিন মাছ চাষি হওয়ায়, এলাকায় মিনু ‘রঙিন মাছ চাষি’ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। মিনুর উৎপাদিত রঙিন মাছ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল চাড়িয়ে, যেতো দেশের বাইরেও। এখন শুধু মিনু নন, তার কাছথেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রঙিন মাছ উৎপাদন করছেন ধলা গ্রামের অধিকাংশ হ্যাচারি মালিকরা।