কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার এক সাধারণ পরিবারে জন্ম মো. শাকিলের। গ্রামের পরিবেশ বেড়ে উঠেছেন তিনি। শাকিলের জীবন সহজ-সরল হলেও পরিশ্রমের কোনো কমতি নেই। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর পরিবারিক কারণে তার শিক্ষাজীবন থেমে যায়। কিন্তু জীবন থেমে থাকেনি।
দুই বছর আগে শাকিল একটি নতুন উদ্যোগ নেন—গরু পালন। প্রথমে খুব ছোট পরিসরে শুরু করলেও এখন তার খামারটি এলাকায় বেশ পরিচিত। খামারের মূল উদ্দেশ্য হলো ঈদুল আজহার সময় কোরবানির জন্য স্বাস্থ্যবান গরু প্রস্তুত করা।
শাকিলের এই খামার শুধু গরু পালনেই সীমাবদ্ধ নয়, পাশাপাশি তিনি মহিষও পালন করেন। শাকিল প্রথমে খামার শুরু করেন মাত্র দুটি গরু দিয়ে। সেই সময় তার তেমন অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে গ্রামের প্রবীণ গরু পালকদের সঙ্গে কথা বলে এবং প্রাণিসম্পদ অফিসের পরামর্শ নিয়ে তিনি ধীরে ধীরে খামারের কাজ শিখতে শুরু করেন।
তার গরুর খাবার তালিকায় আছে চাউলের কুড়া, চাউল ভাঙা, ভুষি, সয়াবিন, খড়, এবং সবুজ ঘাস। শাকিলের বিশেষ লক্ষ্য ছিল তার গরু এবং মহিষের সুষম খাদ্য নিশ্চিত করা, যাতে তারা দ্রুত স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে।
প্রতিদিন ভোরে উঠে তিনি খামারে যান। খামারের চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে গরু-মহিষের শরীরচর্চা পর্যন্ত সব কাজই তিনি নিজ হাতে করেন। সবুজ ঘাস চাষ করতেও স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা নেয়। এটি খামারের জন্য খরচ কমিয়েছে এবং একইসঙ্গে প্রাণিদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যের উৎস তৈরি করেছে।
খামার চালাতে গিয়ে শাকিল বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। যেমন, কিছু সময় গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। শুরুতে তিনি অনেক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তেন, কারণ তার পক্ষে সঠিক চিকিৎসা করা কঠিন ছিল। কিন্তু শাকিল বুঝতে পারেন যে, নিয়মিত প্রাণি চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে এই সমস্যা সহজেই সমাধান করা যায়। এখন তার গরু বা মহিষ অসুস্থ হলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করেন। অফিসের কর্মকর্তারা তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং পরামর্শ দেন।
শাকিলের খামার মূলত ঈদুল আজহা কেন্দ্রিক। এই সময় কোরবানির জন্য গরু এবং মহিষের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। শাকিল বছরের শুরু থেকেই এই সময়কে লক্ষ্য রেখে কাজ করেন।
বর্তমানে শাকিলের খামারে ছয়টি গরু এবং দুইটি মহিষ রয়েছে। তার ইচ্ছা ভবিষ্যতে খামারটি আরও বড় করার।
সবশেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর থেকে তাকে প্রাণিসম্পদ বিষয়ক বিভিন্ন লিফলেট প্রদান করা হয় এসাথে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের পরিচিতি দেয়া হয় । পাশাপাশি “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য ভান্ডার”“এ্যাপস” “নিউজ পোর্টাল”ও “পেইজ ” সম্পর্কে ও অবহিত করা হয়।
প্রতিবেদনকারী :
সুরাইয়া আক্তার
কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর
আঞ্চলিক অফিস, কুমিল্লা