০৯.১২.২০২৪ খ্রি.
কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার দিশাবন গ্রামের এক সাধারণ মানুষ মো. ইকবাল হোসেন। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভাব থাকলেও তিনি তার অধ্যবসায়, পরিশ্রম, এবং দূরদর্শিতার মাধ্যমে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন।পরিবারে তিনি, তার মা, স্ত্রী এবং দুই ছেলেমেয়ে মিলিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি ছোট্ট সংসার।
জীবিকার জন্য প্রায় এক দশক ধরে তিনি কুমিল্লা ইপিজেডে শ্রমিকের কাজ করেছেন। ইপিজেডের চাকরি থেকে অল্প অল্প করে টাকা সঞ্চয় করার পর ইকবালের মনে একটি চিন্তার জন্ম হয়। নিজের পায়ের তলায় মাটি শক্ত করার জন্য প্রয়োজন একটি বিকল্প আয়ের উৎস। অনেক ভেবে তিনি গরু পালনের সিদ্ধান্ত নেন।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চারটি গরু কিনে তিনি শুরু করেন তার খামারের যাত্রা। এটি ছিল তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। প্রথমে চারটি গরু নিয়ে কাজ শুরু করলেও ধীরে ধীরে তার খামারের আকার বাড়তে থাকে। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ১২টি গরু। তার খামারের জায়গা খুবই ছোট হওয়ায় তিনি পাশের একটি জমি লিজ নিয়ে খামারের নতুন অবকাঠামো তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন। এতে খামারে আরও গরু রাখার সুযোগ হবে এবং আয়ও বাড়বে।
মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এই খামার পরিচালনায় তার মা এবং স্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। গরুর যত্ন নেওয়া থেকে শুরু করে তাদের খাবার খাওয়ানো সহ সব কাজেই তারা ইকবালকে সাহায্য করেন। পারিবারিক এই সমর্থন তাকে আরও উৎসাহিত করেছে।
ইকবাল তার গরুর জন্য একটি পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা তৈরি করেছেন। এতে রয়েছে ভাতের মাড়, খৈল, ভূষি, চাউলের কুঁড়া, সয়াবিন, খড়, এবং সবুজ ঘাস। তিনি নিজেই ২০ শতক জমিতে নেপিয়ার এবং নেপিয়ার পাকচং ঘাস চাষ করেন, যা তার খামারের জন্য একধরনের টেকসই খাদ্য উৎস। সবুজ ঘাস গরুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে বলে আমাদের বলেন।
তিনি বলেন, কখনোই গরু পালনের ওপর আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ নিতে পারেননি। তবে তিনি মনে করেন, প্রশিক্ষণ তার জন্য খুবই উপকারী হবে। যেকোনো সমস্যার সমাধানে দক্ষতা অর্জনের জন্য তিনি ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহী।
গরু অসুস্থ হলে ইকবাল কখনো স্থানীয় প্রাণি চিকিৎসকের কাছে যান, আবার কখনো উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে সাহায্য নেন। এভাবে তিনি তার গরুগুলোর সুস্থতা নিশ্চিত করেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সর্ম্পকে মো. ইকবাল হোসেন বলেন, তার খামারকে আরও বড় করে তুলতে চান। তার খামারের আয় দিয়ে তিনি তার সন্তানদের ভালো শিক্ষার ব্যবস্থা করতে চান। পাশাপাশি এলাকার অন্যদেরও গরু পালনে উৎসাহিত করতে চান।
সবশেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর থেকে তাকে প্রাণিসম্পদ বিষয়ক বিভিন্ন লিফলেট প্রদান করা হয় এসাথে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের পরিচিতি দেয়া হয় । পাশাপাশি “মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য ভান্ডার”“এ্যাপস” “নিউজ পোর্টাল”ও “পেইজ ” সম্পর্কে ও অবহিত করা হয়।
প্রতিবেদনকারী :
সুরাইয়া আক্তার
কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর
আঞ্চলিক অফিস, কুমিল্লা