ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ (১২ ডিসেম্বর):
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালেয়র উপেদষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেন, ‘‘গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে আহতদের অঙ্গহানির জন্য তাদের যারা তিরস্কার বা কটু কথা দ্বারা মানুষিক আঘাত দেয় তারা মানুষের মধ্যে পড়েনা। কেবিনেট মিটিংয়ে আহত ও শহীদ পরিবারে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি মানুষিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার, বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আঁচল ফাউন্ডেশন আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী মানুষিক স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আরো বলেন, আমরা দেখেছি আন্দোলনের পর থেকে অনেক মা বাবারাও ট্রমাটাইজড। অনেক পরিবারের মেয়েরা আন্দোলনে ট্রমাটাইজড হয়ে লোক ভয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন না এই ভয়ে যে, যদি মানুষ জেনে যায় তাহলে তাদের বিয়ে দিতে সমস্যা হতে পারে।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে আছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আহতরা আমাদের শ্রদ্ধার, তাদের আমরা অণুকরন করবো। তারা জীবন বাজি রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এখনও অনেক আহতরা শহীদে পরিণত হচ্ছে, তাদের তালিকা বাড়ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালেয়র বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে আহতরা যে পক্ষের হোক তারা চিকিৎসা পাবেন। তবে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে আহতদের অর্ধেককে এখনো সহায়তার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে সব গুছিয়ে নিতে। আমরা নিশ্চিত করছি তাদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও সার্বিক প্রয়োজনে সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে। যা তাদের মানুষিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক হবে।”
বক্তারা বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সহিংসতার শিকার কিংবা প্রত্যক্ষদর্শী উভয়েরই নানা ধরনের মানুষিক সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি আছে। এই সময়ে তাদের মানুষিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অভিভাবকসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে। তারা সুস্থ সমাজ ও সুস্হ বাংলাদেশ নির্মাণে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের মধ্যে মানুষিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেন তারা।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
আরো বক্তৃতা করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্হার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. এম. মুজাহেরুল হক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. কামরুল হাসান, বিএসএমএমইউ এর প্রফেসর ড. নাহিদ মাহজাবিন মোর্শেদ, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ড. সোনিয়া জেড খান, চলচ্চিত্র নির্মাতা রেদোয়ান রনি, বাংলাদেশ চাইল্ড হেল্পলাইন-১০৯৮ এর ম্যানেজার মো: মোহাইমেন চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো: নওশাদ জামির, আহত ছাত্র সালমান হোসেন প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ।