নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার শুঁটকিপল্লীতে বেড়েছে ব্যস্ততা। মিঠা পানির দেশি প্রজাতি মাছের শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন হালতি বিল এলাকার মৎস্যজীবীরা। মৎস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত বৃহৎ হালতি বিলসহ এলাকার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ের পানি কমতে শুরু করায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় অনেক মাছ। হালতি বিলকে কেন্দ্র করে এর আশপাশে গড়ে উঠেছে তিন-চারটি শুঁটকিপল্লী।
এসব শুঁটকিপল্লীতে মাছ শুকানোর কাজে বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার হালতি, দুর্লভপুর, মাধনগরের পরিত্যক্ত জায়গায় গড়ে উঠেছে প্রায় তিন-চারটি শুঁটকিপল্লী। হালতি বিলসহ আশপাশের নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ে জেলেদের জালে ধরা পড়া ছোট-বড় নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে শুঁটকিপল্লীতে সরবরাহ করছেন স্থানীয় জেলেরা। শুঁটকিপল্লীর নারী শ্রমিকরা সেসব মাছ পানি দিয়ে পরিষ্কার করছেন আর পুরুষ শ্রমিকরা সেগুলো বাঁশের উঁচু মাচায় রোদে শুকাতে দিচ্ছেন।
শুঁটকিপল্লীর ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন ও সাইদুল প্রামানিক জানান, হালতি বিল দেশীয় প্রজাতির মাছের অভয়ারণ্য হওয়ায় এলাকায় তিন-চারটি শুঁটকিপল্লী গড়ে উঠেছে। এতে শ্রমিকদের কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, আশ্বিন থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত এই ছয় মাস শুঁটকি শুকানোর কাজ চলে। প্রতি তিন-চার মণ কাঁচা মাছ শুকালে এক মণ শুঁটকি তৈরি হয়।
তারা আরো জানান, এক মণ শুঁটকি মাছ প্রকারভেদে বাজারে আট হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এই মাছ শুকানোর কাজে শুধু লবণ ব্যবহার করা হয়। এতে অন্য কোনো মেডিসিন দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘সহায়তার জন্য আমাদের সরকারিভাবে সহজ শর্তে ঋণ দিলে এ খাত আরো বেগবান হবে। এখানে বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে।
এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় প্রায় ৫০ টন শুঁটকি উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মানসম্মত শুঁটকি প্রস্তুত করতে শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’