বাক্সে মৌমাছি পালন করে মাসে লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন রাজবাড়ীর মৌ-চাষি মো. মাসুদ। পড়াশোনার পাশাপাশি বছরের ৮ মাস ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় জেলার বিভিন্ন স্থানে বাক্স বসিয়ে মৌমাছি পালন করে মধু আহরণ করেন তিনি। এতে একদিকে যেমন মধু আহরণ করে লাভবান হচ্ছেন; তেমনই মৌমাছির মাধ্যমে ফসলের পরাগায়ন ঘটায় উৎপাদন বেড়ে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
মৌ-বাক্স স্থাপনের ১২-১৫ দিনের মধ্যেই মধু সংগ্রহ করা যায়। মৌসুমের শুরুতে সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধ ভাবে মৌ-বাক্স বসিয়ে শুরু হয় মৌমাছি পালন। এভাবে ২ মাস ধরে চলে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ। এরপর ধনিয়া, কালোজিরাসহ বিভিন্ন ফসলের মধু আহরণ করে বছরের ৮ মাস অতিবাহিত করেন। মৌ-চাষে নিজেদের থাকা-খাওয়ার খরচ ও মৌমাছির পরিচর্যা ছাড়া তেমন বাড়তি খরচ নেই। ফলে বাক্সে মৌ-চাষ একটি লাভজনক পেশা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এখন পর্যন্ত চাষ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৬৬৫ হেক্টর জমিতে। অতিবৃষ্টি ও পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় এ বছর সরিষার আবাদ কিছুটা কমেছে। জেলার রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দে সরিষার আবাদ বেশি হয়ে থাকে।
খায়রুল ইসলাম ও খন্দকার বিল্লাল নামে সরিষা চাষি বলেন, ‘মৌমাছির কারণে এবার সরিষার ফলন অনেক ভালো হবে বলে আশা করা যায়। গত বছর মৌমাছি ছিল না বিধায় ফলনও ভালো হয়নি। আমাদের পুরো মাঠেই এবার সরিষা চাষ হয়েছে। অনেকে দূর থেকে আসেন এবং ছবি তোলে। এটি দেখে ভালো লাগে।’
আলম মিয়া নামে আরেক চাষি বলেন, ‘মৌমাছি থাকায় কৃষকদের অনেক উপকার হচ্ছে। মৌমাছির কারণে সরিষার দানা পুষ্ট হবে। ভালো ফলন হবে। আগে যেটা হতো না। এ রকম প্রতি বছর হলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন। যে কারণে মৌচাষির ফোন নম্বর রেখে দিয়েছি। ফসলের সময় তাদের ডেকে আনবো ফসলের উৎপাদন বাড়াতে।’
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে পিছিয়েছে সরিষা চাষ। যে কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। তবে রবি মৌসুমের অন্য ফসলের চাষ বেড়েছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের পাশে আছে। এ মৌসুমে মৌ-চাষের মাধ্যমে পরাগায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি স্থানে মাঠের পাশে মৌ-চাষিরা মৌ-বাক্স বসিয়েছেন।’