৩১\১২\২০২৪ খ্রি.
ঢাকা জেলা মোহাম্মাদপুর থানার বসিলা তে সফল এক খামারির নাম হান্নান সরকার ৫টি গরু থেকে বর্তমানে তার ওই খামারে গরুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩০টি সাথে ৬০ টি বাছুর রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি গাভী রয়েছে। বর্তমানে সেগুলোর মধ্যে ১৬টি গাভী দুধ দিচ্ছে। প্রতিদিন ওই ১৬টি গাভী থেকে কমপক্ষে ৩০০ কেজি দুধ সংগ্রহ করছেন তিনি। প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুবার গোয়াল গাভীগুলো দহন করে দুধ সংগ্রহ করে থাকেন। পাইকারিভাবে গোয়ালারা প্রতি কেজি ২০ টাকা হারে দুধ কিনে থাকেন। ১৪ বছর ধরে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন স্বপ্নের গরুর খামার। তিনি ২০১০ সালে নেপালি জাতের মাত্র পাঁচটি গরু নিয়ে শুরু করে ছোট্ট একটি গরুর খামার।
এখন শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন তিনি। পরিশ্রমই তাকে সাফল্যের সুবাতাস দিয়েছে। বর্তমানে বছরে আয়ের পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা।
তিনি বলেন, বর্তমানে তার খামারে ১৬ টি দুধের গাভী রয়েছে। এসব গাভী থেকে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ লিটার পর্যন্ত দুধ পেয়ে থাকেন। প্রতিদিন বিভিন্ন দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানি ও মিষ্টির দোকানে এসব দুধ সরবরাহ করে থাকেন।
বর্তমানে তার খামারে ১৬টি গাভি, ১৮০টি ষাঁড় ও ২০টি বাছুর রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। গরুর ডেইরি খামারের পাশাপাশি রয়েছে একটি ছাগলের খামার। যেখানে দেশি ও উন্নত জাতের প্রায় ১২৫টি ছাগল রয়েছে।
বর্তমানে তার খামারে কাজ করছেন ৪৫ জন শ্রমিক। তাদের ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিচ্ছেন। শ্রমিকরা জানান, এখানে কাজ করতে পেরে তারা অনেক খুশি।
খামারি জানান, প্রত্যেক বছরে খরচ বাদ দিয়ে এক থেকে দেড় কোটি টাকা আয় হয়ে থাকে। গরুর খাদ্যের দাম ও দুধের বাজার ওঠা-নামার সাথে আয়ও ওঠা-নামা করে থাকে।
তিনি আরও জানান, তার খামারের সফলতার পেছনে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সহযোগিতা রয়েছে। খামার করার পর থেকে আজ পর্যন্ত বড় ধরনের তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।
হান্নান সরকার মনে করেন, বাংলাদেশে বেকারত্ব দূর করতে অবলম্বন হতে পারে গরুর খামার। সরকারের সহযোগিতা পাওয়া গেলে এ খাতে ৩০ শতাংশ বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।
তাদ এলাকাবাসীরা জানান, আত্মনির্ভরশীল হান্নান সরকার এখন এলাকাবাসী ও পরিবারের কাছে শ্রদ্ধা-ভালোবাসার মানুষ। তাকে অনুসরণ করে এলাকায় এখন অনেকেই গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগির খামার করছেন। বিশেষ করে এলাকার বেকার যুবকরা হান্নান সরকারের সাফল্যে স্বাবলম্বী হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
পরিশেষে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, আঞ্চলিক অফিস, ঢাকা থেকে হান্নান সরকারকে ইউএমএস তৈরির সঠিক পদ্ধতিসহ, গরু পালনের সুষ্টু পরামর্শসহ, গাভী পালন, সবুজ ঘাস সংরক্ষণ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, গবাদি পশুর সুষম খাদ্য তৈরির উপকরণ ও খাওয়ানের নিয়মাবলি, উন্নতজাতের ঘাসচাষ বিষয়ক লিফলেট ও ফোল্ডার প্রদান করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, আঞ্চলিক অফিস, ঢাকা থেকে ২জন কর্মচারী খামার পরিদর্শন করার জন্য ঢাকা জেলা মোহাম্মাদপুর থানার বসিলা তে একটি গবাদিপশুর খামার পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে খামারিকে পরামর্শ প্রদান করেন মো. শাহরিয়ার হোসেন, কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক এবং খামারির ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন মো. ফারিহম রহমান রনি, অডিও ভিজ্যুয়াল ইউনিট অপারেটর।