গাইবান্ধার চারপাশে বিস্তৃত তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রসহ বেশ কিছু নদ-নদী রয়েছে। এসব নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য বালুচর। বালুচরে বসবাস করছে লক্ষাধিক মানুষ। তার মধ্যে অধিকাংশ পরিবার দরিদ্র। সেই চরের অনেক মানুষ ফসল উৎপদন করলেও বেশিরভাগ পরিবার গরু পালনের ওপর নির্ভরশীল। চারাঞ্চল ঘুরে বাড়ি বাড়ি গরু পালনের দৃশ্য দেখা যায়। গৃহস্থালীরা গরুকে বালুচরে গজে উঠা সবুজ ঘাস খাওয়াচ্ছেন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই এসব গরু নিয়ে ফিরছেন বাড়িতে।
চরাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই কখনো বন্যায় ভসে আবার কখনো খরায় শুকায়। তাদের প্রকৃতির নিয়ম মেনেই চলতে হয়। এভাবে যুগ যুগ ধরে নদীর সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবন কাটাচ্ছেন। চরের কতিপয় কিছু লোক তাদের নিজস্ব ভূমিতে ফসল ফলিয়ে জীবন নির্বাহ করলেও অধিকাংশ পরিবার দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছেন। অন্যের বাড়িতে শ্রম বিক্রির পাশাপাশি পালন করছেন গরু-বাছুর। চরবাসীদের এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে ৫-১০টি গরুর দেখা মেলে না। এসব গরু পালন করে জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরে অসংখ্য কাঁশবনসহ পরিত্যাক্ত ভূমি রয়েছে। যেখানে তারা তাদের গরুকে ঘাস লতা-পাতা খাওয়াতে পারেন। অল্প ব্যয়ে গরু বেড়ে উঠে। প্রতি বছর গরু বিক্রি করে লাখ টাকা আয় করেন। এখানকার প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতে ৫-১২ গরু-বাছুর রয়েছে। এই গৃহপালিত পশুই যেনো তাদের জীবনে আশির্বাদ হয়ে আছে।
রসুলপুর চরের আব্দুস ছাত্তার ব্যাপারী বলেন, তার ৯ টি গরু রয়েছে। গাভীর দুধ বিক্রি ও অন্য সব গরু মোটাতাজা করে বিক্রি করেন। গাভী থেকে প্রতি বছরই বাছুর পান। এতে ধীরে ধীরে তিনি স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।
এরেণ্ডাবাড়ি চরের বাসিন্দা সবুজ মিয়া বলেন, বাছুর সহ তার বাড়িতে মোট ১১টি গরু রয়েছে। এর মধ্যে ৫ টি গাভী। প্রতি বছর গাভীর প্রজনন থেকে গরু বাড়তে থাকে। দুধ ও গরু বিক্রি করে বছরে তিনি প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করেন। এটিই তার আয়ের প্রধান উৎস।
গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কমকর্তা মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, গবাদী পশু লালন-পালন করে আগের তুলনায় চরের মানুষদের অনেকটাই স্বচ্ছলতা ফিরেছে। তাদের আরও লাভবান ও স্বাবলম্বী করতে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
সূত্র: আধুনিক কৃষি খামার।