Lima Akter, Author at মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সংবাদ https://motshoprani.org/author/lima-akter/ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর নিউজ পোর্টাল Sun, 28 Jan 2024 09:27:47 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.5.2 https://motshoprani.org/wp-content/uploads/2024/04/color-icon.png Lima Akter, Author at মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সংবাদ https://motshoprani.org/author/lima-akter/ 32 32 সাদা বা অ্যালবিনো মহিষ পালনে দৃষ্টি কেড়েছে স্বপন https://motshoprani.org/8980/ Sun, 28 Jan 2024 09:27:47 +0000 https://motshoprani.org/?p=8980 সাদা বা অ্যালবিনো মহিষ পালনে দৃষ্টি কেড়েছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার দাসের গাঁওয়ের লুৎফর রহমান স্বপন নামে এক উদ্যমী যুবক। তিনি গড়ে তুলেছেন ৩৬০টি দেশি-বিদেশি গরু, ২৫টি দুগ্ধজাত গাভি, মহিষ, ছাগল, গাড়লসহ ৮ বিঘা আয়তনের সমন্বিত খামার।

খামারি স্বপনের খামারে আছে বিভিন্ন জাতের মহিষ, নীলি-রাভি থেকে শুরু করে মুরাহ, জাফরাবাদী, কুন্ডি এমনকি সাদা বা অ্যালবিনো মহিষ পালন করছেন তিনি। এবছর কুরবাণীর পশুর হাটে সাদা মহিষ দেখতে পাওয়া যায়। দাম চাওয়া হয়েছিল ১০ লাখ টাকা। কুরবানীর বাজারে এই জাতের মহিষের দাম ও চাহিদা মাথায় রেখে এ মহিষের পালন বৃদ্ধি পাচ্ছে। খামারিগণ গোলাপি বা সাদা রঙের এই মহিষ পালনে সম্ভাবনার কথা বলছেন।

সাদা বা গোলাপি মহিষ albino buffalo বা White Buffalo নামেই বিশ্বে পরিচিত। গবেষকেরা মনে করেন, প্রতি ১ কোটি মহিষের মধ্যে একটি সাদা মহিষের জন্ম হয়। এ সাদা মহিষের জন্মের প্রক্রিয়াটি অ্যালবিনিজমের কারণ হয়ে থাকে বলে গবেষকগণ মনে করে।

খামারি স্বপন মনে করেন তার খামারের ১২টি গোলাপি মহিষ নেটিভ আমেরিকান কোনো এক জাতের। সম্প্রতি হৃদয়ে মাটি ও মানষ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, এ জাতের মহিষ তিনি প্রথম দেখেন বছর তিনেক আগে আমেরিকার অ্যারিজোনা ভ্রমণ করতে যেয়ে। এরপর দেশে ফিরে এজাত নিয়ে গবেষনা করেন ও খামার স্থাপনের পরিকল্পনা শুরু করেন।

  • তিনি দেশের বিভিন্ন খামার ও ভারত থেকে এক এক করে ১২টি সাদা বা অ্যালবিনো মহিষ সংগ্রহ করেন। এখন দেশের অনেক মহিষ খামারে দু-একটি এমন মহিষ দেখতে পাওয়া যায়। রঙিন এ মহিষ প্রতিপালনে স্বপন এখন বাণিজ্যিক সম্ভাবনাও দেখতে পাচ্ছেন। আর সে কারনেই উদ্যোগ নিয়েছেন এই জাতের মহিষের ব্রিডিং করিয়ে এর সংখ্যা বৃদ্ধিকরণের।
]]>
গলাছিলা মুরগি পালন https://motshoprani.org/8984/ Sun, 28 Jan 2024 04:18:03 +0000 https://motshoprani.org/?p=8984 গলাছিলা মুরগি একটি পুরানো দেশি মুরগীর জাত। প্রাকৃতিকভাবে এদের গলা,ঘাড় ও ভেন্ট (প্রজননতন্ত্র) পালকবিহীন থাকে। গলাছিলা মুরগীর উদ্ভব কোথায় হয়েছিলো তা এখনো অস্পষ্ট, মনে করা হয় যে, এই জাতটি এশিয়া থেকে হাঙ্গেরিয়ানদের দ্বারা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যায় নবম শতাব্দির দিকে। এই মুরগীর জাত সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। টার্কেন, কালেনেক, ট্রান্সিলভেনিয়ান নেকেড নেক মুরগি ইত্যাদি।

আমাদের দেশে এটি প্রাচীন কাল থেকেই দেখা যায়। তবে কুমিল্লা বা ময়নামতি অঞ্চলে এদের প্রাথমিক আবাস হিসেবে ধারণা  করা হয়। বর্তমানে অনেক খামারী জাতটিকে দেশি মুরগি হিসেবে খামারে লালন-পালন করে থাকেন।

  • অনেকে এই জাতটিকে মুরগির একটি সংকর এবং টার্কি হিসেবে ভাবেন। তবে এটি সত্য নয়, বরং এগুলি খাঁটি মুরগীর জাত। বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়।

গলা ছোলা মুরগীর বৈশিষ্ট্যাবলী :

  • এদের লম্বা গলায় কোন পালক থাকে না।
  • এদের চামড়া হলুদ বা লাল রঙের হয়।
  • পালকের রং সাদা কালোর মিশ্রণ বা লাল সহ বিভিন্ন রং এর হয়।
  • এদের দেখতে ছোট আকারে টার্কি মোরগ বলে মনে হয়।
  • ওয়াটিল বেশ বড় ও লাল রঙের।
  • এদের পা মোটা ও শক্ত।
  • এই মুরগীর ডিমের খোসা সাদা।
  • ডিমে ‘তা’ দেয় এবং বাচ্চার ভালো যত্ন নেয়।
  • অন্য দেশি মুরগীর তুলনায় আগে (180 দিনে) ডিম আসে।
  • বছরে 90-120 টি ডিম দেয় এবং ডিমের ওজন 40 গ্রাম।
  • মোরগের ওজন 1.5-2.25 কেজি এবং মুরগির ওজন 1.2-1.5 কেজি।

দেশি মুরগীর খুবই কমন একটি জাত। নাম শুনেই বোঝা যায় এই মুরগির গলায় লোম বা পালক থাকে না। এদের পালকের রং কালো ও লালচে কালো হয়ে থাকে। এরা পালকহীন পা, হোলদে চামড়া ও একক ঝুটি বিশিষ্ট হয়ে থাকে।

গলাছিলা মুরগীর কানের লতি সাধারণত লাল ও সাদার সংমিশ্রণ যুক্ত হয়। এদের পায়ের রং হলুদ ও সাদা বা কালো রঙেরও হয়ে থাকে। এদের ডিমের রং হালকা বাদমী। এই মুরগি খুব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। দেশি মুরগি পালন করার ক্ষেত্রে গলািছিলা মুরগীর সকলের কাছে প্রথম পছন্দ হতে পারে।

]]>
চাঁদপুরে জাটকা রক্ষা অভিযানঃ https://motshoprani.org/6218/ Tue, 14 Mar 2023 08:53:36 +0000 https://motshoprani.org/?p=6218 ১৩ – ০২ – ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ মৎস্য অধিদপ্তর, হাইমচর, চাঁদপুর ও নীলকমল নৌপুলিশ ফাঁড়ির সম্মিলিত জাটকা রক্ষা অভিযানে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করে আনুমানিক ১.৫০ লক্ষ মিটার কারেন্টজাল ও ৫৫ কেজি ছোট সাইজের ইলিশ জব্দ করা হয়। নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ আহরণ করায় ৫ জেলেকে আটক করা হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় ২ জন জেলেকে মুচলেকা দিয়ে অভিভাবকের জিম্মায় দেয়া হয়। অপর ৩ জন জেলের বিরুদ্ধে মৎস্য আইন লঙ্ঘনের দায়ে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়। জব্দকৃত মাছ দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

]]>
শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত যে শিল্পটি দেশে সবচেয়ে বিস্তৃত তা হল পোল্ট্রি শিল্পঃ https://motshoprani.org/6227/ Mon, 13 Mar 2023 05:46:12 +0000 https://motshoprani.org/?p=6227 শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত যে শিল্পটি দেশে সবচেয়ে বিস্তৃত তা হল পোল্ট্রি শিল্প। একটি খামার শহর থেকে অনেক দূরে স্থাপিত হলেও সেখানে উৎপাদিত পণ্য চলে আসে শহরে। মেটায় ভোক্তাদের চাহিদা।  ডিম এবং ব্রয়লার পোল্ট্রি পন্যকে ঘিরে হাজার হাজার কর্ম ক্ষেত্রে তৈরি হয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ে যেমন গড়ে উঠেছে ফিড মিল, হ্যাচারি, গড়ে উঠেছে বানিজ্যিক ব্রয়লার ও লেয়ার এবং সোনালী খামার। এখানের উৎপাদিত পণ্য পরিবহন হচ্ছে দিনে রাতে বন্দর থেকে ফ্যাক্টরি-ফিডমিলসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায়। উৎপাদিত পণ্যকে ঘিরে কাজ করছে হাজার হাজার শ্রমিক। খামারে কাজ করছে নারী-পুরুষ সহ অসংখ্য মানুষ।

অন্যদিকে পোল্ট্রি প্রসেসিং, ফারদার প্রসেসিং কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আরো অনেক শিল্প। আমরা এখন স্বপ্ন দেখি আন্তর্জাতিক মানের পোল্ট্রি ও ডিম উৎপাদন করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের।

কথাগুলো বলছিলেন চিক্স এন্ড ফিডস্ লি:-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব এখলাসুল হক। তিনি বলেন, আমরা যদি, বর্তমান সময়ে বহির্বিশ্বের দিকে শুধু ডিমের দামের দিকে যদি তাকাই তাহলে দেখতে পাই কিভাবে এ ছোট একটি খাবারের জন্য মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। পেপার পত্রিকা অথবা টেলিভিশনের খবরে দেখা যায় শুধু যুক্তরাষ্ট্র জাপান সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ডিম এখন সোনার হরিণ। আমাদের এখন সময়ে এসেছে আন্তর্জাতিক মানের ডিম ও ব্রয়লার উৎপাদন করে এসব যোগান দেওয়ার।

আসন্ন পোল্ট্রি শো’তে এ ধরনের কারিগরি বিষয়গুলি টেকনিক্যাল সেমিনারের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা জানতে পারবেন এমনটাই আশা করেন জনাব এখলাসুল হক। তিন দিনব্যাপী এই মেলাটি পরিদর্শনের মাধ্যমে পোল্ট্রি শিল্প সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা । তিনি সকলকে মেলা পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।

সূত্রঃ এগ্রিলাইফ নিউজ

]]>
ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষে সফল কুমিল্লার হানিফঃ https://motshoprani.org/6045/ Sun, 05 Mar 2023 09:39:40 +0000 https://motshoprani.org/?p=6045 কুমিল্লার দাউদকান্দির সৈয়দ খারকান্দি গ্রামে ড্রাম, বাঁশ, নেট এবং জিআই পাইপ দিয়ে তৈরি জালের বুননে নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ করছেন হানিফ তালুকদার। নদীতে ভাসমান মাছ চাষ করে তিনি জীবনে নিয়ে এসেছেন স্বাবলম্বী হওয়ার নবদিগন্ত।

হানিফ তালুকদারের স্বাবলম্বী হওয়ার গল্পে নতুন স্বপ্নের হাতছানিতে যুক্ত হচ্ছেন অন্য বেকার যুবকরা।
বেকার যুবকদের জীবনে আশার আলো-স্বপ্নদ্রষ্টা হয়ে আর্বিভূত হয়েছে দাউদকান্দি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়। বেকার যুবকদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার আতুঁড়ঘর হিসেবে কাজ করছে এই অফিসটি। মৎস্য অফিস নদীতে খাঁচায় মাছ চাষের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহ তৈরি করছে বেকার যুবকদের।
হানিফ তালুকদার তাদেরই একজন নতুন পথের অগ্রপথিক। বিগত তিনবছর শ্রম মেধা ও অধ্যবসায়ের চর্চায় সফলতা অর্জন করেছেন নদীতে ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে।

মেঘনা, শীতলক্ষা ও ধনাগোদা নদীর ত্রি-মোহনা এবং মুন্সিগঞ্জ-চাঁদপুর ও কুমিল্লা জেলার প্রান্ত এলাকায় নদীতে ভাসমান পদ্বতির খাঁচায় মাছ চাষ প্রকল্প হানিফ তালুকদারের। এখানেই জল-মাটি আর প্রকৃতির অপরুপ এক মোহনীয় মায়ার মাঝেই তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। নদীর সঙ্গে তার আজন্ম সখ্যতাই তাকে নদীমুখী মাছ চাষে উদ্যোগী করে তুলেছে।

তিনমাস প্রশিক্ষণের পর হানিফ তালুকদারকে প্রথমে ১০টি খাঁচা সরবরাহ করে দাউদকান্দি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়। পরবর্তীতে দেয়া হয় আরো ১০টি খাঁচা। মাছ চাষে সফলতা দেখে হানিফ তালুকদার নিজ অর্থায়নে যোগ করেন আরো ২০টি খাঁচা। বর্তমানে তিনি ৪০টি খাঁচায় নদীতে ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছেন।

 

 

হানিফ তালুকদার বলেন, প্রতিবছরে তিনি দুইবার প্রায় ২০ থেকে ২২ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেন। সামান্য পুঁজি দিয়েই শুরু করা সম্ভব এই ব্যবসা। এর জন্য প্রয়োজন হয় না নিজস্ব জলাশয়ের। নিজ বাড়ির পাশে বহমান ধনাগোদা নদীতেই তিনি শুরু করেন খাঁচায় মাছ চাষ। তিন বছর আগে মাত্র ১০টি খাঁচায় যে স্বপ্নযাত্রার শুরু হয়েছে। আজ তা বর্ধিত হয়ে ৪০টি খাঁচা পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিটি খাঁচা ১২ বাই ২২ ফুট। চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করেন মাছের রেনু পোনা। এরপর পাশবর্তী পুকুরে করেন পরিচর্যা। পরিচর্যার পর ছাড়া হয় খাঁচায়। প্রতি খাঁচায় ৫ শত পোনা মাছ ৫ মাস পর উপযোগী হয় বিক্রির। তখন প্রতিটি তেলাপিয়া মাছের ওজন দাঁড়ায় প্রায় ৭ শত গ্রাম।

নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ প্রসঙ্গে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, মানুষ যেন কর্মমুখী হয়ে সচ্ছল জীবন যাপন করতে পারে, তাই আমরা আগ্রহীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করি। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের অনুদান দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, অনেকেরই নেই নিজস্ব পুকুর। তাই নদীতে ভাসমান খাঁচায় মাছ করে একজন বেকার যুবক যেমন নিজে সমৃদ্ধ হবে, ঠিক তেমনি দেশেও মাছ উৎপাদনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

সূত্রঃ সাকসেস খামারি।

]]>
কুমিল্লায় বোয়াল মাছের পোনা উৎপাদনে সফল সামছুদ্দিনঃ https://motshoprani.org/5625/ Thu, 23 Feb 2023 08:30:55 +0000 https://motshoprani.org/?p=5625 কুমিল্লা (দক্ষিণ), নাঙ্গলকোট উপজেলায় বোয়াল মাছের পোনা উৎপাদন করে সফল হয়েছেন সামছুদ্দিন কালু। উপজেলার বিসমিল্লাহ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের স্বত্বাধিকারী তিনি। সামছুদ্দিন কালু একজন সফল মৎস্য চাষিই নন। নাঙ্গলকোট উপজেলার একাধারে দুবারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান তিনি।
এ বছর কৃত্রিমভাবে বোয়াল মাছের পোনা উৎপাদন করে সফল হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে খামারটিতে রেণু পোনা থেকে ৪-৬-৮ ইঞ্চি সাইজের পোনা রয়েছে। যা চাষের পুকুরে দেওয়া হয়েছে।
বিসমিল্লাহ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে গিয়ে দেখা যায়, জাল দিয়ে তুলে সাইজ দেখছেন সামছুদ্দিন কালু। এগুলোকে রেণু পোনা থেকে কালচারের পুকুরে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। আগামী বছর কৃত্রিমভাবে বোয়ালের রেণু পোনা উৎপাদন করে কুমিল্লা জেলাসহ সারা দেশে বোয়াল মাছের পোনা বিক্রি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
বিসমিল্লাহ মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে মাছ উৎপাদন প্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে একজন সফল মৎস্য চাষি হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদকসহ একাধিক পুরষ্কার লাভ করেছেন সামছুদ্দিন কালু। সর্বশেষ এ বছর কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যক্তি হিসেবে কৃষি উৎপাদন এআইপি সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
সামছুদ্দিন কালু  বলেন, বোয়াল মাছ এখন বিলুপ্ত। শখের বশে বোয়াল মাছ চাষ করার ইচ্ছে জাগে। যেই চিন্তা, সেই কাজ। নদী থেকে মাছ সংগ্রহ করে বোয়ালের কৃত্রিম প্রজনন শুরু করি। ৩ বছর কাজ করার পর আমি সফল হয়েছি। বর্তমানে রেণু উৎপাদন করে পুকুরে চাষ করি ৪-৬-৮ ইঞ্চি সাইজের বোয়াল মাছ। বোয়াল মাছের কোনো খাবার দিতে হয় না দেশীয় প্রজাতির অন্য ছোট মাছ খেয়ে এরা বড় হয়। পাশাপাশি এ খামারে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পাঙাশ, রুই, মৃগেল, কাতলা, সিলভার কার্প, ব্রিগহেড, কালি বাউস, সরপুঁটি, কৈ, শিং, মাগুর, টেংরা মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন করে থাকি। যা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
কুমিল্লা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন  বলেন, সামছুদ্দিন কালু মাছ উৎপাদন প্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে একজন সফল মৎস্য চাষি হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদকসহ একাধিক পুরষ্কার পেয়েছেন। বোয়ালের পোনা উৎপাদনে উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে সামছুদ্দিন কালুকে সকল প্রকার সহযোগিতাসহ বিভিন্ন  পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সূত্রঃ বাসস

]]>
মাছের রেণু পোনা চাষ পদ্ধতিঃ https://motshoprani.org/5549/ Sun, 19 Feb 2023 07:43:10 +0000 https://motshoprani.org/?p=5549
  • মাছ চাষে মানসম্মত পোনার ভুমিকা অপরিসীম। হ্যাচারি থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করে তা লালন পালন করার জন্য পুকুরে রেখে ৫-১০ সেঃমিঃ বা ৭-১২ সেঃমিঃ পর্যন্ত বড় করে চাষের পুকুরে ছাড়ার পদ্ধতিকেই রেণু পোনা চাষ পদ্ধতি বলে। মাছ চাষের পূর্বশর্ত হচ্ছে সুস্থ্য সবল উন্নত জাতের পোনা সরবরাহ নিশ্চিত করা।

    রেণু অবস্থায় মাছের জীবন চক্র অত্যন্ত নাজুক থাকে। এজন্য আলাদাভাবে বিশেষ যত্নে পালনের জন্য রেণু সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। সাধারণত দুই ভাবে রেণু পোনা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। একটি উৎস হচ্ছে নদী অন্যটি হ্যাচারি। হালদা, পদ্মা, যমুনা, আড়িয়াল খাঁ প্রভৃতি নদী থেকে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে বিভিন্ন মাছের রেণু ধরা পড়ে।

    ভালো রেণু পোনাঃ

    ভালো রেণু বা মানসম্মত রেণু কোথায় পাওয়া যাবে তা কিভাবে পাওয়া যাবে এটা অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। এবং নদী নালা থেকে প্রাপ্ত বা প্রাকৃতিক উৎস থেকে আহরিত রেণু পোনা ভালো নাকি হ্যাচারির উৎপাদিত রেণু পোনা ভালো এটাও অনেকেরই প্রশ্ন। স্বাভাবিকভাবেই নদী থেকে প্রাপ্ত রেণু পোনার মান ভাল হয়ে থাকে কারণ পরিপূর্ণ এবং অনুকুল প্ররিবেশে পরিপক্ক মাছের প্রজনন ঘটে থাকে নদীতে।

    নদীর আহরিত রেণুতে বিভিন্ন প্রজাতির মিশ্রণ থাকে তাই বাছাই করা সহজ হয় না বলে এ ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। অন্যদিকে হ্যাচারির রেণুতে প্রজাতির মিশ্রন না ঘটিয়ে নিদিষ্ট প্রজাতির রেণু সংগ্রহ ও লালন-পালন করা সম্ভব হয়ে থাকে। তবে ব্রুড মাছের মান ঠিক মত নিয়ন্ত্রন না করা হলে এবং হ্যাচারি ব্যাবস্থাপনায় অসতর্ক হলে নিম্নমানের রেণু বা সংকর জাতের রেণু উৎপাদিত হতে পারে। যা পরে চাষীর ক্ষতির কারণ হতে হবে।রেণু লালন পালনের পুকুর প্রস্তুত
    রেণু পোনা লালন পালনের জন্য বিভিন্ন ধরনের অগভীর বার্ষিক পুকুর বা চাষাবাদ মৌসুমে পানির ব্যবস্থা থাকে এমন পুকুর রেণু লালনের জন্য উত্তম। রেণু মজুদ পুকুর সংলগ্ন বা পার্শ্ববর্তী স্থানে অপেক্ষাকৃত ঢালু এবং যে স্থানে সবসময় পানি প্রাপ্তির সুবিধা আছে এমন স্থানে রেণু প্রতিপালনের পুকুর নির্মাণ করা ভাল। পোনার চাহিদা অনুযায়ী কয়েকটি মজুদ পুকুরের পাশে রেণু প্রতিপালনের পুকুর তৈরি করলে বেশি লাভবান হওয়া যায়।

    প্রতিপালন স্থানের অবকাঠামোঃ

    রেণু পোনা প্রতিপালন পুকুর নির্বাচনে যে বিষয় গুলোর উপর খেয়াল রাখতে হবে-

    পুকুরের চারপাশ উচু, মজবুত থাকতে হবে
    পুকুর বন্যামুক্ত হতে হবে
    পুকুরে পর্যাপ্ত রোদ, আলো-বাতাস থাকবে
    পুকুরে ছায়া সৃষ্টি করে কিংবা পাতা পানিতে পড়ে পানি নষ্ট হয় এমন কোন গাছপালা পুকুরপাড়ে থাকা যাবেনা
    বর্ষাকালে পুকুরের পানির গভীরতা দুই মিটারের বেশি হওয়া যাবে না
    পুকুরের তলদেশে বেশি পরিমানে কাঁদা থাকবে না
    রেণু প্রস্তুতের পুকুরের আয়তন ১০-১৫ শতাংশ হতে পারে।
    চুন ও সার প্রয়োগঃ

  • পকুর প্রস্তুতির দ্বিতীয় ধাপে পুকুরের তলদেশের মাটি সূর্যালোকে শুকিয়ে গেলে পুকুরের তলদেশে লাঙ্গল দিয়ে ভালভাবে চাষ করে শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে চুন পাড়সহ সমস্ত পুকুরে প্রয়োগ করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় পুকুরের তলদেশের পরজীবি প্রাণী মারা যায় এবং পুকুরের পানি কিছুটা খারযুক্ত হয়। যদি পানি নিস্কাশন না করে রোটেনন প্রয়োগ করা হয় তাহলে রোটেনন প্রয়েগের ৩-৫ দিন পর চুন দিতে হবে।
  • নতুন ও পুরাতন উভয় পুকুরেই সার দিতে হবে প্রথমে রাক্ষুসে মাছ অপসারণ বা সম্ভব হলে শুকানের পর শতাংশ প্রতি ৫-৭ কেজি গোবর বা ৮-১০ কেজি কম্পোস্ট সার অথবা হাঁস মুরগির বিষ্ঠা ৩-৫ কেজি এবং ১০০-১৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০-৭৫ গ্রাম টিএসপি একই সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি তিনমাস পরপর চুন প্রয়োগ করলে পুকুরের স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় থাকে। এক্ষেত্রে চুনের মাত্রা হবে প্রাথমিক মাত্রার ১/৪ ভাগ থেকে ১/২ ভাগ।পুকুরে পানি সেচ দেওয়াঃ

    পুকুর শুকানো হলে চুন প্রয়োগের ২-৩ দিন পর পুকুরে নিরাপদ উৎস থেকে ২-২.৫ ফুট পরিমাণ পানি প্রবেশ করাতে হবে। পানি উত্তোলেনের ক্ষেত্রে গভীর নলকুপের বা শ্যালো ইঞ্জিনের দ্বারা মাটির নীচের পানি প্রবেশ করানো ভালো।

    যদি পুকুর বা অন্য ডোবা থেকে পানি প্রবেশ করানো হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই আগে পাইপের মুখে ফিল্টার নেট বা নালায় জাল দিয়ে পানি ছেঁকে প্রবেশ করাতে হবে, যাতে এ পানির সঙ্গে অন্য কোনো জলজ প্রাণী, কীতপতঙ্গ, রাক্ষুসে ও অচাষকৃত মাছ প্রবেশ করতে না পারে।

    ক্ষতিকর জলজ কীতপতঙ্গ দমনঃ

    নার্সারি পুকুরে সার প্রয়োগের ৩-৪ দিনের মধ্যেই পানির বর্ণ সবুজ হয় এবং প্লাংক্টনসহ অন্যান্য বেশকিছু প্রজাতির ক্ষতিকর জলজ কীতপতঙ্গ জন্মায়। যেমন- হাঁসপোকা, ব্যাঙাচী, ক্লাডেসিরা, বড় প্রানীকনা (মাখন পোকা) ইত্যাদি।

    এসব কীতপতঙ্গ থাকলে রেণুর মড়ক হয়, রেণু পোনা খেয়ে ফেলে অথবা পেটকেটে মেরে ফেলে এবং খাদ্যের জন্য রেণুর সাথে প্রতিযোগিতা করে। এজন্যই রেণু ছাড়ার আগে এদের নিয়ন্ত্রন করতে হবে।

    ৬-১২ গ্রাম শতাংশ প্রতি ৩০ মে.মি. পানি হিসাবে ডিপটারেক্স ব্যবহার করতে হবে তাহলে হাঁসপোকা, ব্যাঙাচী, ক্লাডেসিরা, বড় প্রানীকনা (মাখন পোকা) কপিপোড ইত্যাদি মারা যাবে। কিন্তু রেণু পোনার খাদ্য রটিফার ঠিকই বেঁচে থাকবে।

    এছাড়া পুকুরে প্রতি শতাংশে ১২০-১৩০ মিলি হারে কেরোসিন বা ডিজেল প্রয়োগ করলে জলজ কীতপতঙ্গ আংশিক দমন পাওয়া যায়। জলজ কীতপতঙ্গ দমনের জন্য ডিপটারেক্স ব্যবহারের পর জাল টেনে মরা পোকা ছেঁকে তুলে দিতে হবে।

    রেণু পোনা মজুদঃ

    রেণু পালনের সময়কাল এবং পুকুরের আয়তনের উপর ভিত্তি করে রেণু মজুদের ঘনত্ব নির্ভর করে। রেণু থেকে চারা পোনা (৭-১৫ সে.মি.) পর্যন্ত একই পুকুরে বড় করার পদ্ধতিকে এক স্তর পদ্ধতি বলে।

    আবার যদি একটি ছোট পুকুরে রেণু পোনা ছেড়ে ১০-১৫ দিন লালন পালন করে অন্য কয়েকটি পুকুরে কম ঘনত্বে ধানি পোনা স্থানান্তর করা হয়, তাহলে সে পদ্ধতিকে দ্বি-স্তর পদ্ধতি বলে।

    প্রথম পদ্ধতি থেকে তিনগুন বেশি রেণু পোনা মজুদ করা যায়। একস্তর পদ্ধতিতে রেণু পালনের জন্য শতাংশে ৬-৮ গ্রাম ও দ্বি-স্তর পদ্ধতির জন্য ২৫-৩০ গ্রাম রেণু পোনা মজুদ করা সম্ভব।

    সর্তকতাঃ

    রেণু পরিবহনকালীন সময় অক্সিজেন ব্যাগে বহন করতে হবে এবং পরিবহনের সময় ধকল যত কম হবে, রেণু পোনার মৃত্যুর হার তত কম হবে। পুকুরে রেণু ছাড়ার আগে রেণুর ব্যাগের পানির এবং পুকুরের পানির তাপমাত্রা সমতায় নিয়ে আসতে হবে। রেণু ছাড়ার সময় পুকুরের পাড়ের কাছাকাছি ছাড়তে হবে। রেনু ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় সকালে বা বিকালে ছাড়া উচিত ।

    উপরোক্ত বিষয় গুলি ভাল ভাবে মেনে রেণু পোনা চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করলে চাষী লাভবান হবে।

    সূত্রঃ সাকসেস খামারি।

  • ]]>
    কুমিল্লার সফল উদ্যোক্তা তুহিনের গল্পঃ https://motshoprani.org/5218/ Wed, 01 Feb 2023 10:22:41 +0000 https://motshoprani.org/?p=5218 মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফল খুব একটা ভালো হয়নি। তবুও উচ্চ শিক্ষার জন্য দেবিদ্বার এসএ সরকারি কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হন। কিন্তু লেখাপড়ার ফল নিয়ে খুব বেশি দূর এগোনো যাবে না, নিজের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হয় সাইফুল ইসলাম তুহিনের। তাই লেখাপড়ার আনুষ্ঠানিক পাঠ চুকিয়ে মনোনিবেশ করেন ক্ষুদ্র কৃষি খামারে। সাইফুল ইসলাম তুহিন কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের ছেলে।

    তবে এর আগেও অন্য একটা গল্প রয়েছে। বেশি টাকা আয়ের নেশায় ১৯৯৩ সালে কৃষিকাজ বন্ধ রেখে চলে যান কুয়েতে। সেখানে একমাস ১৭ দিন থেকে সেই আশায় গুড়েবালি হলে ফিরে আসেন দেশে। এসেই শুরু করেন পুরোদমে কৃষিকাজ। সেখানে পেলেন সফলতাও। প্রথমে শুরু করেন গাভী পালন। এরপর শুরু করেন মাছ চাষ, মুরগি পালন। বর্তমানে তুহিন প্রায় তিন একর জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিশাল আকৃতির প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি লেয়ার জাতীয় মুরগির একটি ফার্ম, দুটি মিশ্র জাতীয় গরুর খামার। এছাড়া ২০ থেকে ২৫টি পুকুরে চাষ করছেন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ৮০ হাজার টাকায় শুরু করা ব্যবসায় তুহিন এখন প্রায় ৮০ লাখ টাকার মালিক। ১০ থেকে ১৫ জন বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা তুহিন এখন স্বপ্ন দেখেন বড় একজন উদ্যোক্তা হওয়ার।

    সফল উদ্যোক্তা তুহিন জানান, ব্যবসার শুরুটা ছিলো আমার স্বপ্নের মতো। শত বাঁধা আর প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি দমে যাইনি, নিরাশ হইনি। যেখানে আমি বেকারত্ব নিয়ে দিশেহারা ছিলাম, সেখানে আজ আমি ১০ থেকে ১৫ জন যুবকের বেকারত্ব দূর করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমার এখানে ১০ থেকে ১৫ বছর যাবত পঞ্চঘরের চারজন যুবক কাজ করছেন। এছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আরো কয়েকজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। প্রতি মাসে আমি তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা বেতন দেই।

    তিনি আরো বলেন, ১২০ শতক জায়গায় গাভীর জন্য জার্মান প্রজাতির ঘাস চাষ করছি। আমার খামারে বাহির থেকে গরু আনা হয় না। এ খামারেই গাভী থেকে বাছুরের জন্ম হয়। এই বাছুর লালন-পালন করে বাজারে বিক্রি করা হয়। খামারে ১৫টি গাভী থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লিটার দুধ আসে। খামার থেকেই পাইকারি দরে দুধ বিক্রি করা হয়। এছাড়াও মুরগির ফার্ম থেকে প্রতি দিন সাড়ে তিন হাজারের বেশি ডিম আসে। ডিম ও দুধ থেকে প্রতি মাসে তিন থেকে চার লাখ টাকা আয় হয়। এছাড়াও ২০ থেকে ২৫ টি ছোট-বড় পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছি। এখান থেকেও প্রতিমাসে ভালো টাকা আয় হয়। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেয়াসহ সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিমাসে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করা যায়।

    এদিকে ব্যবসায় সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু সমস্যার কথাও জানান ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তুহিন। তিনি বলেন, একটা সময়ে এ ব্যবসায় অনেক বেশি লাভ করা যেত। এ ব্যবসার আয় দিয়ে সংসার চালিয়ে তিন ছেলেকে লেখা-পড়া করাসহ কুমিল্লা শহরে বাড়ি করেছি। বর্তমানে পশু-প্রাণির খাবার ও ওষুধের দাম বৃদ্ধিতে কিছুটা বেগ পেতে হয়। কোন কোন মাসে লাভের বদলে লোকসানও গুনতে হচ্ছে। বাজারে ডিম ও দুধের দাম কম হওয়ায় লাভের পরিমাণও কম হচ্ছে।

    তিনি বলেন, বড় বড় উদ্যোক্তাদের কারণে আমাদের মতো মাঝারি বা ছোট উদ্যোক্তাদের টিকে থাকা কষ্টের হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বাজার দখলে নিয়েছেন। তারা বেশি উৎপন্ন করে কম দামে বেশি বেশি সেল করে পুষিয়ে নেন। কিন্তু আমাদের মতো ক্ষুদ্র বা মাঝারি উদ্যোক্তাদের চাহিদা কম। আমরা কম উৎপন্ন করছি, কিন্তু বেশি দামে বিক্রি করতে পারছি না।

    গত ১০ বছর ধরে এ খামারেই কাজ করছেন পঞ্চগড়ের বেলাল ও হেলাল নামের দুই ভাই। তারা বছরে দুই একবার বাড়িতে গেলেও এ খামারই যেন তাদের আসল বাড়ি। এ খামারের পশুদের সঙ্গেই তাদের বেশি সখ্যতা। নিজের সন্তানের মতোই লালন-পালন করে আসছেন খামারের গাভীদের। গাভীদের অসুখ-বিসুখে চিকিৎসক ডাকা, সময় মতো ওষুধ খাওয়ানো, ইঞ্জেকশান দেয়াসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন বেলাল ও হেলাল।

    এদিকে বেলাল ও হেলাল ছাড়াও মুরগীর ফার্ম, গরুর খামার ও মাছের বিভিন্ন প্রজেক্ট দেখাশোনা করেন আশরাফুল, হাবিব, বিল্লাল, সাদ্দাম, সাইদুল, বদু, জসিম, মুক্তা, রহিমা বেগমসহ আরো কয়েকজন। তারা সবাই ব্যস্ত থাকেন বিভিন্ন কাজে। কেউ পশুদের খাবার তৈরি করছেন, কেউ গরুর দুধ ও মুরগীর ফার্ম থেকে ডিম সংগ্রহ করছেন। আবার কেউ মাছের প্রজেক্টে খাদ্য নিয়ে যাচ্ছেন। তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, মালিকের অনুপস্থিতে আমরাই খামার দেখাশোনা করি। এ খামারই আমাদের বাড়ি-ঘর, এখানেই থাকা-খাওয়া। মাসের পাঁচ থেকে ১০ তারিখের মধ্যেই বেতন-ভাতা পাই। তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে।

    এ ব্যাপারে দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকতা উত্তম কুমার কবিরাজ জানান, উপজেলা কৃষি বিভাগ সব সময়ই উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তুহিন মিয়া আজ একজন সফল উদ্যোক্তা। তাকে দেখে অনেকের শিক্ষা নেয়া উচিত। চাকরির পেছনে না ঘুরে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে খামারির প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের খামারেই শত শত বেকারের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়।

    সূত্রঃ কুমিল্লার ধ্বনি।

    ]]>
    পুকুরে মাছের সাথে মুক্তা চাষে করণীয়ঃ https://motshoprani.org/5185/ Mon, 30 Jan 2023 09:06:28 +0000 https://motshoprani.org/?p=5185

     

    পুকুরে মাছের সাথে মুক্তা চাষ করে মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা থেকেও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। সাধারণত মুক্তা তৈরি হয় যখন কোনও বহিরাগত বস্তু যেমন বালির দানা, কীট ইত্যাদি কোনভাবে একটা ঝিনুকের দেহে প্রবেশ করে এবং ঝিনুক তাকে পরিত্যাগ করতে পারে না ও পরিবর্তে তার উপর স্তরে স্তরে একটি চকচকে আস্তরণ তৈরি করে। আসুন জেনে নেই পুকুরে মাছের সাথে মুক্তা চাষে আমদের করণীয় সম্পর্কে-
    মুক্তা চাষের পদ্ধতিঃ

     


    সাধারণত মিঠা পানির মুক্তা চাষে ৬টি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে হয়ে থাকে। সেগুলি নিচে দেওয়া হল-

    • ঝিনুক সংগ্রহ
    • অস্ত্রোপচারের আগের প্রস্তুতি
    • অস্ত্রোপচার
    • অস্ত্রোপচারের পরের যত্ন
    • জলাশয়ে চাষ
    • মুক্তা বের করা

    ঝিনুক সংগ্রহঃ


    সাধারণত প্রকৃতি তথা পুকুর নদী ইত্যাদি থেকে সুস্থ ঝিনুক সংগ্রহ করা হয়। ওগুলো হাতে করে সংগ্রহ করে বালতিতে বা পানিভর্তি পাত্রে রাখা হয়। মুক্তা চাষের জন্য ব্যবহৃত আদর্শ ঝিনুকের আকার সামনে থেকে পেছন পর্যন্ত ৮ সেমির বেশি হবে।

    অস্ত্রোপচারের আগের প্রস্তুতিঃ


    সংগ্রহ করা ঝিনুকগুলিকে অস্ত্রোপচারের আগে দুই থেকে তিনদিন বন্দী দশায় গাদাগাদি করে পুরোনো কলের পানি লিটার প্রতি একটি ঝিনুকের অনুপাতে রাখতে হয়। এই অস্ত্রোপচার-পূর্ববর্তী পদ্ধতিটি চালান হয় অ্যাডাক্টার পেশিগুলোকে দুর্বল করার জন্যে, যা অস্ত্রোপচারের সময় ঝিনুকগুলোকে সহজে নাড়াচাড়ায় সাহায্য করে।

    ঝিনুকের অস্ত্রোপচারঃ


    সাধারণত অস্ত্রোপচারের স্থান বিশেষে স্থাপন তিন রকম হয়, যথা ম্যান্টল গহ্বর, ম্যান্টল কোষকলা ও যৌনগ্রন্থীয় স্থাপন। অস্ত্রোপচার দ্বারা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রধান বস্তুগুলি হচ্ছে পুঁতি বা কেন্দ্রকণা, যেগুলো ঝিনুকের খোলা বা অন্য কোনও চুনযুক্ত বস্তুর দ্বারা গঠিত হয়।

    ম্যান্টল গহ্বর স্থাপন–এই পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রাণীটির দুটি কপাট খুলে ও খোলার সামনের দিকে থেকে ম্যান্টলকে সাবধানে আলগা করে গোলাকৃতি(৪-৬ মিমি ব্যাসের) বা পূর্বনির্দিষ্ট ধরনের পুঁতি ম্যান্টল গহ্বরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। উভয় কপাটের ম্যান্টল গহ্বরেই স্থাপন করা চলে। পূর্বপরিকল্পিত ধরনের পুঁতি স্থাপনের সময় যত্ন নেয়া হয় যাতে ডিজাইন করা দিকটি ম্যান্টলের দিকে মুখ করে থাকে। পুঁতিটিকে যথাস্থানে রাখার পর ম্যান্টলকে কেবল খোলসের গায়ে ঠেলে দিলেই স্থাপনের দরুন উৎপন্ন ফাঁকা জায়গাগুলি ভরাট হয়ে যায়।

    ম্যান্টল কোষকলা স্থাপনঃ


    সাধারণত ঝিনুকগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে দাতা এবং অপরটি হল গ্রহীতা ঝিনুক। এই প্রক্রিয়ার প্রথম কাজ হল গ্রাফ্ট বা জোড় তৈরি করা (ধাত্র কোষকলার ছোট ছোট টুকরো)। এটা করার জন্য একটা দাতা ঝিনুক থেকে একটা ম্যান্টল ফিতে তৈরি করা হয় (ঝিনুকের পেটের দিকের ম্যান্টলের একটি ফালি), যে ঝিনুকটিকে এ কাজের জন্য মেরে ফেলা হয় এবং ওই ফিতেটি ছোট ছোট (২- ২মিমি) টুকরায় কাটা হয়।

    স্থাপন শুধু গ্রহীতা ঝিনুকে করা হয়, যা দুই ধরনের হয়, যথা কেন্দ্রবিহীন ও কেন্দ্রযুক্ত (নন নিউক্লিয়েটেড ও নিউক্লিয়েটেড)। প্রথমটিতে ঝিনুকের পেটের দিকে অবস্থিত পস্টিরিয়র প্যালিয়াল ম্যাণ্টলের ভিতরের দিকে তৈরি করা পকেট বা গহ্বরে কেবল জোড়ের টুকরোগুলিকেই ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।

    কেন্দ্রযুক্ত পদ্ধতিতে, একটি জোড়ের টুকরো ও সেই সঙ্গে একটি ছোট কেন্দ্রকণা (২ মিমি ব্যাসের) গহ্বরে ঢোকান হয়। দুটো পদ্ধতিতেই সাবধানতা নেওয়া হয় যাতে জোড় বা কেন্দ্রকণা পকেট থেকে বেরিয়ে না আসে। দুটি কপাটের ম্যান্টলের ফিতেতেই স্থাপন করা যায়।

    যৌনগ্রন্থীয় স্থাপনঃ


    এই পদ্ধতির জন্যও গ্রাফট বা জোড় (ম্যান্টল টিস্যু পদ্ধতিতে বর্ণিত) তৈরি করতে হয়। প্রথমে ঝিনুকের যৌনগ্রন্থির ধারে কাটতে হয়। তারপর যৌনগ্রন্থিটিতে একটা জোড় এবং তার সাথে একটা কেন্দ্রকণা (২-৪ মিমি ব্যাসের) এমনভাবে প্রবেশ করান হয় যাতে জোড় এবং কেন্দ্রকণা নিবিড়ভাবে পরস্পর সংলগ্ন থাকে। এমনভাবে যত্ন নেওয়া হয় যাতে কেন্দ্রকণাটি জোড়ের বাইরের এপিথেলিয়াল স্তরের সাথে লেগে থাকে এবং অস্ত্রোপচারের সময় অন্ত্র কেটে না যায়।

    মুক্তা অস্ত্রোপচারের পরের যত্নঃ


    স্থাপন করা ঝিনুকগুলি অস্ত্রোপচারের পরে যত্ন করার জায়গায় নাইলনের ব্যাগে ১০দিন রাখা হয়, অ্যান্টিবায়োটিক এবং প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে। ইউনিটগুলি প্রতিদিন পরীক্ষা করা হয় এবং মরা ঝিনুক এবং যেগুলো কেন্দ্রকণাকে প্রত্যাখ্যান করে সেই ঝিনুকগুলিকে বার করে নেয়া হয়।

    জলাশয়ে মুক্তার চাষঃ


    অস্ত্রোপচারের পরের যত্নের পর স্থাপন করা ঝিনুকগুলিকে জলাশয়ে ছাড়া হয়। ঝিনুকগুলিকে নাইলনের ব্যাগে রাখা হয় (এক-একটা ব্যাগে দুটো করে) এবং বাঁশের বা পিভিসি পাইপ থেকে ঝুলিয়ে জলাশয়ে ১ মি গভীরতায় রাখা হয়। ১ হেক্টরে ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ ঝিনুক রেখে চাষ করা হয়। জলাশয়ে মাঝে মাঝে জৈব ও অজৈব সার দেওয়া হয় যাতে প্ল্যাঙ্কটন উৎপাদন অব্যাহত থাকে। চাষের ১২-১৮ মাস সময়কালের মধ্যে মাঝেমাঝেই ঝিনুকগুলিকে যাচাই করে মরা ঝিনুক বার করে দেওয়া এবং ব্যাগগুলিকে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

    মুক্তা তোলাঃ


    চাষের সময়ের শেষে ঝিনুকের ফসল তোলা হয়। ম্যান্টল কোষকলা বা যৌনগ্রন্থি পদ্ধতিতে জ্যান্ত ঝিনুক থেকে মুক্তা বের করা সম্ভব হলেও ম্যান্টল গহ্বর পদ্ধতিতে ঝিনুকগুলিকে মেরে ফেলতে হয়। বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রোপচার করে স্থাপন করা পদ্ধতির ফলে যে মুক্তাগুলো পাওয়া যায় তা হল ম্যান্টল গহ্বর পদ্ধতিতে খোলের গায়ে লেগে থাকা অর্ধ গোলাকৃতি ও প্রতিকৃতি মুক্তো; ম্যান্টল কোষকলা পদ্ধতিতে না লেগে থাকা ছোট অসমান বা গোল মুক্তো এবং যৌনগ্রন্থি পদ্ধতিতে না লেগে থাকা বড় অসমান বা গোল মুক্তো।

    পুকুরেই মাছের সাথে মুক্তা চাষঃ


    মুক্তা একটি মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। ঝিনুকের ন্যাকার গ্রন্থি হতে নির্গত রস জমে যে পদার্থ তৈরি হয় তা হচ্ছে মুক্তা। দেশের বিলে-ঝিলে ও উপকূলীয় এলাকায় প্রচুর ঝিনুক রয়েছে। ওই ঝিনুক ব্যবহার করে মুক্তা চাষ ও উৎপাদন বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর নূন্যতম কোন উদ্যোগ নেই। সরকার একটু দৃষ্টি দিলেই পরিকল্পিতভাবে মুক্তা চাষ ও উৎপাদন করে প্রতিবছর দেশীয় চাহিদা পূরণ করা ছাড়াও হাজার হাজার কোটি টাকা মুক্তা রফতানি করা সম্ভব। এতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

    ঝিনুকের মধ্যে একটি বিশেষ উপাদান থাকে যাকে ন্যাকার বলে। ঝিনুকের শেল এর মেন্টেলের মসৃন পর্দাকে নেক্রিয়ার লেয়ার বলা হয়, সেখানে নির্গত রস জমেই তৈরি হয় মুক্তা। এক বিঘা পুকুরের পানিতে বাংলাদেশে সাধারণত ২ হাজার ঝিনুক মুক্তা চাষের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

    জানা যায়, বাংলাদেশে যে জাতের ঝিনুক আছে তাতে সাধারণত গোলাপী রং এর মুক্তা চাষ করা যাবে এবং সারা বিশ্বে গোলাপী মুক্তার চাহিদা ব্যাপক। বাংলাদেশের কক্সবাজার মহেশখালী ও সেন্টিমার্টিন এলাকাকে অতীতে পার্ল বা মুক্তার বিছানার বলা হতো ওইসব এলাকা চাষের ঝিনুকে ভরপুর রয়েছে এখনো। দেশের সবখানের পুকুর ছাড়াও ওইসব সহ উপকূলীয় এলাকায় ঝিনুকের মাঝে মুক্তা চাষের উদ্যেগ নেয়া যেতে পারে সরকারিভাবে। তবে শুধু উদ্যোগ নিলেই হবে না, যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে মুক্তা চাষ ও উৎপাদনে। সেই জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে মুক্তা চাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, উদ্ধুদ্ধ করতে হবে মৎস্যচাষিদের।

    সংশ্লিষ্টরা জানান, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যদি দেশে পরিকল্পিতভাবে মাছের সাথে মুক্তার চাষ ও উৎপাদনের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে আমাদের দেশ লাভবান হবে। এই পদ্ধতিতে মাছের সাথে মুক্তা চাষ করে অনেক চাষিরাই স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

    সূত্রঃ আধুনিক কৃষি খামার

    ]]>
    ছাগলের দৈনিক দানাদার খাদ্যের পরিমাণ ও খাদ্য তৈরির কৌশলঃ https://motshoprani.org/4015/ Sun, 08 Jan 2023 07:21:57 +0000 https://motshoprani.org/?p=4015 ছাগল পালনএকটি অত্যন্ত সহজ ও কমব্যয় সম্পন্ন বিনিয়োগ। দেশের প্রান্তিক অনেক খামারি ছাগল পাল্পন করে স্বাবলম্বী হয়েছে। অনেকেই আজকাল বাণিজ্যিকভাবে ছাগলের খামার দিচ্ছে। ছাগল পালনের সবথেকে বেশি ব্যয় হয় খাদ্য প্রদানে। তাই প্রত্যেক ছাগল খামারিদের জানা উচিৎ প্রতিদিন কি পরিমাণ দানাদার খাদ্য ছাগলকে দিতে হবে।

    বিএলআরআই এর তথ্য অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়ষ্ক ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের জন্য মাথাপিছু ১৬০ গ্রাম দানাদার প্রয়োজন হয়। ক্রস ছোট আকারের ছাগলের জন্যও এটা অনুসরণ করা যেতে পারে। সাধারণত বড় জাতের ছাগলের জন্য দৈনিক ২০০-৪০০গ্রাম দানাদার খাবার দিতে হয়। এছাড়াও ছাগলের জাত, দুধ উৎপাদন, ঘাসের প্রোটিনমান, দৈহিক ওজন ইত্যাদি আরো কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে ক্ষেত্র বিশেষে পরিমাণে কিছু কম বা বেশী দিতে হয়।

    খাদ্য প্রস্তুত প্রণালীঃ
    ধাপ-১:
    প্রথমেই খাদ্য উপাদান গুলোকে ০৩(তিন)টি ক্যাটাগরীতে ভাগ করে নিন। ক্রমিক নং০১ এবং ০২ একটা ক্যাটাগরী (সরিষার খৈল ব্যবহার না করলে ০১-০৩ পর্যন্ত একই ক্যাটাগরীতে থাকবে)। সরিষার খৈল ব্যবহার করলে তা আলাদা ক্যাটাগরীতে রাখুন। বাকি সব উপাদানগুলো আরেকটা ক্যাটাগরীতে।

    ধাপ-২
    এবার সরিষার খৈল বাদে ক্যাটাগরী অনুযায়ী বাকি উপাদান গুলো আলাদা মিশিয়ে নিয়ে আলাদা বস্তায় অথবা ড্রামে সংরক্ষণ করুন।

    ধাপ-৩:
    এবার আপনার খামারে ছাগলের সংখ্যা হিসাব করে মোট কত কেজি দানাদার খাবার লাগবে তা ক্যাটাগরী অনুযায়ী আলাদা আলাদা পরিমাপ করে নিন।

    ধাপ-৪:
    প্রতিদিন সন্ধায় পরিমাণ মত পানি কুসুম গরম করে তার মধ্যে ১-২ মুঠি চিটাগুড় এবং প্রথম ক্যাটাগরীর খাদ্য উপাদান অর্থাৎ গম ও ভূট্টা প্রতি কেজির জন্য ০৩-০৪ গ্রাম বেকারী ঈস্ট ভাল করে মিশিয়ে নিন।

    ধাপ-৫:
    এবার সেই পানিতে প্রথম ক্যাটাগরীর খাদ্য উপাদান অর্থাৎ ভুট্টা এবং গম মাখা মাখা করে মিশিয়ে নিয়ে ঢাকনাযুক্ত কোন ড্রাম অথবা বালতিতে বায়ুরোধ করে রেখে দিন।

    ধাপ-৬:
    আলাদা একটা পাত্রে সরিষার খৈল ভিজিয়ে রাখুন (যদি সরিষার খৈল ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে)।

    ধাপ-৭:
    পরদিন ০৩(তিন) ক্যাটাগরীর উপাদানই একসাথে মিশিয়ে ছাগলকে পরিবেশণ করুন। সাথে কিছু পরিমাণ হে অথবা ধানের খর টুকরো করে কেটে মিশিয়ে দিতে পারেন।

    বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ-
    (ক) ছাগলকে যেকোন নতুন খাবারই অল্প অল্প করে খাইয়ে অভ্যাস করিয়ে নিতে হবে।
    (খ) গম, ভূট্টা ইত্যাদি অবশ্যই ভেংগে নিতে হবে। দানাযুক্ত খাবার ভেংগে না দিলে ছাগলের হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে।
    (গ) আপনি চাইলে ঈস্ট ব্যবহারের পরিবর্তে গম ও ভুট্টা সিদ্ধ করেও ব্যবহার করতে পারেন।

    সংগ্রহঃ মৎস্য পশুসম্পদ বার্তা

    ]]>