৯
মেলার প্রথম দিন ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন কুশিয়ারা নদীর একটি বাঘাইড় মাছ এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকায় দামে বিক্রি করেন। আলমগীর জানান, এ মাছটি তিনি প্রথমে সাড়ে তিন লাখ টাকা দাম চান। পরে সেটি এক লাখ চল্লিশ হাজারে বিক্রি করে দেন এক প্রবাসীর কাছে।
মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীর পাড়ে শুরু হয়েছে দুদিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মাছের মেলা। দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বড় মাছকে ঘিরে ভিড় জমায় ক্রেতারা, প্রতিটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০ হাজার থেকে লাখ টাকায়।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) প্রথম দিন থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
মেলায় একটি বিশালাকৃতির বাঘাইড় মাছকে ঘিরে ছিল অন্যরকম উচ্ছ্বাস। মাছটি বিক্রি নিয়ে হয় অনেক শোরগোল আর দরদাম। সাড়ে তিন লাখ টাকা দাম চান বিক্রেতা। সবশেষ এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকায় কিনে নেন এক প্রবাসী।
পৌষের শেষ দিকে সোমবার বিকাল থেকে মৌলভীবাজারের কুশিয়ারা নদীর পাড়ে জড়ো হয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। একটাই উপলক্ষ প্রায় দু‘শো বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছ মেলা।
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন হাওড়-নদী ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশাল বড় আকতি মাছ মেলায় মাছ নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এসব মাছের মধ্যে রয়েছে, বড় আইড়, বোয়াল, বাঘা, রুই,কাতলা, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। রাতব্যাপী হয় এসব মাছ কেনাবেচা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এক একটি মাছ দশ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মেলার প্রথম দিন ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন কুশিয়ারা নদীর একটি বাঘাইড় মাছ এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকায় দামে বিক্রি করেন। আলমগীর জানান, এ মাছটি তিনি প্রথমে সাড়ে তিন লাখ টাকা দাম চান। পরে সেটি এক লাখ চল্লিশ হাজারে বিক্রি করে দেন এক প্রবাসীর কাছে।
এছাড়া আরেকটি বাঘাইড় মাছ আড়াই লাখ টাকা দাম চাইলেও শেষ পর্যন্ত পঞ্চাশ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এটি কিনে নেন এনায়েতগঞ্জ এলাকার এক আমেরিকা প্রবাসী সুনাই আলী। তিনি জানান, এ মাছ কিনতে পারায় তিনি খুবই খুশি। তিনি আমেরিকা থেকে অপেক্ষায় ছিলেন এ মাছের মেলার জন্য।
পৌষ সংক্রান্তিতে এ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাছের মেলায় ঢল নামে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।
শুধু মাছই নয়, মেলা প্রাঙ্গণে বসেছে শিশুদের খেলনা, খাবারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় হরেক রকমের পণ্যের দোকানও। আর এমন উৎসবের আয়োজন করতে পারায় খুশি আয়োজকরা।
শেরপুর মাছের মেলা পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও শেরপুর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হোসেন জানালেন, এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় বেঁচাকেনা ভালো হচ্ছে। তবে ঐতিহ্যবাহী এ মেলার স্থায়ী জায়গার দাবি জানান তিনি।
মেলাকে সফল করার পাশাপাশি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান মৌলভীবাজার শেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচাজ শিপু কুমার দাশ।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) শেষ হবে মেলার আনুষ্ঠানিকতা। এ বছর মেলায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার মাছ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।সূএ : সময়নিউজ