দেশী মুরগির নতুন জাত উদ্ভাবন বিএলআরআইয়ের
দেশী মুরগির মাংসের স্বাদ ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) উদ্ভাবন করল নতুন উন্নত জাতের মুরগি। এ মুরগি দেখতে অবিকল দেশীয় মুরগির মতো। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় পালন উপযোগী এ মুরগির রোগবালাই কম হয় বলে ওষুধের ব্যবহার করতে হয় অনেক কম। ফলে মাংস অনেক বেশি সুস্বাদু ও নিরাপদ। গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএলআরআই এসব তথ্য জানায়।
স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই এ মুরগি বাজারজাত করা হবে বলে জানানো হয় ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। এ বিষয়ে আফতাব হ্যাচারি লিমিটেড ও বিএলআরআইয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বিএলআরআই মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার বলেন, সাধারণ মানুষের মাঝে দেশী মুরগির মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, অথচ দেশী মুরগি বিলুপ্তপ্রায়। দেশী মুরগির মাংসের চাহিদা থাকায় কয়েক বছরে সোনালি জাতের মুরগির প্রতি ভোক্তাদের আগ্রহ বেড়েছে। এদিকে সোনালি জাতের মুরগির মূল জাত সংরক্ষণ না করার কারণে রোগবালাই আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এতে একদিকে যেমন সোনালি মুরগিতে ওষুধের ব্যবহার বেড়েছে, অন্যদিকে নিরাপদ মুরগির মাংসের প্রাপ্যতা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপদ দেশীয় স্বাদের মুরগির মাংসের চাহিদা মেটাতে নতুন জাতের এ মুরগি উদ্ভাবন করল বিএলআরআই।
আফতাব বহুমুখী ফার্মসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার বলেন, ভোক্তার চাহিদা বিবেচনায় দীর্ঘদিন থেকেই এ ধরনের একটি নির্ভরযোগ্য জাতের মুরগির প্রত্যাশা করছিল আফতাব হ্যাচারি। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল দেশী মুরগির স্বাদ ফিরিয়ে আনা, এমন এক জাতের মুরগি উদ্ভাবন করা যা বাংলাদেশের আবহাওয়ায় পালন উপযোগী এবং রোগবালাই সহিষ্ণু।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (বিক্রয়) এরশাদ বলেন, খুব সহজেই এ মুরগি পালন করা যায়, দেশি মুরগির তুলনায় মাংসের পরিমাণও অনেক বেশি। আশা করা যায় এ মুরগি দেশীয় খামারিদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলবে। তিনি বলেন, এ জাতকে প্রাথমিকভাবে ‘বিএলআরআই মাল্টি কালার টেবিল চিকেন’ নাম দেয়া হলেও অচিরেই এর একটি ব্র্যান্ড নাম চূড়ান্ত করা হবে।
আফতাব বহুমুখী ফার্মসের হেড অব মার্কেটিং নুরুল মোর্শেদ খান বলেন, সোনালি জাতের মুরগিটিও সংকরায়নের মাধ্যমে দেশীয়ভাবে উদ্ভাবন করা হয়েছিল। কিন্তু এর পিওরলাইন সংরক্ষণ না করে বছরের পর বছর ধরে ইনব্রিডিংয়ের ফলে রোগজীবাণুর সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি ও ক্ষতির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করেছে।
তিনি জানান, বিএলআরআইয়ের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী কেবল আফতাব হ্যাচারির মাধ্যমেই মুরগির নতুন জাতটি বাজারজাত করা হবে।
তথ্যসূত্রঃ দৈনিক বণিকবার্তা , ২৮ জুন, ২০২০