আমরা বলি, ‘মাছে–ভাতে বাঙালি’। মাছ থেকেই আসে আমাদের প্রাণিজ আমিষ চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ। অথচ খাওয়া বা বিদেশে রপ্তানির আগে প্রক্রিয়াজাতকরণ করার সময় ফেলে দেওয়া হয় মাছের ত্বক ও কাঁটা। এই ফেলে দেওয়া ত্বক ও কাঁটার পরিমাণও নেহাত কম নয়। এই উচ্ছিষ্টই যদি কাজে লাগানো যায়, তাহলে কেমন হয়? এমনটাই ভাবছিলেন একদল গবেষক। মাছের ত্বককে কাজে লাগিয়ে জেলাটিন (একধরনের প্রোটিন উপাদান, যা মূলত স্তন্যপায়ী প্রাণীর কোলাজেন থেকে আসে) উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। পাঁচ সদস্যের এই গবেষক দলে ছিলেন ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ইসমাইল হোসেন, সহকারী হিসেবে ছিলেন ফাতেমা হক ও একই বিভাগের স্নাতকোত্তরের তিন শিক্ষার্থী—রাশিদা আক্তার, রাকিবুল আলম ও জান্নাতুল আফরিন।
যেভাবে শুরু
মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় সৃষ্ট বর্জ্য পরিবেশদূষণের কারণ। এ ছাড়া মাছের চামড়ায় প্রচুর প্রোটিন থাকে। এটি ফেলে দিলে পুষ্টিগুণও কমে যায়। তাই ফেলে না দিয়ে একে কীভাবে কাজে লাগানো যায়, কীভাবে মাছের বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা করা যায়, এসব নিয়ে ভাবতে শুরু করেন অধ্যাপক ইসমাইল হোসেন। স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। উদ্যমী ও আগ্রহী কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শুরু হয় জেলাটিন উৎপাদন গবেষণা। শুরুতে ইসমাইল হোসেনের তত্ত্বাবধানে পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছের ত্বক থেকে কীভাবে জেলাটিন উৎপাদন করা যায়, তা নিয়ে কাজ শুরু করেন স্নাতকোত্তরের দুই শিক্ষার্থী। সফল হওয়ার পর শোল, পোয়া ও বাইম মাছ নিয়ে কাজ শুরু করেন রাশিদা, রাকিবুল ও জান্নাতুল। সূত্র: প্রথম আলো সংবাদ।