ছাগলের দুধ বৃদ্ধির উপায় ও ঔষধ সমূহ। আজকে আলোচনা করবো ছাগলের দুধ কমে যাওয়ার কারণ, ছাগলের দুধ বৃদ্ধির উপায় ও ছাগলের দুধ বৃদ্ধির ঔষধ সমুহ নিয়ে। ছাগল পালন খামারে দুধ কমে গেলে বাচ্চার দুধের ঘাটতি দেখা দেয়। এতে বাচ্চা দুর্বল ও অপুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ছাগলের দুধ কমে যাওয়ার কারণ
ছাগলের দুধ কমে যাওয়ার পেছনে অনেক ধরণের কারণ থাকতে পারে। তারমধ্যে অন্যতম হলো-
- অসুস্থতা থাকলে।
- এন্টিবায়টিক ব্যবহার করা।
- কৃমি রোগে আক্রান্ত হলে।
- ছাগির শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব থাকলে।
- সুষম দানাদার খাদ্য ও কাঁচা ঘাসের অভাব থাকলে।
- খাদ্য গ্রহণ কমে গেলে।
ছাগলের দুধ বৃদ্ধির উপায়
ছাগল সঠিক খাদ্য ও সঠিক পরিচর্যা পেলে দুধ উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে। ইদানিং ছাগল পালন খামারিদের মুল সমস্যা হলো পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ উৎপাদন হচ্ছে না বাচ্চা পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ পাচ্ছে না। ছাগলের দুধ বৃদ্ধির উপায় সমুহ-
খামারের যে বিষয়গুলোর দিকে দৃষ্টি রাখলে দুধ উৎপাদন বাড়বে।
- সুষম খাদ্য সরবরাহ: গর্ভবতী ছাগি থেকে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, আর এ সময় প্রয়োজন সুষম খাদ্য সরবরাহ। এ সময় প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি প্রয়োজন হয় যা ছাগির নিজের জন্য ও বাচ্চার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছাগির শরীরের পুষ্টির উপর নির্ভর করে ছাগির দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ও বাচ্চার দেহ গঠন হয়ে থাকে। আর তাই গর্ভবতী ছাগিকে বিশেষভাবে সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। বাচ্চা প্রশব পরবর্তি ছাগিকে দুধ উৎপাদন এর পরিমানের উপর নির্ভর করে বাড়তি দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। সেই সাথে দানাদার খাদ্যের সাথে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি মিনারেল ও ভিটামিন এ, ডি ও ই সরবরাহ করতে হবে।
- বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ: পানির অপর নাম জীবন। দেহের পরিপাকতন্ত্র সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন হয়। পানি দেহের মেটাবলিজম সঠিক রাখে। খামারে বিশুদ্ধ খাবার পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
- প্রশব কালের পরিচর্যা: গর্ভবতী ছাগির বাচ্চা প্রশবকালে নিতে হবে বাড়তি পরিচর্যা ও যত্ন। এ সময় ছাগিকে নরম ও শুকনো (খড় বিছিয়ে) বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘর জীবানু মুক্ত রাখতে হবে।
- গোসল করানো: গরমকালে ১ বার গোসল করানো ভালো। শীতকালে ব্রাশ দিয়ে শরীরের লোম পরিষ্কার করতে হবে। এতে করে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ ঠিক থাকে। যা দুধ উৎপাদনে সহায়ক।
- কাঁচা ঘাস সরবরাহ: ছাগির দুধ উৎপাদন বাড়াতে কাঁচা ঘাসের কোনো বিকল্প নেই। সুষম খাদ্যের পাশাপাশি কাঁচা ঘাস দুধ উৎপাদন বাড়ায়। ঘাসের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতিতে দুধ উৎপাদন বাড়ায়।
- বাচ্চাকে খাওয়ানো: দুধ উৎপাদনের পরিমাণের ওপর দুধ বাচ্চাকে খাওয়ানোর পরিমান নির্ভর করে। বাচ্চা যদি কিছু সময় পর পর দুধ খায় তাহলে ওলানে দুধ বেশী নামবে। এতে দুধ উৎপাদনের পরিমান বাড়বে।
- ব্যায়াম: দীর্ঘদিন পেটে বাচ্চা বা গর্ভবতী থাকায় অনেকটা অলোস হয়ে থাকে ছাগিগুলো। তাই বাচ্চা হবার পর থেকে ছাগিকে একটু ব্যায়াম বা হাঁটা-হাটির ব্যবস্থা করতে হবে।
ছাগলের দুধ বৃদ্ধির ঔষধ
য়ে কারনেই ছাগলের দুধ কমে যাকনা কেন ছাগলর দুধ বৃদ্ধির উপায় ও ঔষধ অনেকটা একই রকম। ছাগি সুস্থ থাকলে সহজেই ধরে নেওয়া যায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি মিনারেল ও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট এর অভাবে দুধ কমে যায়।
- দরকারি পুষ্টির ঘাটতি থাকলে সুষম দানাদার খাদ্য ও ভিটামিন-মিনারেল ঔষধ সরবরাহ করতে।
- ছাগল কৃমিতে আক্রান্ত থাকলে কৃমি মুক্তকরণ ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।
- পর্যাপ্ত কাঁচা সরবরাহ করতে হবে।
ছাগলের দুধ বৃদ্ধির উপায় ও ঔষধ সমূহ নিয়ে এই আলোচনা একজস খামারী হিসাবে কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানানর অনুরোধ রইলো।