ফারুক আহমাদ আরিফ
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৩২ পিএম
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। ছবি : সংগৃহীত
এভাবে শুধু ব্রুনাইয়ে নয়; সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তা ছাড়া বিশ্ববাজারেও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়ার ‘কুষ্টিয়া গ্রেড’ হিসেবে বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিন্তু এ জাতের ছাগল বা এর মাংস বিদেশে রপ্তানি করে বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা থাকলেও এতে তোড়জোড় নেই। এই খাতে কিছু সমস্যা রয়েছে, তবে সমাধান করা হচ্ছে না। এ জাতের ছাগলের কৃত্রিম প্রজনন প্রয়োজন। তখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিও করা যেত।
যা বলছেন খামারিরা
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ভাওয়াল বনে ছাগলগুলো ছেড়ে রাখি। লতাপাতা খেয়ে ছাগলগুলো বড় হচ্ছে। তা ছাড়া কিছু দানাদার খাবারও দিতে হয়। এক বছর বয়সি একটি খাসির দুই দাঁত হয়, তখন আট কেজির মতো মাংস হয়। আর পূর্ণবয়স্ক একটি খাসির প্রায় আড়াই বছর সময় লাগে। তখন ২০ থেকে ২২ কেজি পর্যন্ত মাংস পাওয়া যায়। লাইভ ওয়েটই এক হাজার টাকা কেজিতে এসব ছাগলের মাংস বিক্রি করে দেওয়া হয়।’
কিন্তু এ জাতের ছাগলের প্রজননের জন্য পাঁঠা পাওয়া যায় না জানিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সরকার যদি কৃত্রিমভাবে প্রজননের ব্যবস্থা নেয় তাহলে সুবিধা হয়।’
এক ছাগী থেকে ৭৬ বাচ্চা
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের ফরিদা বেগমের একটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগী গত ১২ বছরে ৭৬টি বাচ্চা দিয়েছে। সেগুলো তিনি প্রায় ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। ফরিদা জানান, তার ছাগী প্রতিবছর দুবারে ছয় থেকে আটটি বাচ্চা দিয়েছে। তিন মাসের মাথায় প্রতিটি বাচ্চা তিনি ৬ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। ভালো খাবার দেওয়ায় এখনও ছাগীটি বাচ্চা দেওয়ার উপযোগী।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফ) সভাপতি ও সাদিক অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের ভালো সম্ভাবনা থাকার পরও এই খাতের সমস্যাগুলো সমাধান করা হচ্ছে না। আমাদের কৃষক পর্যায়ে এসব ছাগল লালন-পালন করা হয়। বিশেষ করে, প্রজনন করতে তারা পাঁঠা পায় না। অনেক দিন ধরে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি যে, ছাগলের কৃত্রিম প্রজনন প্রয়োজন। গরুর যেমন এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স) আছে, তেমনি বহির্বিশ্বেও ছাগলের এআই আছে। একজন কৃষকের ঘরে পাঁচ থেকে সাতটি ছাগল আছে, তার পক্ষে একটা পাঁঠা পালন করা কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। এতে তাদের পোষায় না (লাভ থাকে না)। গরুর যেমন পিআই কর্মী আছে অর্থাৎ গরু গরম হলে (প্রজননের সময় হলে) তারা এসে বীর্য দিয়ে যায়, তেমনি ছাগলের ক্ষেত্রেও থাকলে উৎপাদন অনেক বাড়ত। তখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিও করা যেত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাণিজ্যিকভাবে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল উৎপাদন করতে চাই। কেননা এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ঢাকায় জায়গা কম থাকায় বাণিজ্যিকভাবে ব্ল্যাক বেঙ্গলের খামার নেই। তবে ময়মনসিংহ অঞ্চলে আছে। যখন কোনো প্রয়োজন হয় তাদের কাছ থেকে কিনে আনি। বড় অনুষ্ঠান বা ঈদের বাজারে এ জাতের ছাগলের খুবই চাহিদা। কিন্তু চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয় না। এসবের মাংস খেয়ে যে স্বাদ পাওয়া যায়, তা বিশ্বের অন্য কোনো বড় ছাগলের মাংসে নেই। কৃত্রিম প্রজননের অভাবে আমরা অনেক পেছনে পড়ে যাচ্ছি। সরকার এটি নিশ্চিত করতে পারলে বিপুল পরিমাণ উৎপাদন করে রপ্তানিও করা যেত।’
ছাগলের মাংস উৎপাদনে বাংলাদেশ পঞ্চম
বিশ্বে যে তিন থেকে চারটি দেশে দ্রুত হারে ছাগল উৎপাদন বাড়ছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাড়াও আরও চার-পাঁচটি ভালো জাত আছে। তবে এসবের মধ্যে ব্ল্যাক বেঙ্গল সবচেয়ে ভালো। এমনকি বিশ্বের ভালো জাতের ছাগলগুলোর মধ্যে এ জাত অন্যতম। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিশ্বে ছাগল উৎপাদনে চতুর্থ ও ছাগলের মাংস উৎপাদনে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খুবই মানানসই। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুর জেলায় এ জাতের ছাগল ব্যাপকভাবে পালন করা হয়। বাকি জেলাগুলোতে ছাগলের উৎপাদন এখনও অনেক কম।
ব্ল্যাক বেঙ্গলকে আইএইএ ও এফএওর বিশ্বসেরা স্বীকৃতি দান
প্রায় দশ বছর গবেষণা করে ২০০৭ সালে জাতিসংঘের আণবিক শক্তিবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ) এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বিশ্বের ১০০টি জাতের ছাগলের ওপরে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলকে অন্যতম সেরা জাত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রাণিবিদ্যাবিষয়ক স্বীকৃত জার্নালগুলোতে ব্ল্যাক বেঙ্গল নিয়ে শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এই গবেষণার মাঝপর্যায়ে ২০০৭ সালের ২০ মার্চ জাতিসংঘের সংবাদ সংস্থা ইউএন নিউজে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ। কিন্তু এখানেই রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রাণিসম্পদ ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বসতি।
খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে খুব সুবিধা আছে। বছরে দুবার বাচ্চা দেয়। রোগবালাই কম হয়। খাদ্যের চাহিদা কম থাকায় সব ধরনের মানুষের পালন করা সহজ। খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুর জেলায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এসব ছাগল পালন করা হয়। তাদের পাঁচটি থেকে ২০টি পর্যন্ত ছাগল আছে। রপ্তানি করতে গেলে উৎপাদন বাড়াতে হবে। এজন্য খামারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কেননা আমাদের দেশেও এর মাংসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এজন্য খামার পর্যায়ে আরও উন্নয়ন দরকার। যদি রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে আমরা আরও বেশি উৎপাদনে সহযোগিতা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাধারণত এসব লোকদের ছাগল পালনে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। রোগবালাই হলে ওষুধপত্র ও টিকা দিয়ে থাকি। প্রতিটি পরিবার ছাগল পালন করে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে। রপ্তানির ব্যবস্থা নিলে অল্প সময়ের মধ্যেই উৎপাদন করা যাবে। এ বিভাগে সেসবের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’
বিশ্ববাজারে হালাল মাংসের চাহিদা
২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০০ শতাংশ হালাল মাংসের পাশাপাশি ১০০ শতাংশ হালাল প্রক্রিয়াজাত মাংস রপ্তানিতেও ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। গ্লোবাল ইসলামিক ইকোনমি রিপোর্ট ২০২২-২৩-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে হালাল খাদ্যের বৈশ্বিক বাজার প্রায় ৩ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩০ নাগাদ ৫ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে।
হালাল মিট প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তথ্যানুযায়ী, প্রক্রিয়াজাত মাংসের চাহিদা প্রতিবছর গড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাতে করে এ শিল্পে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগও বাড়ছে। ২০০৬ সালে বেঙ্গল মিট একমাত্র প্রতিষ্ঠান থাকলেও ১৭ বছরে ১৩-১৪টি বড় কোম্পানি এ খাতে কাজ করেছে। বর্তমানে দেশে বৃহত্তর পরিসরে মাংস প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে আফতাব বহুমুখী ফার্মস, কাজী ফার্মস, প্যারাগন, ইয়ন, এজি অ্যাগ্রো, নারিশ, সিপি, কোয়ালিটি, প্রোভিটা, প্রাণ, ব্র্যাকসহ অন্যান্য কোম্পানি প্রক্রিয়াজাত মাংস উৎপাদন করছে।
বাজার তৈরিতে প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ
বেঙ্গল মিটের সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড এক্সপোর্টের প্রধান আল আমিন বলেন, ‘বিশ্বে প্রধানত গরুর মাংসের চাহিদা বেশি। ছাগলের মাংসের চাহিদাও আছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে প্রচুর চাহিদা। কেননা তাদের খাদ্যতালিকায় ছাগল, ভেড়া ঐতিহাসিকভাবেই যুক্ত। তাই এখানে ভালো বাজার আছে। আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েতে ছাগলের মাংস রপ্তানি করি। যেমন- এক কন্টিনেন্টালে ২৫ টন গরুর মাংস রপ্তানি হলে সেখানে ৩ টন ছাগলের মাংসও থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংসের দেশে যেমন চাহিদা আছে, সেটি আন্তর্জাতিক বাজারে করতে হলে প্রচুর প্রচার চালাতে হবে। কেননা তারা তো সবাই এটা চিনে না। ইলিশ মাছ বিশ্বে যেমন বিখ্যাত তেমনি ব্ল্যাক বেঙ্গলকেও বিখ্যাত করতে হবে। জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) করতে না পারলেও প্রমোশন দিয়ে করতে হবে। বর্তমানে আমরা বেসরকারিভাবে করছি। তারা আমাদের ব্র্যান্ডের নাম দেখেই এসব মাংস নিচ্ছে।’
এক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আল আমিন বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নে সরকার যে ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল, এক্ষেত্রেও তা করতে হবে। প্রত্যেকটি রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ক্ষেত্রেই তা করতে হবে সরকারকে। বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী গ্রুপ, রাষ্ট্রদূতদের দিয়ে বোঝাতে হবে। আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেলায় অংশগ্রহণ করে সেসব দেশের লোকদের বোঝাই আমাদের পণ্যের ব্যাপারে। অথচ অন্যান্যরা সরকারিভাবেই স্টল নিয়ে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা, উপকার ইত্যাদি বিষয়ে বুঝিয়ে থাকে। তাদের পেছনে ৫০টি কোম্পানি থাকে অর্থাৎ ব্র্যান্ডিং করে। আর আমাদের ক্ষেত্রে উল্টো। ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির ক্ষেত্রে শুধু পণ্য দিলেই হবে না, কমপ্লাইন্ডগুলো পূরণ করতে হবে। বিশেষ করে, আমাদের দেশের পশুগুলোর কী ধরনের রোগবালাই আছে তা প্রতিবছর ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর অ্যানিমেল হেলথের (ডব্লিউওএএইচ) কাছে রিপোর্ট করতে হয়। লাইসেন্স পেলে বাংলাদেশ থেকে মাংস রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব।’
মাংস উৎপাদনে বিশ্বের সেরা জাতের একটি ব্ল্যাক বেঙ্গল
২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জিআইয়ের জন্য আবেদন করা হলে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি অনুমোদন পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এটি দেশের জন্য বড় সাফল্য বলে জানান ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খামার শাখার উপপরিচালক মো. শরিফুল হক। তিনি বলেন, ‘মাংস উৎপাদনে বিশ্বের সেরা চারটি জাতের মধ্যে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল অন্যতম। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এর মাংসের প্রচুর কদর আছে। এত দিন এটি গৃহস্থ তথা নারীরা ক্ষুদ্র আকারে পারিবারিকভাবে লালন-পালন করত। এখনও বেসরকারি পর্যায়ে বাণিজ্যিকভাবে লালন-পালনে উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি পর্যায়ে বাণিজ্যিকভাবে খামার করতে চাইলে আমরা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব। ইতোমধ্যে একটি কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করতে প্রকল্পের জন্য পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে খুব সহজেই প্রজনন করানো সম্ভব হবে।’
সবচেয়ে বেশি ছাগল এশিয়ায়
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ৯২১ মিলিয়ন ছাগল রয়েছে। তার মধ্যে ৬৪ শতাংশ এশিয়ায়। আর আফ্রিকায় ৩০ শতাংশ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, ইউরোপে ২ দশমিক ৩ শতাংশ ও ওসেনিয়ায় শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ রয়েছে। এশিয়ায় ৫৮৯ মিলিয়ন ছাগলের মধ্যে শুধু বাংলাদেশে আছে ৩৯ দশমিক ৬০ মিলিয়ন। এসবের মধ্যে ৯০ শতাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের।
ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের বৈশিষ্ট্য
বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যায় এ জাতের ছাগল পালন করা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক খাসি বা পাঁঠার দৈহিক ওজন ২৫ থেকে ৩০ কেজি হয়, আর ছাগীর ক্ষেত্রে হয় ২০ থেকে ২৫ কেজি। এ ছাগল আকারে ছোট হওয়ায় খাদ্য ও আবাস কম লাগে। দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে উপযোগী-মানানসই। দেহ সাধারণত ১৬ থেকে ২০ ইঞ্চি হয়। কান ছোট, খাড়া ও ভূমির সমান্তরাল, শিং ছোট খাড়া এবং কালো।
১৩-১৪ মাস বয়সে বাচ্চা দেয় এবং প্রতি ১৪ মাসে দুবার বাচ্চা দেয়। প্রতিটি ছাগী ২০০-৩০০ গ্রাম করে ২ থেকে ৩ মাস দুধ দেয়। তবে ভালো খাবার পেলে দৈনিক এক থেকে দেড় লিটার দুধও দেয়। ২০ কেজির একটি ছাগল থেকে ১১ কেজি খাদ্য উপযোগী মাংস পাওয়া যায়। বাংলাদেশে মাংস উৎপাদনের ২০ দশমিক ৩ শতাংশ মাংস আসে ছাগল থেকে। মাংসের মধ্যে চর্বির পরিমাণ কম ও প্রোটিনের পরিমাণ বেশি থাকায় ছাগলের মাংস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এ মাংসে পানির পরিমাণ ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ, চর্বি ২ দশমিক ৬, আমিষ ১৯ দশমিক ৬, খনিজ উপাদান ১ শতাংশ থাকে।
source : Protidiner Bangladesh.