মাদারীপুর জেলার শিবচরে নদীর সঙ্গে সংযুক্ত বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে খাঁচা পদ্ধতিতে মাছ চাষ বেড়েছে। খাঁচার এ মাছ বিক্রি হচ্ছে উপজেলারই বিভিন্ন হাটবাজারে। পরিষ্কার পানিতে চাষ করা হয় বলে স্থানীয় বাজারে খাঁচায় চাষ করা মাছের চাহিদাও বেড়েছে। এতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন উদ্যোক্তারা। সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানেরও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার উৎরাইল এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদে অনেকদিন ধরেই খাঁচা পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে নানা প্রজাতির মাছ। উৎরাইল ছাড়াও উপজেলার শেখপুর, বিলপদ্ধা এলাকায়ও মাছ চাষ হচ্ছে খাঁচায় এসব খাঁচায় তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, সরপুঁটি মাছ চাষ হচ্ছে বেশি। আড়িয়াল খাঁ নদের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে প্লাস্টিকের বড় বড় ড্রাম ভাসিয়ে তাতে লোহার পাইপ বেঁধে নেট দিয়ে একেকটি খাঁচা তৈরি করা হয়েছে। ড্রামগুলো খাঁচাকে পানির ওপর ভাসিয়ে রাখে। খাঁচাগুলোকে এক স্থানে ভাসিয়ে রাখা হয়। তবে নদীর জোয়ার-ভাটার সঙ্গে খাঁচাগুলো ওঠাণ্ডনামা করে। কমপক্ষে ১২ ফুট গভীরতা সম্পন্ন ৬০টি খাঁচাকে একসঙ্গে বেঁধে একটি ইউনিট বানানো হয়। একেকটি খাঁচায় কমপক্ষে ১৫০ মাছ চাষ করা হয়। খাঁচাগুলোতে তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি বলে জানা গেছে। পাঁচ-ছয় মাসে মাছ বাজারে বিক্রির উপযোগী হয়। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে হলে খাঁচা তৈরির পর বড় ধরনের তেমন কোনো খরচ নেই। এছাড়া খাঁচা দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। আড়িয়াল খাঁ নদের উৎরাইলে খাঁচায় মাছ চাষ প্রদর্শনীর সুফলভোগী লিখন চৌধুরী বলেন, আপাতত আমরা তেলাপিয়া মাছের চাষ করছি। পাঙ্গাস মাছ চাষ পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। স্থানীয় বাজারে বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে এ মাছ। নদীতে চাষ করায় মাছ বেশ সুস্বাদুও। তিনি আরও বলেন, খাঁচায় মাছ চাষে মৎস্য দপ্তর থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা মিলছে না। তারা সহযোগিতা করলে স্থানীয় অনেকেই এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হতেন। শিবচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদের বেশ কিছু স্থানে খাঁচায় প্রবাহমান জলাশয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে মাছের সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায়। মাছ খুবই সুস্বাদু হয়। তাই শিবচর উপজেলায় খাঁচায় মাছ চাষে সাবলম্বী হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনাও রয়েছে। এ পদ্ধতিতে কেউ মাছ চাষে আগ্রহী হলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
সূত্র: আলোকিত বাংলাদেশ।