মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে অনন্য রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাডেটদের অবদান অসাধারণ হিসেবে পরিগণিত হবে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এ ক্যাডেটদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সততা, বিচক্ষণতা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। তাই মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাডেটরা দেশের বাইরে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রত্যেকেই বাংলাদেশের একজন অ্যাম্বাসেডর। যেখানেই থাকুক না কেন, তাঁদের সততা, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠা বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মতো উজ্জ্বল অবস্থা সৃষ্টি করবে।

গতকাল সোমবার (১৫ মার্চ) চট্টগ্রামের মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্যারেড গ্রাউন্ডে একাডেমির ৩৯তম ও ৪০তম ব্যাচ ক্যাডেটদের গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত মেরিন ফিশারিজ একাডেমির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আলাদা সহানুভূতি ও আন্তরিকতা রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান এ একাডেমি উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাক। এ প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক ক্যাডেট, শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই স্বতন্ত্র অবস্থানে পৌঁছে যাক। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। এ জন্য একাডেমির ক্যাডেটদের উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোর্সের সীমা বৃদ্ধি করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করার সুযোগ তৈরির জন্য বিভিন্ন ভাষায় ক্যাডেটদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। জাতির জনক সৃষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে যাঁরা শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান নিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা দেশের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করবেন, এটা প্রত্যাশিত।

এ সময় মন্ত্রী বলেন, এ বছর একাডেমির ৩৯তম ও ৪০তম ব্যাচে নটিক্যাল বিভাগে ৬৩ জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৬৬ জন এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ৩৬ ক্যাডেট পাসড আউট হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ছয়জন এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ছয়জন মহিলা ক্যাডেট রয়েছেন। নারী শিক্ষার উন্নয়নে বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনার একটি ধাপ হিসেবে এ একাডেমিতে মহিলা ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে এবং এ পর্যন্ত ৪৮ মহিলা ক্যাডেট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নের এ সুযোগ শেখ হাসিনা করে দিয়েছেন। অদূর ভবিষ্যতে এ একাডেমিতে আরও বেশি মহিলা ক্যাডেট আসবে বলে প্রত্যাশা করি।’ তিনি জানান, এ একাডেমির ৪৮১ ক্যাডেটের অনুকূলে নৌপরিবহন অধিদপ্তর Continuous Discharge Certificate (CDC) ইস্যু করায় এই ক্যাডেটরা বাণিজ্যিক জাহাজে চাকরিতে যোগদানের সুযোগ পাচ্ছেন বলেও এ সময় মন্ত্রী জানান।

এর আগে প্রধান অতিথি প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং সেরা ক্যাডেটদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান করেন মন্ত্রী। পরে সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদ তুলে দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস ও মো. তৌফিকুল আরিফ, যুগ্ম সচিব মাহবুবা পান্না, মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ওয়াসিম মকসুদসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, মেরিন ফিশারিজ একাডেমি, মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্ট, সরকারি শিপিং দপ্তরসহ অন্যান্য মেরিটাইম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।