৬৭
ভেজাল গোখাদ্য কারখানায় অভিযান। ছবি: সমকাল

সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২২:৩৫
অনুমোদনহীন নিম্নমানের ভেজাল গোখাদ্য তৈরির অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এসব খাদ্যে উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখসহ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্যও থাকে না। প্যাকেটে নামিদামি কোম্পানির নাম ব্যবহার করে খামারিদের চোখ ফাঁকি দিচ্ছে অসাধু চক্র।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বসিলায় দয়াল হাউজিংয়ে মেঘডুমি ক্যাটেল ফিড কারখানায় ভেজাল প্রাণিখাদ্য তৈরির সন্ধান পাওয়া যায়। জরিমানাসহ কারখানাটি সিলগালা করে দেয় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল ও ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালামের নেতৃত্বে মেঘডুমি ক্যাটেল ফিড কারখানায় অভিযান চালানো হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ও ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে গোখাদ্য তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করেই উৎপাদন ও বিপণন করা হচ্ছে। এসব খাদ্য গবাদিপশুকে খাওয়ানো হলে তা বিশাল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির মালিক আলী শাহিন সামীকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, মেঘডুমি ক্যাটেল ফিড কারখানা প্রতিদিন শত শত বস্তা গোখাদ্য তৈরি করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোনো অনুমোদনও নেই। শুধু তাই নয়, খাদ্যমান নিশ্চিতে নেওয়া হয়নি বিএসটিআইর (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) সনদ। উৎপাদিত বিষাক্ত ওষুধ গবাদিপশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। এ গরুর মাংস খেলে মানুষ নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, দেশে প্রাণিজ খাবারের ভেজাল কারখানা আছে অন্তত ৩ হাজার। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়েও ভেজাল গোখাদ্য তৈরি করছে। অথচ এসব বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কোনো তদারকি নেই। কিছু কর্মকর্তাকে খুশি করেই এমন ভেজাল কারখানা চলছে।
মেঘডুমি ক্যাটেল ফিড কারখানার মালিক আলী শাহিন সামীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, যেকোনো পশুখাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এ ছাড়া কারখানা স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য দপ্তরেরও অনুমোদন লাগে। অনুমোদনহীন এসব কারখানার তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।