অ্যাকুয়ারিয়ামে (Aquarium) রঙিন মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অনেকে। একুরিয়ামে (Aquarium) মাছ চাষ নিয়ে আজকের আলোচনা। একুরিয়ামে মাছ চাষের রয়েছে কিছু সতর্কতা এবং সাবধানতা। চলুন আলোচনা তে যাওয়া যাক-
রঙিন মাছচাষে সফলতা পেয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শিহাব উদ্দীন। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভাবে রঙিন মাছ চাষ করছেন। মাত্র ২ মাস পরেই মা মাছগুলো ডিম ছেড়ে রেণু পোনার জন্ম দেয়। রেনু পোনা বিক্রি করে তিনি, সকল খরচ বাদেই মোট ৫০০০০(পঞ্চাশ হাজার টাকা )লাভ করেন।
তথ্য সূত্রঃ যাযাদি, ১২ অক্টোবর, ২০১৯
কেস স্টাডি-২
রংপুর নগরীর মেডিকেল পূর্বগেট সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। এলাকায় মৃদুল রহমান নামে পরিচিত।
২০১২ সালে ঢাকার কাটাবন থেকে সংগ্রহ করেন বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি কার্প মাছ। অনেক চড়াই উতরাই শেষে অাজ তিনি সফল। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন ২৫টি চৌবাচ্চায় হাজার হাজার মাছ চাষ করছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ মাছ কিনতে ভিড় জমান তার মাছের বাড়ি নামে পরিচিত, বাড়িতে।
মৃদুল বলেন, ১০ টাকা থেকে শুরু করে একেকটি মাছ সর্বোচ্চ ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন তিনি। প্রতিদিন অন্তত লাখ টাকার মাছ কেনাবেচা হয় তার বাড়ি থেকে। শুধু ক্রেতা নয়, প্রতিদিন শ’খানেক মানুষ তার বাড়িতে যান মাছের যাদু দেখতে।
তথ্য সূত্রঃ সময়, ০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
চৌবাচ্চায় বা অ্যাকুয়ারিয়াম (Aquarium) রঙিন মাছ চাষ করার পদ্ধতি
- রঙিন মাছ চাষে কি ধরণের পাত্র চৌবাচ্চা বাছাই করবেন
- রঙিন মাছ চাষ করার সঠিক সময়/মৌসুম
- কিভাবে রঙিন মাছের পোনা ছাড়তে হবে ও সঠিক নিয়মে যত্ন নিতে হবে
- সঠিক নিয়মে রঙিন মাছ চাষাবাদ পদ্ধতি/কৌশল
- রঙিন মাছ চাষে খাবারের পরিমাণ ও সঠিক নিয়মে খাবার প্রয়োগ
- রঙিন মাছের রোগ বালাই ও তাঁর প্রতিকার
- কিভাবে রঙিন মাছের যত্ন নিবেন
অ্যাকুয়ারিয়াম রঙিন মাছ চাষে কি ধরণের পাত্র চৌবাচ্চা বাছাই করবেন
ক) বাড়িতে রঙিন মাছ চাষ করার জন্য আপনি মাঝারি অথবা বড় সাইজের চৌবাচ্চার ব্যবস্থা করতে পারেন।
খ) তবে খেয়াল রাখবেন চৌবাচ্চাটি যেন গভীর হয়।
অ্যাকুয়ারিয়াম রঙিন মাছ চাষ করার সঠিক সময়/মৌসুম
ক) রঙিন মাছ সাধারণত তিন ধাপে চাষ করা যায়। সেগুলো হল গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল, এবং শীতকাল।
খ) গ্রীষ্মকালে টাইগার বার্ব, রোজীবার্ব, উইডো টেট্রা, শার্পে টেট্রা, সোর্ডটেল, মলি, প্লাটি ইত্যাদি মাছের চাষ করা ভাল।
ঘ) শীতকালে গোল্ড ফিস, কই কার্প, ম্যানিলা কার্প, ক্যাট ফিস ইত্যাদি মাছের চাষ করা ভাল।
কিভাবে অ্যাকুয়ারিয়াম রঙিন মাছের পোনা ছাড়তে হবে ও সঠিক নিয়মে যত্ন নিতে হবে
ক) বাড়তে চৌবাচ্চায় রঙিন মাছ চাষ করার জন্য আপনাকে প্রথমে পোনা সংগ্রহ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি আপনার নিকটস্থ যেকোন নার্সারী হতে পোনা আহরন করতে পারেন।
খ) এই সকল মাছের সঠিকভাবে যত্ন নিতে হবে। নিয়মিত খাবার দিতে হবে এবং পোনা ছাড়ার সময় সুস্থ সবল পোনা ছাড়তে হবে।
সঠিক নিয়মে চৌবাচ্চায় বা অ্যাকুয়ারিয়ামে (Aquarium) রঙিন মাছ চাষাবাদ পদ্ধতি/কৌশল
ক) বাড়তে চৌবাচ্চায় রঙিন মাছ চাষ করার ক্ষেত্রে আপনাকে সঠিক নিয়ম পালন করতে হবে। মাছের পোনা ছাড়ার পর সঠিক নিয়মে যত্ন নিতে হবে।
খ) চৌবাচ্চায় মাছ চাষের জন্য সঠিক তাপমাত্রার প্রয়োজন। খেয়াল রাখতে হবে তাপমাত্রা যেন বেশি না হয়। এছাড়াও চৌবাচ্চার ভিতরে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে।
গ) যাতে মাছের সঠিক নিয়মে বাড়তে কোন অসুবিধা না হয়।
অ্যাকুয়ারিয়াম রঙিন মাছ চাষে খাবারের পরিমাণ ও সঠিক নিয়মে খাবার প্রয়োগ
ক) রঙিন মাছের পোনাকে সঠিক নিয়মে খাবার দিতে হবে। তা না হলে পোনা সঠিক ভাবে বড় হবে না।
খ) রঙিন মাছের পোনার প্রিয় খাবার হল ব্রাইন শ্রিম্প, ইনফুসুরিয়ান্স, ওয়াটার ফ্লি, স্লাডজ ওয়ার্মস, ব্লাড ওয়ার্ম ইত্যাদি। এগুলো পরিমাণ মত মাছের পোনাকে খাওয়াতে হবে।
অ্যাকুয়ারিয়াম রঙিন মাছের রোগ বালাই ও তাঁর প্রতিকার
ক) রঙিন মাছ চাষ করার জন্য আপনাকে এদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। মাঝেমধ্যে রঙিন মাছের বিভিন্ন রকমের রোগবালাই দেখা দেয় তাই সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখতে হবে।
খ) মাছের যত্ন নিতে হবে। যদি কখনও রঙিন মাছের রোগ দেখা দেয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে অথবা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কিভাবে অ্যাকুয়ারিয়াম রঙিন মাছের যত্ন নিবেন
ক) রঙিন মাছের চৌবাচ্চার নিয়মিত যত্ন নিতে হবে। সময়মত পানি পরিষ্কার করে দিতে হবে বা পানি পরিবর্তন করে দিতে হবে।
খ) অনেক সময় দেখা যায় যদি খাবার বেশী দেয়া হয় তাহলে মাছেরা সব খাবার খেয়ে উঠতে পারে না বলে অবশিষ্ট খাবার পচে জল নষ্ট করে৷ এতে পানি দূষিত হয়।
দেশে অ্যাকুয়ারিয়াম ও রঙিন মাছের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আগে রাজধানীতে ৩৪টি দোকান ছিল। এখন দোকানের সংখ্যা শতাধিক। তা ছাড়া ফার্নিচারের দোকানগুলোতেও এখন অ্যাকুয়ারিয়াম তৈরি হচ্ছে। তাই দেশীয় চাহিদা পূরন ও বেকার কর্মসংস্থান তৈরীতে ভূমিকা রাখতে পারে রঙ্গীন মাছের চাষ।
সংকলনেঃ
মোঃ জিয়াউর রহমান
বিএস সি ইন জুলজি, এমএসসি ইন এন্টোমলজি (রা বি)