ঝিনাইদহের মহেশপুরে মধ্যপ্রাচ্যের পশু দুম্বা বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হচ্ছে। মহেশপুর উপজেলার আলমপুরে এই পশুর খামার করে সাড়া ফেলেছেন খামারি কবির কাজী। মধ্যপ্রাচ্যের এই পশুর খামার দেখতে প্রতিদিন অনেক মানুষ ভিড় করছেন। ইতোমধ্যে এই খামারের দুটি দুম্বা প্রায় ৩ লাখ টাকা দাম উঠেছে।
জানা যায়, খামারি কবির কাজী ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আলামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দেশি জাতের ছাগলের সাথে দুম্বাও পালন করছেন। বর্তমানে তার খামারে ১৪টি দুম্বা রয়েছে। ইতোমধ্যে তার খামারের দুটি দুম্বা প্রায় ৩ লাখ টাকা দাম উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খামারি কবির কাজী তার খামারে দেশি ছাগল পালন করেন। ছাগলের পাশাপাশি সিলেট থেকে তুর্কি জাতের ৮ টি দুম্বা কিনে নিয়ে এসে পালন করেন। ছাগলের মতোই তার খামারের দুম্বাগুলো খোলা মাঠে ঘাস খাচ্ছে। খামারে ৪ জন শ্রমিক রেখেছেন যারা ছাগল ও দুম্বার দেখাশোনা করেন।
খামারি মোঃ কবির কাজী বলেন, আমি প্রায় ১১ মাস আগে অনলাইনে দুম্বা পালন দেখতে পাই। তারপর কিছু দিনের মধ্যেই অনলাইনে দুম্বা বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখি। দুম্বা পালনের বিষয়টি আমার প্রবাসী ছেলেকে জানালে সে ১০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে সিলেট থেকে তুরস্ক জাতীয় ৮টি দুম্বা কিনে দেয়। তারপর আমার খামারের ছাগলের পাশাপাশি দুম্বা পালন শুরু করি।
তিনি আরো বলেন, মরুর দেশের প্রাণী আমাদের আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে পারবে কিনা সেই চিন্তা করছিলাম। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে মাত্র ৬ মাসের মাথায় দুম্বা বাচ্চা দেওয়া শুরু করে। বর্তমানে আমার খামারে ছোট-বড় মিলে ১৪টি দুম্বা রয়েছে। দুম্বার পাশাপাশি খামারে দেশীয় ও উন্নত জাতের ছাগল রয়েছে। শখ থেকে গড়ে তোলা খামার এখন বাণিজ্যিক রূপ ধারন করেছে। আশা করছি দুম্বা, ছাগলের পাশাপাশি গরুর খামারও করবো।
কবির কাজী আরো বলেন, দুম্বার তেমন কোনো রোগবালাই নেই। আর খাবার হিসেবে ভুসি ও কাঁচা ঘাস খায়। দুম্বা আকারভেদে ৬০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আমার খামারে ১৪টি দুম্বার পাশাপাশি ২৭টি দেশি জাতের ছাগলও রয়েছে। পশুর খাবার ও শ্রমিক বাবদ প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়।
খামার দেখতে আসা কয়েকজন দর্শনার্থী বলেন, আমাদের দেশে দুম্বার ব্যাপক পালন হয় না। তবে শখের বশে কবির কাজী পালন শুরু করে এখন তা বণিজ্যিকভাবে পালন করেছেন।
ঝিনাইদহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার বলেন, কবির কাজী এই জেলায় প্রথম দুম্বা পালন করছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এই পশুর মাংসের চাহিদা পুরো বিশ্ব ব্যাপী রয়েছে। আমাদের দেশে এখনো দুম্বার পালন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। দুম্বা অনেক ব্যয়বহুল এবং দুর্লভ হওয়ায় সাধারণ কৃষকরা দুম্বার চাষ করতে পারেন না। কেউ পালন করলে আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগীতা করবো।