কুড়িগ্রামের রাজারহাটে বাড়ির উঠোনে বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করে সাড়া ফেলেছেন মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল মোমিন। তিনি অনলাইনে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেখে আগ্রহী হন। তারপর শখের বশে প্রথমে বাড়ির আঙিনায় মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি আঙিনাসহ দুটি জলাধারে এবার ৫৭ হাজার কৈ-মাছ ও ৩ হাজার দেশি টেংরা মাছ চাষ করছেন। মাছ বিক্রি করে কয়েক লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
জানা যায়, মৎস্য চাষি আব্দুল মোমিন কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের খালিসা কৈলাশকুটি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পাশ্ববর্তী সরিষাবাড়ী হাট দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি পুকুরে মাছ চাষ করতেন। গত বছর পুকুরে ৪০ হাজার হাইব্রিড কৈ মাছ চাষ করে লোকসানে পড়েছিলেন। তারপর অনলাইনে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে দেখে আগ্রহী হয়ে বাড়ির আঙিনায় মাছ চাষ শুরু করেন। তার এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভীড় করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৎস্য চাষি আব্দুল মোমিন দুটি জলাধারে মাছ চাষ করছেন। একটি ভেতর আঙিনায় আরেকটি বাহিরের আঙিনায়। ভেতর আঙিনার জলাধারের দৈর্ঘ্য ২৩ ফুট ও ১৮ ফুট। বাইরের আঙিনার জলাধারের দৈর্ঘ্য ৪১ ফিট ও ২৪ ফিট। এবছর দুটি জলাধারে ৫৭ হাজার কৈ-মাছ ও ৩ হাজার দেশীয় টেংরা মাছের পোনা ছেড়েছেন তিনি। আগামীকাল থেকে মাছ বিক্রি শুরু করবেন বলে জানান তিনি।
উদ্যোক্তা আব্দুল মোমিন বলেন, আমি আগে পুকুর মাছ চাষ করতাম। পুকুরে মাছ চাষে লোকসান হওয়ার পর অনলাইনে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছের চাষ দেখি। তারপর শখের বশে চাষের সমস্ত উপকরন কিনে উঠোনে দুটি জলাধার করে মাছ চাষ শুরু করি। আমি মাদ্রাসায় থাকলে আমার স্ত্রী সব দেখাশোনা করেন। জলাধারে প্রায় ৬০ হাজার টাকার পোনা ছেড়েছি। জলাধার তৈরি, অক্সিজেন মেশিনসহ উপকরণ ক্রয়, খাবার, ওষুধ ও বিদ্যুৎ খরচসহ তার মোট ব্যয় হয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকা। এই মাছ বর্তমান বাজারে ৫-৬ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবো। এতে আশা করছি সাড়ে ৪ মাসে মাছ বিক্রি করে আয় হবে প্রায় ৩-৪ লাখ টাকা।
কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য অফিসার কালিপদ রায় বলেন, বায়োফ্লক পদ্ধতিতে অল্প জায়গায় মাছ চাষ করে লাভবান হওয়া যায়। এতে বড় পরিসরে মাছ চাষ থেকে প্রায় ৩০ ভাগ কম খরচ হয়। জেলা মৎস্য বিভাগ আগ্রহীদের সব ধরনের কারিগরি সহযোগিতা দেবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।