কক্সবাজার উপকূলে এখন শুঁটকি মাছ উৎপাদনের ধুম পড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১১ কোটি টাকা মূল্যের ১৫৭ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বেশির ভাগ শুঁটকি ট্রাকে বোঝাই করে সরবরাহ হচ্ছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে। সেখান থেকে সরবরাহ হচ্ছে তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে এ বছর জেলা থেকে ৪০০ কোটি টাকার শুঁটকি উৎপাদনের আশা করছেন উৎপাদনকারীরা।
কক্সবাজার পৌরসভার ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের ১৮টি গ্রাম নিয়ে গড়ে উঠেছে নাজিরারটেক শুঁটকি পল্লি। এখানে ছোট–বড় মিলিয়ে মহাল (শুঁটকি উৎপাদনের খামার) আছে প্রায় ৭০০টি। জেলার টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, মহেশখালী, সোনাদিয়া দ্বীপেও শুঁটকি উৎপাদিত হচ্ছে। সব মিলিয়ে জেলার ৯ শতাধিক মহালে দৈনিক উৎপাদিত হচ্ছে ১৫৭ মেট্রিক টনের বেশি শুঁটকি।
শুক্রবার সকালে নাজিরারটেক এলাকার আতিক এন্টারপ্রাইজ নামে একটি মহালে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে ৩০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এর মধ্যে নারী শ্রমিক আছেন ১৯ জন। আরেফা বেগম (৩৬) নামে এক শ্রমিক বলেন, এখন শুঁটকির ভরা মৌসুম চলছে। গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে।
পাশের শাহ আমানত ট্রেডার্স নামে একটি মহালে শুঁটকি আছে ৬৫ মণের বেশি। সেখানকার শ্রমিক আমান উল্লাহ (৫৫) বলেন, শীতকালে শুঁটকির চাহিদা বেশি থাকে। তবে শুঁটকি উৎপাদন মূলত নির্ভর করে সাগরে কী পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে, তার ওপর। ট্রলারের জালে বেশি মাছ ধরা পড়লে শুঁটকির উৎপাদনও বেড়ে যায়।
পৌরসভার ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতিপাড়া, মোস্তাকপাড়া, কুতুবদিয়াপাড়া, ফদনারডেইল, বাসিন্যাপাড়া, নুনিয়াছটা, সিসিডিবিমোড়, পানিকুপ পাড়াসহ অন্তত ১৮টি এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ৭০০টি মহালে শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে। কায়সার এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মহালের মালিক মো. কায়সার (৪৫) বলেন, সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহালগুলোতে কাজ চলে। কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে আসা বিপুলসংখ্যক পর্যটক বাড়ি ফেরার সময় কয়েক কেজি করে শুঁটকি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে শুঁটকির চাহিদাও বেশি।