পশ্চিমবঙ্গে তিন–চার দিন ধরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে এবার। মাছের আকারও একেবারে ছোট নয়; ৫০০ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের। এক কেজি ওজনের ইলিশও মিলছে। তবে পরিমাণে কম।
গত চার বছরে এক নাগাড়ে এই রাজ্যে ইলিশের আকাল ছিল। তবে এবার গত ১৫ জুন সমুদ্রে ইলিশ ধরার ওপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে গভীর রাতেই প্রায় আড়াই হাজার ট্রলার নিয়ে জেলেরা ইলিশ ধরতে নেমে পড়েন। পাড়ি জমান সমুদ্রে। এক মাস ধরে জালে কমবেশি ইলিশ ধরা পড়লেও তিন–চার দিন জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে তাঁদের জালে।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি সাংবাদিকদের বলেছেন, এখন পানির স্রোত বাংলাদেশ থেকে ভারতের দিকে বইছে। এর ফলে ইলিশের ঝাঁক এবার এদিকে আসছে। এ ছাড়া পরিমিত বৃষ্টিও হচ্ছে। ফলে ইলিশ ধরার অনুকূল পরিবেশ এখন বিরাজ করছে। তবে সমুদ্রে ঢেউ একটু বেশি থাকায় বেশি দিন সমুদ্রে অবস্থান করতে পারছেন না জেলেরা। ঢেউ কম থাকলে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ঢুকে পড়ত।
গতকাল রোববার দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় দুই শতাধিক মৎস্য ধরার ট্রলার ইলিশ নিয়ে ফিরেছে ডায়মন্ডহারবারের মৎস্যবন্দর নগেন্দ্র পাইকারি বাজারে। ইলিশের পরিমাণ ছিল দুই হাজার টন। ইলিশের আকার ছিল ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের। গতকাল পাইকারি বাজারে এই ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫৩০ রুপি দরে।
মূলত গত চার দিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর, বকখালি, পাথরপ্রতিমা, ডায়মন্ডহারবার এলাকার মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। আর তা বিক্রিও হচ্ছে ডায়মন্ডহারবারের নগেন্দ্র পাইকারি বাজারে। এরপর সেখান থেকে চলে যাচ্ছে কলকাতা, বারাসাত, পাতিপুকুর, হাওড়ার পাইকারি বাজারে।
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক বিজন মাইতি জানান, এই রাজ্যের ইলিশ ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে ১১ হাজার মৎস্য ট্রলার।
কলকাতার মাছ আমদানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘এবারের ইলিশ নিয়ে আমরা দারুণ আশাবাদী। আমরা মনে করছি, এবার আমরা ইলিশের খরা কাটাতে পারব। প্রচুর ইলিশ ধরা পড়বে আমাদের সমুদ্রে।’
source: Daily Prothom Alo.