শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি যে, মিঠা পানির পাবদা মাছ লবণ পানিতে চাষ করে প্রতিবছর ৫০-৬০ লাখ টাকা আয় করছেন ডুমুরিয়া উপজেলার আলাউদ্দিন জোয়ারদার। মিঠা পানির মাছ লবণ পানিতে চাষ করে তিনি সফলতা পেয়েছেন। তার চাষ করা পাবদা মাছ দেশের সীমা পেরিয়ে ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে।
জানা যায়, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার হাসানপুর গ্রামের আলাউদ্দিন জোয়ারদার এক সময় গলদা চিংড়ি চাষ করতেন। ঠিক মতো মানসম্মত চিংড়ি পোনা পাওয়া যেত না। হ্যাচারি থেকে যে পোনা পাওয়া যেত তা অতটা মানসম্মত নয়। আবার, প্রাকৃতিক উৎস থেকে যে পোনা পাওয়া যায় তা সংগ্রহ করাও কঠিন ছিল। কারণ নদী থেকে চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করতে হয়। যা সবসময় সহজ ছিল না। চিংড়ি চাষে লাভ হচ্ছিল না। তাই তিনি ১ লাখ পাবদার পোনা এনে চাষ করা শুরু করে। প্রতি কেজি পাবদা ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে তিনি আগের বছর সব লোকসান কাটিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা লাভ করেন।
আলাউদ্দিন জোয়ারদার বলেন, শুরুতে আমি ৭০ হাজার শিং মাছ ও ১ লাখ পাবদার পোনা এনে চাষ করি। প্রতি কেজি পাবদা ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। সে বছর আগের সব লোকসান কাটিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা লাভ করি।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে স্থানীয় মৎস্য অফিসারের পরামর্শে বড় করে পাবদা চাষ শুরুর পরিকল্পনা করি। তারপর সেই বছরে ৫ লাখ টাকার চুক্তিতে ৫ বছরের জন্য ১০ বিঘা জমি লিজ নেই। সে বছর বগুড়া থেকে ৫ লাখ পাবদার পোনা কিনে এনে চাষ শুরু করি। সঙ্গে ছিল আরও ১০ হাজার রুই ও কাতলা।
আলাউদ্দিন আরো বলেন, ২০২১ সালে ওই পুকুরে আমার মোট খরচ হয় ২৭ লাখ টাকা। সে বছর সব মিলিয়ে ৫০ লাখ টাকার মতো আয় করি। গত বছর আমার পুকুরের ২২৫ মণ মাছ কলকাতায় রপ্তানি হয়েছিল। নতুন বছরে এখন পর্যন্ত ৮০ মণ মাছ রপ্তানি করেছি। আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে আরও ১৫০ মণ মাছ রপ্তানি করবো।
ডুমুরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আলাউদ্দিনের মতো অনেকেই এখন স্থানীয় প্রজাতির মাছ চাষ করছে। গলদা-বাগদা-রুই জাতীয় মাছের এলাকা বলে খ্যাত ডুমুরিয়াতে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির পাবদা মাছ চাষে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করছে। দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ, আর্থিক সমৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে আমরা পাবদা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছি।